অ্যাপল, স্যামসাংসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান গত ৩ বছর ধরে যেসব ফোন বিক্রি করেছে সেগুলো মানুষের জন্য ‘বিপজ্জনক’ রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি রেডিয়েশন উৎপন্ন করেছে বলে জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের অন্যতম প্রাচীন সংবাদমাধ্যম শিকাগো ট্রিবিউন। পঞ্চম প্রজন্মের নেটওয়ার্ক আসার ঘোষণায় এমনিতে রেডিও-ফ্রিকোয়েন্সি ইলেকট্রোম্যাগনেটিক রেডিয়েশন নিয়ে আলোচনা তুঙ্গে। বিজ্ঞানীদের শঙ্কা এই নেটওয়ার্ক মানুষের স্বাস্থ্য এবং পরিবেশের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে।
সংবাদমাধ্যমটি দাবি করছে, ফেডারেল কমিউনিকেশনস কমিশন (এফসিসি) যে মাত্রার রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি রেডিয়েশন সমর্থন করে তার চেয়ে বেশি উৎপন্ন করেছে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের ফোন। এতদিন বলা হচ্ছিল পুরোনো মডেলের ফোনে যে ৩জি এবং ৪জি নেটওয়ার্ক ব্যবহার করা হয় সেটি এফসিসি অনুমোদিত। ক্ষতির মাত্রা থেকে অন্তত পাঁচগুণ কম বলেও দাবি ছিল ফোন প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠানগুলোর। প্রতিষ্ঠানগুলোকে এফসিসির রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি রেডিয়েশনের নীতিমালা মেনে চলতে হয়।
পরীক্ষকেরা ‘কৃত্রিম শরীরের’ ২, ৫, ১০ অথবা ১৫ মিলিমিটারের আশপাশে ফোনগুলো রাখেন। সঙ্গে চিনি, পানি এবং লবণের মিশ্রণ যোগ করা হয়। ফলাফলে দেখা যায় আইফোন ৭’র রেডিও ফ্রিকোয়েন্সির শোষণমাত্রা সবচেয়ে বেশি। একই সঙ্গে শরীর থেকে ২ মিলিমিটার দূরের পরীক্ষায় এই ফোনটি নিরাপদ মাত্রার থেকে ২ অথবা ৪ গুণ বেশি রেডিয়েশন উৎপন্ন করেছে। একই দূরত্বে অন্য ফোনগুলোর অবস্থাও প্রায় একই।
এফসিসি বলছে, তারা নিজেরা ফোনগুলো পরীক্ষা করে সিদ্ধান্ত জানাবে। র্কিন প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান অ্যাপল এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তাদের আইফোন নিয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। সাড়া পাওয়া যায়নি দক্ষিণ কোরীয় প্রতিষ্ঠান স্যামসাংয়েরও।
এফসিসির নীতিমালা অনুযায়ী বর্তমানের নিরাপদ মাত্রাকে স্পেসিফিক অ্যাবজরপশন রেট বা ‘এসএআর’ বলা হয়। প্রতি কিলোগ্রামে এই মাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ১.৬ ওয়াট করে। ট্রিবিউন তাদের দীর্ঘ তদন্তে ১১টি আলাদা মডেল পরীক্ষা করেছে: চারটি আইফোন (৭, ৮, ৮ প্লাস এবং এক্স), স্যামসাং গ্যালাক্সির তিনটি (এস৮, এস৯ এবং জে৩), মটোরোলার তিনটি (ই৫, ই৫ প্লে এবং জি৬ প্লে) এবং একটি ব্লু ভিভো ৫ মিনি। পরীক্ষা করা হয়েছে ক্যালিফোর্নিয়ার এফসিসি অনুমোদিত আরএফ এক্সপোজার ল্যাবে।