কয়েক দশক ধরে প্রযুক্তি শিল্পের কেন্দ্রস্থল ছিল সিলিকন ভ্যালি। ১৯৩৮ সালে এই প্রযুক্তি হাবের প্রতিষ্ঠা, যখন বিল হিউলেট এবং ডেভিড প্যাকার্ড পাওলো অ্যাল্টোর একটি গ্যারেজে টুকটাক কাজ শুরু করেন। তাদের হাত ধরেই প্রতিষ্ঠিত হয় বিখ্যাত কম্পিউটার হার্ডওয়্যার কোম্পানি হিউল্যাপ-প্যাকার্ড বা সংক্ষেপে যেটি এইচপি নামেই সমধিক পরিচিত।
তবে সেই দিন সম্ভবত বদলাচ্ছে। এর সবচেয়ে প্রত্যক্ষ প্রমাণ হিসেবে বলা যায়, এই এইচপি কোম্পানির সিদ্ধান্তের কথা। এই প্রতিষ্ঠানেরই উত্তরাধিকারী হিউলেট প্যাকার্ড এন্টারপ্রাইজের (এইচপিই) সদর দফতর টেক্সাসে স্থানান্তরিত হচ্ছে।
সিলিকন ভ্যালির আরেক দীর্ঘদিনের জায়ান্ট ওরাকল গত শুক্রবার ঘোষণা দিয়েছে তারা এইচপির সঙ্গে যোগ দিচ্ছে। এ কোম্পানির সদরদফরত হবে অস্টিনে।
হাই প্রোফাইল প্রযুক্তি বিনিয়োগকারী এবং এক্সিকিউটিভদের একটি বড় দল সান ফ্রান্সিসকো ছেড়ে যাচ্ছেন। গত সপ্তাহে ইলন মাস্ক বলেছেন, এ বছরের শুরুর দিকে বেল এয়ারের বাড়ি বিক্রি করে দেয়ার পরই তিনি টেক্সাসে চলে গেছেন।
অবশ্য কভিড মহামারীর সময় এই জাতীয় পদক্ষেপগুলো প্রত্যাশিতই ছিল, যখন বহু মানুষ বাসায় থেকে কাজ করতে বাধ্য হয়েছেন। বেশ কয়েকটি প্রযুক্তি সংস্থা বলেছে, মহামারী শেষ হওয়ার পরেও তারা কিছু কর্মীকে স্থায়ীভাবে বাড়ি থেকে কাজ করার বিকল্প দেবে।
কিন্তু কর্পোরেট প্রতিষ্ঠানের সদর দফতর, সংস্থার প্রতিষ্ঠাতা এবং বড় ভেঞ্চার ক্যাপিটালগুলো যখন জায়গা বদল করে তখন সেটিকে প্রযুক্তি শিল্পের কর্পোরেট ডায়াস্পোরার ইঙ্গিত বলেই ধরে নেয়া যায়। অনেকে এটিকে সান ফ্রান্সিসকো উপসাগরীয় এলাকা থেকে একটি বৃহৎ ‘টেক এক্সোডাস’ বলে অভিহিত করছেন।
এরই মধ্যে সান ফ্রান্সিসকো ছেড়ে চলে যাওয়া কিছু লোক শহর ও ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের অব্যবস্থাপনার অভিযোগ করেছে। যদিও তারা সুনির্দিষ্টভাবে কোনো কিছুর উল্লেখ করছেন না। তবে ক্যালিফোর্নিয়া রাজ্য প্রশাসনের কভিড-১৯ সম্পর্কিত যেসব কঠোর বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল তা নিয়ে বিশেষ করে ইলন মাস্ক সমালোচনায় সরব ছিলেন। সে তুলনায় ফ্লোরিডা এবং টেক্সাসের স্বাস্থ্যবিধি অনেকটা শিথিল ছিল।
এছাড়া সিলিকন ভ্যালিতে আবাসন ও অফিসভবনের খরচও অনেক বেশি। বলতে ব্যয়বহুল রিয়েল এস্টেটের জন্য কুখ্যাতি রয়েছে এই প্রযুক্তি হাবের। সেই সঙ্গে ক্যালিফোর্নিয়ায় ব্যক্তি পর্যায়ে আয়কর বেশি। অন্যদিকে ফ্লোরিডা এবং টেক্সাসে এই কর দিতেই হয় না।
সূত্র: সিএনএন