প্রতিদিনের দরকারি সব কাজ সেরে নেওয়ার জন্য তরুণরা এখন অনেকটাই স্মার্টফোননির্ভর। ছবি তোলা থেকে শুরু করে গেমিং, ডিজাইন থেকে শুরু করে পারফরমেন্স, স্মার্টফোন কেনার আগে এসব বিষয়ই থাকে তাদের বিবেচনায়।
আর এ বিষয়গুলোকে মাথায় রেখে অপো বাজারে আনতে যাচ্ছে এফ সিরিজের নতুন স্মার্টফোন এফ১৫। প্রয়োজনীয় সকল কাজ নির্বিঘ্নে সম্পন্ন করতে ফোনটিতে ব্যবহার করা হয়েছে ৮ গিগাবাইট র্যাম এবং মিডিয়াটেক হেলিও পি৭০ চিপসেট। ফলে স্মুথ পারফরমেন্সের পাশাপাশি মাল্টিটাস্কিংয়েও মিলবে অসাধারণ অভিজ্ঞতা।
স্মার্টফোন এফ১৫ ফোনটি হাতে নিলেই মিলবে প্রিমিয়াম অনুভূতিন সাথে হালকা এবং স্লিম । চলুন দেখে নেয়া যাক কি থাকছে ফোনটিতে।
কী কী আছে স্মার্টফোন এফ১৫ ফোনটিতে
পর্যালোচনার শুরুতে অপো এফ১৫ প্রো সম্পর্কে একটা ধারণা দেওয়া যেতে পারে। অপোর মধ্যম সারির স্মার্টফোন এটি। তবে স্পেসিফিকেশন বেশ ভালো। সামনের মোটামুটি পুরোটাজুড়ে ৬.৪ ইঞ্চি ডিসপ্লে। সেলফি মোড চালু করলে ১৬ মেগাপিক্সেলের ফ্রন্ট ক্যামেরা । ৪০২৫ মিলিঅ্যাম্পিয়ারের বেশ বড়সড় ব্যাটারি আছে এতে। পেছনে চারটি ক্যামেরা। মূল ক্যামেরাটি ৪৮ মেগাপিক্সেলের। সঙ্গে আছে ৮ মেগাপিক্সেলের আলট্রা ওয়াইড ২ মেগাপিক্সেলের ডেপথ এবং আর একটি ২ মেগাপিক্সেলের সেন্সর। বিষয়বস্তুর মধ্যের দূরত্ব নির্ণয় করা এই ক্যামেরার কাজ। ডিসপ্লে ঠিক নিচের দিকে আছে ইনডিসপ্লে আঙুলের ছাপ শণাক্ত করার সেন্সর।
১২ ন্যানোমিটারের মিডিয়াটেক হেলিও পি৭০ চিপসেটের সঙ্গে আছে অকটা কোর প্রসেসর। ৮ গিগাবাইট র্যাম ও ১২৮ গিগাবাইট রমের একটি সংস্করণ আছে স্মার্টফোনটির।
কাজ যেমন
দর্শনদারি হলো, এবার আসি গুণবিচারি পর্বে। মোটামুটি টানা এক সপ্তাহ রেসিং গেম ‘অ্যাসফালট ৯’ খেলেছি ও সাথে পাবজি। কোনো সমস্যা হয়নি। হওয়ার কথাও না। হেলিও পি৭০ চিপসেটের সঙ্গে ৮ গিগাবাইট র্যাম যথেষ্ট। পারফরম্যান্স সম্পর্কে একটা ধারণা পাওয়া যাবে আনতুতু বেঞ্চমার্ক টেস্টে। এতে প্রসেসর, গ্রাফিকসসহ বেশ কিছু বিষয় পরীক্ষা করে দেখা হয়। আনতুতু বেঞ্চমার্ক অ্যাপ ব্যবহার করে পরীক্ষা করা হয়েছে এবং স্মার্টফোনটি স্কোর করেছে ১৩৭০০০ আর স্ট্রেস টেস্টের সময় গরম হয়নি।
আকারে একটু বড় হলেও বেজেল (পর্দার বাইরের অংশ) পাতলা হওয়ায় এক হাতে সহজেই ব্যবহার করা যায়। ব্যাটারি চমৎকার। গেম খেলা, ওয়েব ব্রাউজিং করা বা ভিডিও দেখলেও একবার পূর্ণ চার্জে মোটামুটি এক দিন অনায়াসেই পেরিয়ে যায়। আর ভুক চার্জারের মাধ্যমে চার্জ হতেও সময় নেয় অল্প। স্মার্টফোনের নিচের দিকে একটি স্পিকার রয়েছে। অনুভূমিক পর্দায় (ল্যান্ডস্কেপ) গেম খেলার সময় সেটি হাতের আড়ালে ঢাকা পড়তে পারে।
ডিসপ্লে
ফোনটিতে পেয়ে যাবেন ৬.৪ ইঞ্চ ফুল এইচডি প্লাস অ্যামোলেড ডিসপ্লে এবং কর্নিং অ্যামোলেড ডিসপ্লে হওয়ার কারণে ফোনটিতে যে কালার ফিল পাবেন সেটি এক কথায় অসাধারণ, ফোনটির স্ক্রিন টু বডি রেশিও ৯০.৭ শতাংশ । ফোনটির বেজেল নিয়ে যদি কথা বলি বেশ পাতলা ওপারে ওয়াটার ড্রপ নচ এবং নিচের চিন অ্যাভারেজ ।
অপো এফ১৫এর কালার রিপ্রোডাকশনের কারণে এর ছবি ও ভিডিও দেখতে অসাধারণ অভিজ্ঞতা পাবেন ব্যবহারকারীরা। এমনকি এর ভিউয়িং অ্যাঙ্গেলও দারুন। সানলাইট এ ফোনটি অপারেট করতে আশা করি কোন প্রবলেম হবে না।
ক্যামেরা
সেলফি এক্সপার্ট ফোন, তাই এর ক্যামেরাতে চমক থাকবে এটাই স্বাভাবিক। এর সামনে রয়েছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) সমৃদ্ধ ১৬মেগাপিক্সেল, ২৬ এমএম ওয়াইড সেলফি ক্যামেরা। রয়েছে এফ/২.০ অ্যাপারচার ও সেন্সর এইচডিআর। ছবি সুন্দর করতে রয়েছে এআই বিউটি টেকনোলজি ।
ক্যামেরা ফিচার হিসেবে রয়েছে এফ/১.৮ অ্যাপারচার, ফেইজ ডিটেকশন অটোফোকাস। ফলে ছবিতে আপনার বয়স কেমন দেখাচ্ছে সেটিও দেখতে পাবেন। তবে ক্যামেরাতে সবার চেয়ে এগিয়ে আছে অপো, এমনটা বলাই চলে। লো-লাইট শট, এলইডি ফ্ল্যাশ ব্যবহারে অ্যাকুরেট কালার পাওয়ার ক্ষেত্রে অন্য ক্যামেরার চেয়ে এগিয়ে আছে এর ক্যামেরা। রয়েছে বিল্টইন এআর স্টিকার, ফিল্টার সুবিধাও।
পারফরমেন্স
স্মার্টফোনটিতে রয়েছে অক্টা-কোর মিডিয়াটেক হেলিও পি৭০ চিপসেট, যা এআই প্রসেসিং সমর্থিত। হেলিও পি৭০ চিপসেট কোয়ালকম স্ন্যাপড্রাগন৬৬০ চিপসেট থেকে বেশ ভালো যদিও মিডিয়াটেকের ভালো প্রসেসর ব্যবহার করা হয়েছে, তবে এই ব্র্যান্ডটি মূলত কমদামি ফোনের সাথে বেশি সংযুক্ত। গেমিং এক্সপেরিয়েন্স নিয়ে যদি কথা বলি তবে পাবজি থেকে শুরু করে সব ধরনের গেমস খেলতে পারবেন অনায়াসে ।
ব্যাটারি
ব্যাটারি হিসেবে পাচ্ছেন ৪০২৫ মিলি অ্যাম্পিয়ার ব্যাটারি উইথ ২০ ওয়ার্ড ভোক ৩.০ ফ্ল্যাশ চার্জারের সাথে আপনি আপনার ফোনটিকে জিরো থেকে হানডেট পারসেন্ট চার্জ করতে পারবেন ১ ঘন্টা ১৫ থেকে ১ ঘন্টা ৩০ মিনিটের মধ্যে ।
সিকিউরিটি
নিরাপত্তার দিক থেকে ইনডিসপ্লে ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানারের পাশাপাশি রয়েছে ফেসিয়াল আনলক সুবিধাও। চোখের পলকেই ফেসিয়াল আনলক সুবিধায় ফোনটি আনলক হবে। যখন আপনি পাসওয়ার্ড বা ওটিপি-পিন দিতে যাবেন তখন এর সিকিউর কিবোর্ড সামনে আসবে। রয়েছে জনপ্রিয় ট্রুকলার অ্যাপের মতো কল আইডেন্টিফিকেশন, কল ব্লক সুবিধাও।
একনজরে ভালো দিক
* খুবই পাতলা
* ব্যাটারি লাইফ ভালো
* দ্রুতগতির সিপিইউ
* হাই-কোয়ালিটি সেলফি এবং ব্যাক ক্যামেরা
একনজরে খারাপ দিক
* প্লাস্টিক বডি, সহজেই দাগ পড়তে পারে