বিশ্বের সর্ববৃহৎ কলসেন্টার জোট গ্লোবাল বিপিও অ্যালায়েন্সের (জিবিএ) সঙ্গে যুক্ত হলো বাংলাদেশ। বৃহস্পতিবার ঢাকায় জুম কনফারেন্সের মাধ্যমে জিবিএ’র সদস্য কোম্পানি হিসেবে বাংলাদেশে ফিফোটেকের যাত্রা শুরু হয়।
এ সময় জুম কনফারেন্সে এক ভিডিও বার্তায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেন, আমি আনন্দিত হয়েছি এই কারণে যে, গ্লোবাল বিপিও অ্যালায়েন্সের সাথে বাংলা ভাষাভাষী প্রায় ৩৫ কোটি মানুষের জন্য বাংলাদেশের একটি কোম্পানির মাধ্যমে বিপিও সেবা দেয়ার মতো আমরা একটি সুযোগ পেয়েছি।
তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি ফিফোটেকের যে যাত্রা সেই যাত্রার ফলে বাংলাদেশের বিপিও খাত আরও সমৃদ্ধ হবে। জিবিএ ও ফিফোটেকের একত্রে পথচলার আগামীর দিনগুলোর জন্য অনেক শুভ কামনা রইলো।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কল সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্কো)-এর সিনিয়র সহ-সভাপতি মোহাম্মদ আবুল খায়ের বলেন, বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠান ফিফোটেক আন্তর্জাতিক কল সেন্টার জোট-জিবিএ’র সাথে কাজ করবে এটাই আমাদের জন্য গর্বের বিষয়। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের তরুণদের জন্য কর্মসংস্থান তৈরি হবে।
এশিয়ান ওশেনিয়ান কম্পিউটিং ইন্ডাস্ট্রি অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ এইচ কাফি বলেন, আন্তর্জাতিক কল সেন্টার জোট-জিবিএ’র সাথে বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠান ফিফোটেক কাজ করার সুযোগ পেয়েছে যা আমাদের জন্য অত্যন্ত আনন্দের একটি বিষয়। এটি আমাদের দেশের জন্য সম্মানের বিষয়।
বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব কল সেন্টার অ্যান্ড আউটসোর্সিং (বাক্কো) এর সভাপতি ওয়াহিদ শরীফ বলেন, বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠান ফিফোটেক আন্তর্জাতিক কল সেন্টার জোট-জিবিএ’র সাথে কাজ করবে, এটি দেশের জন্য গর্বের বিষয়। জিবিএ ও ফিফোটেকের প্রতি শুভ কামনা রইলো।
জিবিএ জোটের সাথে চুক্তিবদ্ধ হবার বিষয়ে ফিফোটেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ হোসেন বলেন, মূলত ফিফোটেক বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের বাংলাভাষার গ্রাহকদের বাংলাদেশ থেকে ও হিন্দি ভাষার গ্রাহকদের ভারতের কোলকাতা থেকে কলসেন্টার ও ব্যাক অফিস সেবা দিবে। আমরা আজ থেকে আমাদের অফিসিয়াল যাত্রা শুরু করলাম। বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের সুযোগ সৃষ্টি করবে জিবিএ জোট, এমনটাই মনে করেন তৌহিদ হোসেন।
বিশ্বের সর্ববৃহৎ কলসেন্টার জোট জিবিএ এশিয়া, ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকার বিপিও খাতে কাজ করছে। এদিকে ২০০২ সাল থেকে আইটি ও আইটিএস খাতের স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক গ্রাহকদের চাহিদা পূরণে কাজ করছে ফিফোটেক।
মূলত বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে কল সেন্টার ও বিপিও খাতের গ্রাহকদের কেন্দ্রীয়ভাবে নিরবচ্ছিন্ন সেবা দিতে জিবিএ জোট গঠন করা হয়েছে। জিবিএ জোটের সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়ে ফিফোটেক বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের বাংলা ভাষার গ্রাহকদের বাংলাদেশ থেকে ও হিন্দি ভাষার গ্রাহকদের ভারতের কলকাতা থেকে কলসেন্টার ও ব্যাক অফিস সেবা দিবে।
বর্তমানে জিবিএ’র সাথে বাংলাদেশ থেকে ফিফোটেক, জাপানের মাস্টারপিস গ্রুপ ইনক, চীনের বেইজিং-৯৫ টেলিওয়েব ইনফরমেশন কোম্পানি লিমিটেড, কলম্বিয়ার কলম্বিয়া আউটসোর্সিং সলিউশনস এসএএস, মালয়েশিয়ার ডে থ্রি বিজনেস সার্ভিসেস এসডিএন বিএইচডি, তিউনিসিয়ার নেক্সাস, রাশিয়া ও ইউক্রেনের টেলিকম এক্সপ্রেস, জার্মানির টিডিএম, ইতালির আইএনজিও এসপিএ, থাইল্যান্ডের নাইস কল কোম্পানি লিমিটেড, মিয়ানমারের মাস্টারপিস গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড, ফিলিপাইনের মাস্টারপিস গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড, বেলজিয়ামের মাল্টিকম ও ইউরোপের আইএনইটেক এর মতো ১৪টি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি চুক্তিবদ্ধ হয়েছে।
চুক্তিবদ্ধ প্রত্যেকটি কোম্পানি নিজ দেশ ও বিদেশে কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে। জিবিএ’র সদস্য কোম্পানিগুলো ২৮টি ভাষায় পৃথিবীর নানা প্রান্তে কল সেন্টার ও ব্যাক অফিসের সার্ভিসের মাধ্যমে গ্রাহকদের সেবা দিবে। পৃথিবীর মোট ভাষার ৬০ ভাগ ভাষার মানুষ জিবিএ’র মাধ্যমে কল সেন্টার ও বিপিও সেবা পাবেন।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কোম্পানির সাথে যোগাযোগ করে তাদের চাহিদা ও ভাষা অনুযায়ী সদস্য কোম্পানিগুলো কাজের ব্যবস্থা করে দেবে জিবিএ কর্তৃপক্ষ। যার ফলে ভবিষ্যতে এই জোটের প্রতিনিধিত্বকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর মাধ্যমে পৃথিবীর যেকোনো দেশে বসেই বিপিও ও কল সেন্টারের সেবা নিতে পারবেন গ্রাহকরা এবং সেবা দিবেন বিপিও ও কল সেন্টার এজেন্টরা। জিবিএ’র সাথে যুক্ত হয়ে আন্তর্জাতিক পরিসরে পুনরায় কাজ করতে যাচ্ছে ফিফোটেক।
জিবিএ’র সদস্য হওয়ার ফলে কল সেন্টার ও বিপিও খাতে নতুন নতুন কাজের সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং এতে করে মানুষের কর্মসংস্থান হবে। ইতোপূর্বে আন্তর্জাতিক কোনো জোটের সাথে যুক্ত না থাকায় কলসেন্টার ও বিপিও খাতে কাজ পেতে বেগ পেতে হতো বাংলাদেশের কলসেন্টার ও আইসিটি খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোকে। কিন্তু জিবিএ’র সাথে চুক্তিবদ্ধ হওয়ার কারণে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে কাজের সুযোগ পাবে ফিফোটেক তথাপি বাংলাদেশের তরুণ-তরুণীরা।
এ সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানা যাবে জিবিএর কর্পোরেট ওয়েবসাইটের এই ঠিকানায়।