বুয়েট শিক্ষার্থী ফারহা বিনতে ফিরোজের জন্ম ঢাকায় । অন্য আট-দশজন শিক্ষার্থীর মতো ফারহারও স্বপ্ন বুয়েটে অধ্যায়ন করা। ছোট বেলা থেকে ভালো ছাত্রী হওয়ায় ব্যাক পেতে হয়নি স্বপ্ন পূরণে। লেখাপড়ার পাশাপাশি নিজের স্বতন্ত্র পরিচয় ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে প্রতিষ্ঠা করেছেন টেকআইবিডি নামে আইটি প্রতিষ্ঠান। দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠে লেখাপড়া করে শান্তি পাচ্ছে না কোন ভাবে। তাই ভিন্নভাবে জ্ঞান অর্জন করতে ও নিজেকে মেলে ধরতে লেখাপড়া শুরু করেন ফেসবুকে। ব্যতিক্রমধর্মী লেখাপড়ার উন্নতি নিয়ে কথা বলেছেন মোঃ দেলোয়ার হোসেন।
উচ্চমাধ্যমিকে পড়া অবস্থায় স্বপ্ন বুনি বুয়েটের। স্বপ্ন বাস্তবায়ন হলেও ভুগতে থাকি সিদ্ধান্তহীনতায়। বিভিন্ন রকম চিন্তা গ্রাস করে আমাকে। লকডাউন শুরু হলে বন্ধ হয় ক্যাম্পাস। বাসায় বসে অনলাইনে নিজেদের আপগ্রেড করতে বিভিন্ন রকম কোর্স শুরু করে সহপাঠীরা। তাদের দেখাদেখি আমিও শুরু করেছি কিন্তু পাচ্ছিনা শান্তি। ফেসবুকের স্ক্রল করে সন্ধান পাই ডিজিটাল স্কিলস ফর বাংলাদেশ (ডিএসবি) গ্রুপের। কয়েকটা পোস্ট পড়তেই ভালো লেগে যায় গ্রুপের পরিবেশ।তাই শুরু করে দেই নিজের সময় ব্যয় করা।
নিজের মতো করে গল্প লেখার মাধ্যমে শুরু হলো গ্রুপে সময় দেওয়া। মেম্বারদের মন্তব্য ও প্রশংসা গুলো আমাকে আরও বেশি উৎসাহিত করে। তাই গুরুত্ব দিলাম পোস্ট লেখায়। শুরুতে পরিচিতি আর ব্যবসার চিন্তা থাকলেও উপভোগ করতাম পোস্ট কমেন্ট লেখা। কাজ করতে গেলেও মাথায় ঘুরতো কি লিখবো পরের পোস্টে। কিছু দিন গল্প লেখার পর শুরু করলাম লোগো, ডোমেইন-হোস্টিং, ওয়েবসাইট, সাপ্লাই চেইন ইত্যাদি নিয়ে পড়াশোনা ও লেখালেখি। এভাবে পরিচিত হয়ে উঠি সাধারণ মেম্বার ও উদ্যোক্তাদের কাছে।
স্কুল কলেজে লেখাপড়া না করা ছিল আমাদের কাছে স্মার্টনেস। আর রাজিব আহমেদ স্যারের তৈরি করা এ গ্রুপে লেখাপড়া করাই স্মার্টনেস। গ্রুপের মুগ্ধকর পরিবেশ সবাইকে আগ্রহী করে লেখাপড়ায়। যারা বাংলা টাইপ করতে পারে না, নিজের মতো করে গুছিয়ে লিখতে পারে না। তারা পুরোদুমে চর্চা করে এখানে। এ গ্রুপে এতো এতো কনটেন্ট কেউ টানা ২ বছর সময় দিলেও পড়া শেষ হবে না। বিভিন্ন টপিকে পোস্ট থাকায় বিরক্তি আসে না লেখাপড়ায়। স্কুল কলেজেও দেখিনি লেখাপড়ার এমন পরিবেশ। দেশীয় পণ্য, জেলা ওয়েবসাইট, পডকাস্ট, কাস্টমার সার্ভিস, বেসিক কম্পিউটার, স্টার্টআপ, ওয়ার্ডপ্রেস সহ আইটির সবদিকে পোস্ট রয়েছে। শিক্ষার্থী, উদ্যোক্তা, চাকরিজিবি, গৃহীণী সহ সকল শ্রেণীর মানুষের প্রয়োজনীয় এ গ্রুপ।
স্যার গ্রুপ টি করেছেন দূর্বল ও পিছিয়ে পড়া মানুষের জন্য। তাই চ্যালেঞ্জ আবিষ্কার করেছেন প্রতিদিন ১০০ পোস্ট পড়ার। এর ফলে সকলের দ্রুত রিডিং পড়তে পারা, বুঝতে পারা, চিন্তা করা, সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং দ্রুত লেখার দক্ষতা বৃদ্ধি পায়। আমি ব্যক্তিগত ভাবে নিজের উন্নতি দেখতে পাচ্ছি। আগে বড় পোস্ট পড়তে বিরক্ত লাগতো। এখন আগ্রহের সাথে পড়ি। স্যার স্বপ্ন দেখেন সমস্ত বাঙালিরা একসময় লেখাপড়ায় আগ্রহী হবে এবং এগিয়ে নিবে দেশ কে। গ্রুপের সবচেয়ে বড় আকর্ষণ রাতের আড্ডা পোস্ট। নির্দিষ্ট বিষয় নির্বাচন করে সেই বিষয়ে সারাদিন পড়াশোনা করে রাতের নির্দিষ্ট সময়ে সকলে কমেন্ট করে। এতে অল্প সময়ে পর্যাপ্ত জ্ঞান অর্জন করা যায়। নিয়মিত চর্চার ফলে কয়েকদিনে টের পাওয়া যায় নিজের উন্নতি।
এ গ্রুপে চর্চা করতেছি প্রায় ৪ মাস ধরে। অনেক কিছু শিখেছি ও শিখছি। রাজীব স্যার কে অনেক ধন্যবাদ আমাদের কে বিনামূল্যে এত সুন্দর প্লাটফর্ম ও দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য। শেখার জন্য এতো মুগ্ধকর প্লাটফর্ম আর কোথাও আছে কিনা আমার জানা নাই।