ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, বঙ্গবন্ধু ছিলেন বিস্ময়কর নেতৃত্বের একজন মহামানব। এই ভূ-খণ্ডের গোটা জনগোষ্ঠী বঙ্গবন্ধুর কালজয়ী নেতৃত্ব অন্ধের মতো অনুসরণ করেছে।তাঁর নেতৃত্বের গুণাবলী বিশ্বের কোন নেতা অর্জন করতে পারেনি। বঙ্গবন্ধুকে যত বেশী অধ্যয়ন করা যাবে ততই তাকে বেশি করে জানা যাবে। একজন বঙ্গবন্ধুকে অনুসরণ করলে মর্যাদাপূর্ণ উন্নত জীবন গঠনের জন্য আর কাউকে জীবনের হিরু হিসেবে অনুসরণ করার প্রয়োজন হবে না। তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু দুটি অমূল্য রত্ন আমাদের জন্য রেখে গেছেন একটি স্বাধীনতা আর একটি হলো তার সুযোগ্য সন্তান।
মন্ত্রী আজ ঢাকায় স্বাধীনতার মহান স্থপতি‘র ৪৫তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে ডিজিটাল প্লাটফর্ম এ বিটিসিএল আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন। বিটিসিএল এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ড. মো: রফিকুল মতিন এর সভাপতিত্ত্বে অনুষ্ঠানে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সচিব মো: নূর-উর-রহমান, বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বঙ্গবন্ধু গবেষক কাজী সাজ্জাত আলী জহির বক্তৃতা করেন। বিটিআরসি চেয়ারম্যান মো: জহিরুল হক, বাংলাদেশ কমিউনিকেশন্স স্যাটেলাইট কোম্পানি লিমিটেড এর চেয়ারম্যান ড. শাহাজাহান মাহমুদসহ ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ ও এর অধীন সংস্থাসমূহের কর্মকর্তা-কর্মচারিগণ অনুষ্ঠানে সরাসরি বা ডিজিটাল প্লাটফর্মে সংযুক্ত ছিলেন।
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী বলেন, জাতির পিতা হাজার বছরের পরাধীন বাঙালি জাতিকে কেবলমাত্র স্বাধীনতা্ই দেননি, তিনি যুদ্ধের ধ্বংশস্তুপের ওপর দাঁড়িয়েও আইটিইউ, ইউপিইউ এবং বেতবুনিয়ায় ভূ-উপগ্রহ প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ডিজিটালাইজেশনে বীজ বপন করে গেছেন। জাতির এই মহামানব জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকীতেও তিনি ও তার সাথে শহীদ জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের প্রতি শ্রদ্ধিা প্রদর্শণ করার এই সুযোগ পাওয়াটা আমাদের জন্য গৌরবের। বঙ্গবন্ধুর রক্তের সুযোগ্য উত্তরসূরী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ১৬ বছরের দূরদৃষ্টি সম্পন্ন নেতৃত্বে সেই বীজ আজ বিশাল মহিরূহে রূপ নিচ্ছে।২০০৮ সালে জননেত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ কর্মসূচী বঙ্গবন্ধুর লালিত স্বপ্নের সোনার বাংলা প্রতিষ্ঠা কর্মসূচীর রূপরেখা। এরই ধারাবাহিকতায় অতীতের তিনটি শিল্প বিপ্লব মিস করেও ২০২০সালের বাংলাদেশ বিশ্বে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছে। করোনাকালেও গ্রামের মানুষটি পর্যন্ত উপলব্ধি করছে ডিজিটাল বাংলাদেশ না থাকলে বৈশ্বিক মহামারির এই ক্রান্তিলগ্নে মানুষের জীবনযাত্রা বিপন্ন হতো। আজকের বাংলাদেশে একটি ছোট শিশুও ইন্টারনেট দাবি করছে উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, ২০২১ সালে দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে উচ্চগতির ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পৌঁছে যাবে। এ বছরের মধ্যেই দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ৪জি মোবাইল নেটওয়ার্ক সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার প্রচেষ্টা চলছে।
বঙ্গবন্ধুর ডিজিটালাজেশনের আদর্শের পথ ধরে গত এগারো বছরে সূচিত ডিজিটাল বিপ্লবকে বিস্ময়কর উল্লেখ করে দেশের কম্পিউটার বিপ্লবের কিংবদন্তী মোস্তাফা জব্বার বলেন, ২০০৮ সালেও দেশে আট জিবিপিএস ইন্টারনেট ব্যবহার হতো এবং ব্যবহারকারী ছিল মাত্র আট লাখ। প্রধান মন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা সজীব আহমেদ ওয়াজেদ এর দিকনির্দেশনায় ডিজিটালাইজেশনে বৈপ্লবিক পরিবর্তন সূচিত হয়েছে। দেশে আজ ১৭শত জিবিপিএস ইন্টারনেট ব্যবহৃত হচ্ছে এবং দেশে ১১ কোটি মানুষ ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। মোস্তাফা জব্বার বঙ্গবন্ধুর আদর্শ অনুসরণ করে দেশমাতৃকার প্রতি ভক্তি নিয়ে মানুষের সেবায় আত্মনিয়োগ করার জন্য সকলের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, জাতির পিতা প্রথমেই একটি জাতি স্বত্বা গড়ে তুলেছেন। প্রতিটি ক্ষেত্রে অসীম দূরদর্শিতার মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার লড়াইকে এগিয়ে নিয়েছেন।
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেছেন, স্বাধীনতার পঞ্চাশ বছর যে বাংলাদেশ আমরা পেয়েছি বঙ্গবন্ধু জীবিত থাকলে আজকের যে বাংলাদেশ আমরা দেখছি তা বহু আগে আমরা পেতাম। ডাক ও টেলি যোগাযোগ বিভাগের সচিব জনাব নুরুর রহমান বঙ্গবন্ধু ও তার পরিবারের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে জাতির পিতাকে জীবনে অনুশলিন করার আহ্বান জানান। বীর মুক্তিযোদ্ধা সাজ্জাত আলী জহির বীরবিক্রম বঙ্গবন্ধুর জীবনের অসাধারণ ঘটনাগুলোর দৃষ্ঠান্ত তুলে ধরে তার প্রজ্ঞা, দূরদর্শিতা, নেতৃত্ত্ব, সাহসিকতা ও দৃঢ়তার বিষয়গুলো তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে বিটিসিএল আয়োজিত বঙ্গবন্ধু বিষয় রচনা প্রতিযোগিতার পুরষ্কারও বিতরণ করা হয়।