গত বছরের চতুর্থ প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর) যুক্তরাষ্ট্রকে হটিয়ে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ স্মার্টফোন বাজারের তকমা দখলে নিয়েছে ভারত। বৃহৎ স্মার্টফোন বাজার হিসেবে এখন চীনের পরই রয়েছে দেশটি। চীনে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ায় ভারতের স্থানীয় স্মার্টফোন উৎপাদন এবং সরবরাহ উভয়ই বিলম্বিত হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে দেশটির ডিভাইস নির্মাতারা। এর ফলে ভারতের স্মার্টফোন বাজারে বিরূপ প্রভাব পড়তে পারে। কারণ করোনাভাইরাস আতঙ্কে বৈশ্বিক বহুজাতিক টেক জায়ান্টগুলো চীনে তাদের কার্যক্রম এবং অফিস সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ ঘোষণা করেছে। খবর রয়টার্স ও সিএনএ।
বৈশ্বিক অনেক ডিভাইস ব্র্যান্ড ভারতে স্মার্টফোন উৎপাদন কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তবে এখনো সেলফোন, ডিসপ্লে প্যানেল, ক্যামেরা মডিউল এবং প্রিন্টেট সার্কিট বোর্ডসহ অন্যান্য ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশের জন্য ভারত চীনের ওপর নির্ভরশীল। অ্যাপল পণ্য উৎপাদনকারী তাইওয়ানভিত্তিক ফক্সকন ও উইস্ট্ররন ভারতে আইফোন তৈরি করছে এবং ফক্সকন তাদের ভারতীয় কারখানায় শাওমির জন্যও স্মার্টফোন উৎপাদন করছে। অন্যান্য ব্র্যান্ডের পাশাপাশি ভারতে স্মার্টফোন উৎপাদন করছে দক্ষিণ কোরিয়াভিত্তিক স্যামসাং এবং চীনভিত্তিক ওয়ানপ্লাস।
এ বিষয়ে ভারতীয় স্মার্টফোন ব্র্যান্ড লাভার সহপ্রতিষ্ঠাতা এসএন রায় বলেন, অবশ্যই আমরা বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন এবং এ নিয়ে এরই মধ্যে পরিকল্পনা করা হয়েছে। তবে করোনাভাইরাসের বিস্তার এবং প্রভাব দীর্ঘায়িত হলে আগামী মার্চ-এপ্রিল প্রান্তিকের সরবরাহে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।
তিনি বলেন, ভারতে স্মার্টফোন উৎপাদনের জন্য কিছু সরঞ্জাম দক্ষিণ কোরিয়া, ভিয়েতনাম, তাইওয়ানের মতো দেশগুলো থেকে আনা যেতে পারে। তবে স্মার্টফোন নির্মাতারা এ দেশগুলো থেকে তখনই পণ্য আনবে যখন তাদের হাতে আর কোনো পথ খোলা থাকবে না। চীনভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ওয়ানপ্লাস জানিয়েছে যে তারা ভারতে সরঞ্জাম সরবরাহ কার্যক্রম স্বল্পমেয়াদে হলেও পরিচালনা করবে।
চীনে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা দুই শতাধিকে পৌঁছেছে। এ ভাইরাসের বিষয়ে বিশ্বজুড়ে জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও)। যে কারণে বৈশ্বিক বহুজাতিক টেক জায়ান্ট অ্যালফাবেট নিয়ন্ত্রিত গুগল এবং সুইডেনভিত্তিক সরঞ্জাম নির্মাতা প্রতিষ্ঠান আইকেইএর মতো প্রতিষ্ঠানগুলো চীনে তাদের সব কার্যক্রম বন্ধ করেছে। এছাড়া অ্যাপল, অ্যামাজন, মাইক্রোসফটসহ বিভিন্ন টেক জায়ান্ট কার্যক্রম সাময়িকভাবে বন্ধসহ কর্মীদের চীন ভ্রমণের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে।
ভারতের স্মার্টফোন উৎপাদন খাতসংশ্লিষ্টরা আশা করছেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব থেকে চীন আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে বেরিয়ে আসতে পারবে। তবে ইন্ডিয়া সেলুলার অ্যান্ড ইলেকট্রনিকস অ্যাসোসিয়েশন এবং ইন্ডাস্ট্রি লবি গ্রুপের প্রধান পঙ্কজ মহিন্দ্র জানান, চীনে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব আগামী ১০ ফেব্রুয়ারির পরও অব্যাহত থাকলে ভারতসহ বৈশ্বিক স্মার্টফোন বাজারের আশঙ্কার কারণ হতে পারে।