বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় ক্রিপ্টোকারেন্সি হলো বিটকয়েন। ২০০৯ সালে চালু হওয়া এ ডিজিটাল মুদ্রা ব্যবস্থা বিশ্ব অর্থনীতিতে আলোড়ন তুলতে সক্ষম হয়েছে। সম্প্রতি বিটকয়েন আলোচনায় উঠে এসেছিল অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধির কারণে।
২০১৭ সালের শুরুতে বিটকয়েনের বিনিময় মূল্য এক হাজার ডলারের কম থাকলেও একই বছরের শেষদিকে এর দাম ২০ হাজার ডলার ছাড়িয়ে যায়। বর্তমানে বিটকয়েনের দাম প্রায় ৮ হাজার ডলার। বিটকয়েন নিয়ে মজার কিছু তথ্য আজ তুলে ধরা হলো-
রহস্যময় উদ্ভাবক
বিটকয়েনের উদ্ভাবক সাতোশি নাকামতো। তবে এটা উদ্ভাবকের ছদ্মনাম। মজার ব্যাপার হলো, এখন পর্যন্ত এর উদ্ভাবককে শনাক্ত করা সম্ভব হয়নি। এর মাঝে অনেকেই নিজেকে সাতোশি নাকামোতো বলে দাবি করলেও এর স্বপক্ষে কোনো প্রমাণ দিতে পারেননি।
অনেকে মনে করেন, এই নামটি কোনো একক ব্যক্তির নয়, বিটকয়েন উদ্ভাবনের সঙ্গে জড়িত দলের প্রত্যেকের নামই সাতোশি। বিটকয়েনের ক্ষুদ্রতম একক ‘সাতোশি’ যা এক বিটকয়েনের ১০ কোটি ভাগের এক ভাগের সমান।
বিটকয়েনের সংখ্যা সীমিত
সাধারণ মুদ্রা ব্যবস্থায় অঢেল সরবরাহ থাকলেও বিটকয়েনের সংখ্যা সীমিত। সর্বোচ্চ ২ কোটি ১০ লাখ পর্যন্ত বিটকয়েন ছাড়া যাবে। এখন পর্যন্ত বিটকয়েনের সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৬৭ লাখ। ধারণা করা হয়, ২১৪০ সাল নাগাদ বিটকয়েনের সংখ্যা সর্বোচ্চ সীমায় পৌঁছাবে।
বিটকয়েন মাইনিং
বিটকয়েন তৈরির পদ্ধতি মাইনিং নামে পরিচিত। বিটকয়েন তৈরির পদ্ধতি স্বর্ণের খনি থেকে স্বর্ণ তুলে আনার মতো কঠিন কাজ হওয়ায় তৈরির প্রক্রিয়ার নাম দেওয়া হয়েছে ‘মাইনিং’।
বিটকয়েন মাইনিংয়ের জন্য প্রয়োজন হয় উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন হার্ডওয়্যার। এ প্রক্রিয়ায় জটিল গাণিতিক সমস্যা সমাধানের মাধ্যমে প্রতি ১০ মিনিটে ১২ দশমিক ৫টি বিটকয়েন তৈরি হয়ে ব্লকচেইনে যুক্ত হয়ে যাচ্ছে।
বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ ব্যয়
মাইনিংয়ের জন্য যেসব কম্পিউটার ব্যবহার করা হয়, সেগুলো বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎ খরচ করে। বিটকয়েনের দাম বাড়ার কারণে অনেকেই মাইনিংয়ে যুক্ত হচ্ছেন যার কারণে খরচ হচ্ছে বিপুল পরিমাণ বিদ্যুৎশক্তি।
সম্প্রতি এক পরিসংখ্যান থেকে দেখা গেছে, এক বিটকয়েন লেনদেনে প্রতি ঘণ্টায় খরচ হচ্ছে ২১৫ কিলোওয়াট বিদ্যুৎ। প্রতিদিন প্রায় ৩ লাখ বিটকয়েন লেনদেন হয়ে থাকে।
কেনা যায় বিটকয়েনের অংশবিশেষ
বিটকয়েনের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো, একটি সম্পূর্ণ বিটকয়েন না কিনে সর্বনিম্ন এক সাতোশিও কেনা যায়। বর্তমানে এক সাতোশির বিনিময় মূল্য প্রায় ০.০০০০৮ ডলার।
বিটকয়েন ডাকাতি
বিটকয়েন লেনদেন হয়ে থাকে একটি এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে। বিভিন্ন এক্সচেঞ্জ থেকে এখন পর্যন্ত চুরি হয়েছে ৯ লাখ ৮০ হাজারের বেশি বিটকয়েন বর্তমানে যার বাজারমূল্য প্রায় এক হাজার ৫০০ কোটি ডলার।
লেনদেনের খরচ বাড়ছে
বিটকয়েনের লেনদেন একটি জটিল, সময়সাপেক্ষ এবং ব্যয়সাপেক্ষ প্রক্রিয়া। এ ব্যয়ের পরিমাণ দিন দিনই বাড়ছে। এ বছরের শুরুতে এক বিটকয়েন লেনদেন খরচ ছিল ৩০ সেন্ট যা বৃদ্ধি পেয়ে ৭ দশমিক ৩০ ডলারে এসে দাঁড়িয়েছে।