ডিজিটাল শিক্ষাবিষয়ক সফটওয়্যারে সুনির্দিষ্ট মানদণ্ড চান উদ্যোক্তারা। এই খাতটির বর্তমান দুর্দশা থেকে মুক্তির প্রধানতম উপায় হিসেবে এটিকে নির্দিষ্ট বেঞ্চমার্ক হিসেবেও দেখছেন তারা। এটা না হলে এ খাতে অসম প্রতিযোগিতার কারণে প্রতিষ্ঠিত অনেক সফটওয়্যার কোম্পানিও বন্ধ হবে, দেশীয় সফটওয়্যারের প্রতি মানুষের আগ্রহ কমে যেতে পারে বলে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্টরা।
রবিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) বেসিসের সফটওয়্যার মেলার শেষ দিনে ‘স্ট্যান্ডার্ডাইজেশন অব এডুকেশনাল ইনস্টিটিউট ম্যানেজমেন্ট সলিউশন টু সাপোর্ট ডিজিটাল বাংলাদেশ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন।
বৈঠকে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন।বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
অনুষ্ঠানের মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ইমরুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, বাংলাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ব্যবস্থাপনায় বিদ্যমান নানা সমস্যা ও এর সমাধানে এই তথ্যপ্রযুক্তি প্রয়োগের সুযোগ ও সম্ভাবনা নিয়েই আজকের আলোচনা। আমাদের এই ডিজিটাল শিক্ষা সফটওয়্যারের একটা সুনির্দিষ্ট মানদণ্ড থাকা উচিত। না হলে অসম প্রতিযোগিতা সৃষ্টি হবে যা এই খাতে খারাপ উদাহরণ হয়ে থাকবে। তিনি জানান, দেশে মোট এডুকেশনাল ইনস্টিটিউটের সংখ্যা ১৭০ হাজার।শিক্ষার্থী ৪ কোটি ৪০ লাখ আর শিক্ষকের সংখ্যা ১০ লাখ। কিন্তু সঠিকভাবে ডিজিটাল শিক্ষাদান প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা খুবই কম।
ইমরুল চৌধুরী বলেন, এডুকেশন সফটওয়্যারের জন্য একটি নির্দিষ্ট মানদণ্ড নির্বাচন করা প্রয়োজন। সেই সঙ্গে সেই মানদণ্ড অনুযায়ী সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের তালিকা করা এবং সেই অনুসারে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করাও জরুরি। এ ক্ষেত্রে দেশীয় সফটওয়্যার সেবাকে গুরুত্ব দিতে হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন বলেন, অবশ্যই একটি বেঞ্চমার্ক বা মানদণ্ড থাকা উচিত। এটিকে আমি ইতিবাচক ও নেতিবাচক দুইভাবেই দেখি। আপনাদের এই মানদণ্ড যেন আবার ইজিপির মতো না হয়। কারণ এই ইজিপিতে দৃশ্যমান কিছুই দেখা যায়না। বাস্তবতা কিন্তু খুবই ভিন্ন। এরকম যাতে না হয় সেদিকেও আপনাদের লক্ষ্য রাখতে হবে। তিনি আরও বলেন, আমাদের প্রতিটি ক্ষেত্রেই নজর দেওয়া উচিত। বিশেষ করে এই তথ্য প্রযুক্তি সেক্টরটিতে। এটিতে শুধু নীতিগত পৃষ্ঠপোষকতা নয়, আমি মনে করি অর্থনৈতিক পৃষ্ঠপোষকতা করাও জরুরি।
শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন,এই মানদণ্ড শিক্ষা ডিজিটালাইজেশনের জন্য অবশ্যই একটা চ্যালেঞ্জ। আমরা দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই কাজ করে যাচ্ছি কিভাবে পুরো এডুকেশন সিস্টেমকে একটি ড্যাশবোর্ড’র মধ্যে আনা যায়। যাতে দেখা যায় কোথায় কি অবস্থায় রয়েছে। এসময় তিনি বলেন, শিক্ষার ক্ষেত্রে আমাদের কাজ হবে উদ্ভাবনকে আরও বেশি উৎসাহিত করা। তবে মন্ত্রী (শিক্ষা) মহোদয়ের সঙ্গে আলোচনা করে আমি আপনাদের সঙ্গে বসার একটা ব্যবস্থা করে দেব। যেটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে আমি মনে করি।
বৈঠকটি সঞ্চালনা করেন বেসিসের ‘স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ডিজিটাল এডুকেশন’র কো-চেয়ারম্যান ও টেকনোগ্রাম লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী ও ব্যবস্থাপনা এ কে এম আহমেদুল ইসলাম বাবু। আলোচনায় অংশ নেন বেসিসের ‘স্ট্যান্ডিং কমিটি অন ডিজিটাল এডুকেশন’র চেয়ারম্যান মো. শাকিব রব্বানী, এরিনাফোন বিডি লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু তাহের মোহাম্মদ ফজলে রাব্বি, নেটিজেন আইটি লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী এইচ রায়হান নোবেল, এস্টিম সফট লিমিটেডের প্রধান নির্বাহী শাহজালাল সোহেলসহ বিভিন্ন সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ নির্বাহীরা।