দেশের বিভিন্ন জনগুরুত্বপূর্ণ সমস্যাসমূহ চিহ্নিত করে সেগুলোর সমাধানে তথ্য-প্রযুক্তি ভিত্তিক ইনোভেটিভ সমাধান খুঁজে বের করার লক্ষ্যে আয়োজিত হচ্ছে ‘ন্যাশনাল হ্যাকাথন অন ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজিস’।
‘থিংক হ্যাক সলভ’- স্লোগানটিকে সামনে রেখে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের আওতায় বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল এর অধীনে উদ্ভাবন ও উদ্যোক্তা উন্নয়ন একাডেমী প্রতিষ্ঠাকরণ প্রকল্প- এর উদ্যোগে বাংলাদেশে অবস্থিত ভারতীয় হাই কমিশন ও টেক মাহিন্দ্রা লিমিটেড (TechM) এর সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে এই হ্যাকাথন।
তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক এর সঠিক নির্দেশনায় আইসিটি খাতের উন্নয়নের জন্য নানামুখী কার্যক্রম ও বিভিন্ন প্রকল্প পরিচালনা করছে আইসিটি বিভাগ। এরই ধারাবাহিকতায় শুরু হচ্ছে এই হ্যাকাথন।
এই আয়োজনের উদ্দেশ্য হল- উদীয়মান উদ্যোক্তাদের বিনিয়োগ সহযোগিতা, বৈদেশিক পরিবেশে প্রশিক্ষণ ও মেনটরিং করা, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দেশীয় উদ্ভাবনের প্রচার ও প্রসার করার পাশাপাশি বিশ্বের স্টার্টআপ ইকোসিস্টেমের সাথে বাংলাদেশকে সংযুক্ত করে বৈদেশিক বিনিয়োগকে উৎসাহিত করা।
১৮ বছর বা এর ঊর্ধ্বে যে কেউ এ হ্যাকাথনে আবেদন করতে পারবেন। একটি দলে সর্বোচ্চ ৩ জন থাকতে পারবেন অথবা আগ্রহী ব্যাক্তি একক ভাবে অংশ নিতে পারবেন। দুই দিনব্যাপী এই হ্যাকাথন আগামী ২৮-২৯ ফেব্রুয়ারি সম্ভাব্য ভেন্যু ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি, বাংলাদেশ (আইইউবি) ঢাকায় অনুষ্ঠিত হবে।
অংশগ্রহণকারীদের উদ্ভাবনী সমাধানগুলোকে নিয়ে হবে চূড়ান্ত হ্যাকাথন। সারা দেশ থেকে নির্বাচিত ৫০ টি দল মূল হ্যাকাথনে অংশ নিবে যাদের মেনটরিং করবে ৫০ জন মেনটরের সমন্বয়ে গঠিত একটি দক্ষ টিম। সেখান থেকে সেরা ১০ টি ইনোভেশনকে বিজয়ী হিসেবে ঘোষণা করা হবে।
বিজয়ী ১০টি টিমকে তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান টেক মাহিন্দ্রা লিমিটেড (TechM) মেকারস ল্যাবে গবেষণা ও প্রযুক্তি সহয়তাসহ মেনটরিং ও প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। একই সাথে উদ্ভাবনী প্রকল্পটি ম্যাচিউর করার জন্য প্রয়োজনীয় বিনিয়োগ করা হবে।
পরবর্তীতে বিজয়ী দলগুলোর প্রকল্পসমূহের ম্যাচুউরিটির পর টেক মাহিন্দ্রা লিমিটেড (TechM)-এর আওতাভুক্ত মার্কেটিং চ্যানেলের মাধ্যমে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রচারণা করে তাদেরকে গ্রোথ পর্যায়ে নিয়ে আসতে সহযোগিতা করা হবে।
এছাড়া মূল হ্যাকাথনে অংশগ্রহণকারীসহ বিজয়ীদের সনদপত্র প্রদানের পাশাপাশি স্টার্টআপ বাংলাদেশ- iDEA প্রকল্পের আওতায় প্রয়োজনীয় মেনটরিং ও গ্রুমিং থাকছেই।
সারা দেশ থেকে আগ্রহীগণ অনলাইনে নিবন্ধনের মাধ্যমে এই হ্যাকাথনে অংশ নিতে পারবেন। এছাড়া ১০টি বিশ্ববিদ্যালয়ে আয়োজিত হচ্ছে বিভাগীয় ক্যাম্পেইন।
ইতোমধ্যে রংপুর বিভাগে গত বুধবার হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়-এ অনুষ্ঠিত হয় ক্যাম্পেইন। ক্যাম্পেইনে রংপুর বিভাগের বিভিন্ন স্থান থেকে প্রায় ৩ শতাধিক তরুণ অংশগ্রহণ করে। হ্যাকাথনের পরবর্তী বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পেইনসমূহের সময়সূচি নিয়মিত ভাবে ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজে শেয়ার করা হবে বলে জানান আইসিটি ডিভিশনের স্টার্টআপ বাংলাদেশ- iDEA প্রকল্পের কমিউনিকেশন কনসালটেন্ট সোহাগ চন্দ্র দাস।
দেশের বিভিন্ন মন্ত্রণালয় ও এর আওতাধীন বিভাগ ও দপ্তরের থেকে প্রাপ্ত সমস্যাসমূহ থেকে ১০টি জনগুরুত্বপূর্ণ সমস্যা (চ্যালেঞ্জ) চিহ্নিত করা হয়েছে। হ্যাকাথনের চ্যালেঞ্জগুলোর সমাধানে ফ্রন্টিয়ার টেকনোলজিসগুলোর মধ্যে Artificial Intelligence, Blockchain, Big Data, Internet of Things, Machine Learning, Robotics ব্যবহার করা যেতে পারে।
অনলাইনে নিবন্ধন ও বিস্তারিত তথ্য পেতে ভিজিট করতে হবে www.startupbangladesh.gov.bd এবং https://www.facebook.com/LetsStartupBD/ । হ্যাকাথনে অংশগ্রহণের জন্য আবেদনের শেষ তারিখ ৩১ জানুয়ারি।
একটি জ্ঞানভিত্তিক সমাজ ও তথ্যপ্রযুক্তি সমৃদ্ধ জাতি গঠনে তরুণদের এগিয়ে আসার বিকল্প নেই। আবেদনের নির্ধারিত সময় শেষ হবার পূর্বেই দেশের তরুণসহ সকলকে এই আয়োজনে অংশগ্রহণ করে নিজেদের উদ্ভাবনী শক্তির ব্যবহার এবং দেশে স্টার্টআপ সংস্কৃতি গড়ে তোলার মাধ্যমে দেশকে ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তর করতে সবাইকে আহ্ববান করেছেন প্রকল্পের পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) সৈয়দ মজিবুল হক।