বাংলাদেশে মার্কিন ই-কমার্স জায়ান্ট আমাজন কার্যক্রম শুরু করবে বলে দীর্ঘদিন ধরে গুঞ্জন ছিল। তবে এবারে বিষয়টি নিয়ে অগ্রগতির কথা জানা গেছে। দেশে কার্যক্রম শুরু করার বিষয়ে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন আমাজনের কর্মকর্তারা।
বুধবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের আইসিটি টাওয়ারে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের সঙ্গে এক বৈঠকে অংশ নেন আমাজনের এক প্রতিনিধি দল। বৈঠকে তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের পক্ষে নেতৃত্ব দেন তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এবং অ্যামাজনের কর্তৃপক্ষের প্রতিনিধিত্ব করেন ইন্টারন্যাশনাল এক্সপানশন বিভাগের ক্যাটাগরি ম্যানেজার গগন দিপ সাগর।
বৈঠক শেষে পলক সাংবাদিকদের বলেন,ইউরোপ আমেরিকাসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে, নিজেদের ওয়্যারহাউজগুলোতে বাংলাদেশের পণ্য নিতে চায় অ্যামাজন। এরপর সেখান থেকেই নিজেদের বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্মে এসব পণ্য বিক্রি করবে তারা। অ্যামাজনের বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্মে দেশের পণ্য বিক্রি করা গেলে ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের রফতানি আয় দ্বিগুণ করা সম্ভব হবে। অ্যামাজন কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশের উদ্যোক্তাদের পণ্য আমেরিকা ইউরোপের ওয়্যারহাউজগুলোতে নিয়ে নিজেদের বৈশ্বিক প্ল্যাটফর্মে বিক্রি করতে চাচ্ছে।
পলক বলেন, আমাজন বাংলাদেশে এখনই কোনো অফিস খুলছে না। তারা এখানেই রিটেইল ব্যবসায়িক কার্যক্রম করতে ইচ্ছুক কি-না, সে বিষয়ে এখনো আলোচনা হয়নি। আপাতত তারা আমাদের এখান থেকে পণ্য তাদের ওয়ারহাউজে নিতে আগ্রহী।
গণমাধ্যমের সঙ্গে আমাজনের কোনো কর্মকর্তা কথা বলতে রাজি না হলেও প্রতিষ্ঠানটির মুখপাত্র হিসেবে মাহফুজুর রহমান বলেন, এসব জটিলতার মধ্যে আছে কাস্টমসের নীতি, ব্যাংকিং জটিলতা, স্থানীয়দের মধ্যে আমাজনের মতো মার্কেটপ্লেস সম্পর্কে জ্ঞান ও দক্ষতার অভাব। একারণে, কাঙ্ক্ষিত লোকবল না পাওয়ার দুশ্চিন্তা থেকেই যায়। এ বিষয়গুলোতে আমরা পরিবর্তন চাই। এতে বাংলাদেশের কাছেও রপ্তানির বড় একটি বাজার উন্মোচিত হবে।
এর আগে ২০১৮ সালের শুরুতে আমাজনের কর্মকর্তারা বাংলাদেশে তাদের কার্যক্রম শুরুর সম্ভাবনা খতিয়ে দেখে। শুরুতে কোনো প্রতিষ্ঠান অধিগ্রহণ করে কার্যক্রম শুরুর কথা জানা যায়। অবশ্য এ বিষয়ে আমাজনের পক্ষ থেকে কোনো তথ্য জানানো হয়নি। দেশে বিনিয়োগ কার্যক্রম নিয়েও আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য করেনি প্রতিষ্ঠানটি।
এর আগে গত বছর দক্ষিণ এশিয়ার ই-কমার্স কোম্পানি দারাজ গ্রুপকে কিনে বাংলাদেশে ব্যবসা করছে চীনা ই-কমার্স কোম্পানি আলিবাবা।
মার্কিন প্রতিষ্ঠান আমাজন ই-কমার্স, ক্লাউড কম্পিউটিং, ডিজিটাল স্ট্রিমিং ও আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্সের মতো বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করে। বিশ্বের বৃহত্তম চার কোম্পানি হিসেবে গুগল, অ্যাপল, ফেসবুকের সঙ্গেই আমাজনের নাম আসে। ১৯৯৪ সালের ৫ জুলাই জেফ বেজোসের হাত ধরে এর যাত্রা শুরু হয়।