বিশ্বের বর্তমানে অন্যতম এবং জনপ্রিয় ইলেকট্রনিক ডিভাইস উৎপাদনকারী কোম্পানির স্যামসাং কে চেনেন না এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া খুব দুষ্কর। বাংলাদেশের বর্তমানে স্যামসাং জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে । মোবাইল ফোন থেকে শুরু করে দৈনন্দিন হোম এপ্লায়েন্স জিনিসগুলো বাংলাদেশের মানুষের কাছে জনপ্রিয়।
আচ্ছা স্যামসাং কি কেবলমাত্র ইলেকট্রনিক্স পণ্য তৈরি করে? তার পাশাপাশি কোনো কিছু তৈরি করে না? এই আর্টিকেলে আপনাদের সাথে স্যামসাং নিয়ে এমন কিছু মজার ফ্যাক্ট শেয়ার করতে চলেছে যা আপনাকে অবাক করতে বাধ্য হবে।
১.স্যামসাং এর সিমেন্ট – বালু
জেনে অবাক হবেন যে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু টাওয়ার ব্রুজ খলিফা নির্মাণ করতে যে কাচামাল প্রয়োজন হয়েছিল তার সবকিছুই সরবরাহ করেছিল স্যামসাং। শুধু কি ব্রুজ খলিফা?
তার পাশাপাশি বিশ্বের পঞ্চম উঁচা বিল্ডিং টাইপেই নির্মাণের কাজও সম্পন্ন করেছিল স্যামসাং৷ সুতরাং এখন নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন স্যামসাং শুধুমাত্র ইলেকট্রনিক পণ্য উৎপাদন করে না। তার পাশাপাশি নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় সকল কাচা মালও উৎপাদন করে।
২.বিশ্বের ৫ জনের ভেতর ৪ জনের টিভি স্যামসাং এর!
জানেন বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বিক্রি হওয়া টেলিভিশন ব্র্যান্ড কোনটি? আপনারা নিশ্চয়ই বুঝে গেছেন সবচেয়ে বেশিবার বিক্রিত টেলিভিশন ব্র্যান্ড স্যামসাং। বিশ্বের প্রায় আশি শতাংশ বিক্রিত টেলিভিশন স্যামসাংয়ের।
৩. মোবাইল গুলোর কাঁচামাল সরবরাহ
স্যামসাং যে কেবলমাত্র তাদের নিজস্ব মোবাইল ফোন গুলি তৈরি করে তা নয়, তার পাশাপাশি অন্য কোম্পানির মোবাইল গুলোর কাঁচামাল সরবরাহ করে। কী? যেন অবাক হচ্ছেন তাইতো। আপনারা জেনে আরও অবাক হবেন যে অ্যাপেলের তৈরি আইফোনের রেটিনা ডিসপ্লে প্রস্তুতকারক কোম্পানিও স্যামসাং । শুধু তাই নয় সারা বিশ্বে আরো যে সকল নামিদামি স্মার্টফোন কোম্পানি রয়েছে সেগুলোর কাঁচামাল সরবরাহ করে স্যামসাং।
৪.স্যামসাং যখন রেস্টুরেন্ট!
যে স্যামসাং কে আপনি আজ বিভিন্ন ধরনের মোবাইল ফোন, টেলিভিশন, রেফ্রিজারেটর সহ আরো অন্যান্য ইলেকট্রনিকস্ পণ্য উৎপাদন করছে দেখছেন সেই স্যামসাং একসময় কেবলমাত্র নুডুলস উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান ছিল। কেবলমাত্র নুডুলস নয় তার পাশাপাশি অন্যান্য খাদ্য সামগ্রী উৎপাদন করত স্যামসাং । প্রথমদিকে ১৯৩৮ সালে তারা একটি রেস্টুরেন্ট চালু করেছিল। সেখানে বিভিন্ন ধরনের খাদ্য সামগ্রী বিক্রি করা হতো । বিশেষ করে নুডুলস।
সেগুলো আস্তে আস্তে আস্তে মানুষ এর জনপ্রিয়তা অর্জন করে । এবং একপর্যায়ে ১৯৬০ সালে তারা সর্ব প্রথম বারের মত ইলেকট্রনিক্স ডিভাইস তৈরির কাজ শুরু করে৷ তাদের তৈরি প্রথম ইলেকট্রনিক্স যন্ত্রটি ছিল সাদা কালো টিভি।
৫.স্যামসাং এর যা কিছু প্রথম!
সর্ব প্রথম বারের মত থ্রিজি মোবাইল এবং সর্ব প্রথম বারের মত এলসিডি টিভি তৈরীর করময় অভিজ্ঞতা রয়েছে স্যামসাং কোম্পানিটির। ধীরে ধীরে দক্ষিণ কোরিয়ার ভেতর সবচেয়ে জনপ্রিয় মোবাইল উৎপাদনকারী কোম্পানিতে পরিণত হয় স্যামসাং।। এবং পূর্বের একটি ফ্যাক্টে বলা হয়েছে সারা পৃথিবীতে বিক্রি হওয়া টেলিভিশন গুলোর ৮০ শতাংশই স্যামসাং ব্র্যান্ডের।
৬.মাইক্রোসফট + অ্যাপেল = স্যামসাং
বর্তমানে স্যামসাং সারা পৃথিবীর একটি জায়ান্ট কোম্পানিতে পরিণত হয়েছে। এবং সেই জন্য তাদের পুজি এবং দল-বল বেশ বেশি । জেনে অবাক হবেন মাইক্রোসফ্ট এবং অ্যাপেল কোম্পানি মিলে যত জন কর্মচারী রয়েছে কেবলমাত্র স্যামসাং এ সে পরিমাণ কর্মচারী রয়েছে। তাদের মোট কর্মচারীর সংখ্যা সাড়ে পাঁচ লাখের বেশি।
৭.অস্ত্র তৈরিতে স্যামসাং :
পূর্বের একটি ফ্যাক্ট এ বলা হয়েচগে ব্রুজ খলিফা নির্মাণ করার জন্য স্যামসাং কাঁচামাল সরবরাহ করেছে। আপনি জেনে আরো অবাক হবেন যে স্যামসাংয়ের রয়েছে জাহাজ তৈরির বিরাট একটি কারখানা। এছাড়াও যুদ্ধের জন্য প্রচুর পরিমাণে ট্যাংক, বিমান, যুদ্ধ বিমান, অস্ত্রশস্ত্র, মিসাইল ইত্যাদি তৈরি করে স্যামসাং।
৮.পণ্য ভাংচুর করে বিবেক ফেরানো!
এটা ১৯৯৫ সালের ঘটনা। একের পর এক স্যামসাংয়ের বিভিন্ন ইলেকট্রনিক্স পণ্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসতে থাকে। কিছুতেই পণ্যের মান উন্নয়ন করতে পারছিলোনা স্যামসাংয়ের কর্মীরা। এবং সে কারণে স্যামসাংয়ের তৎকালীন প্রধান লি কুন হি কর্মীদের মনোযোগ বাড়ানোর জন্য এক ধরনের অভিনব পদক্ষেপ গ্রহণ করেন প্রায় । দুই হাজার পণ্য একদিনে, একসাথে, এক জায়গায় বিনষ্ট করেন তিনি । এবং সেখান থেকেই কর্মীদের প্রচুর অনুশোচনা হয়। পণ্যের মান উন্নত হতে শুরু করে। তথ্য সূত্র : ডেইলিটেক, ও যুগান্তর