মহান স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ৫০ টি বিশেষ গোষ্ঠীর মাঝে মহান মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার ইতিহাস পৌছে দিবে ‘ভলান্টিয়ার্স অপুরচুনিটি’ ও গল্প বলার প্লাটফর্ম ‘ক্রেয়নম্যাগ’। গত ২৭ মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবসের এক বিশেষ ওয়েবিনার অনুষ্ঠানের মধ্যদিয়ে আয়োজকরা তাদের এই ব্যতিক্রম কর্মযজ্ঞের সূচনা করেন। এই আয়োজন চলবে আগামী ৩১ মার্চ পর্যন্ত।
“৫০ এর চোখে স্বাধীনতা” শিরোনামে এই বিশেষ ক্যাম্পেইনটির উদ্বোধনী ওয়েবিনারে যুক্ত ছিলেন সংগীত শিল্পী ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব মেহের আফরোজ শাওন, অভিনেত্রী ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব আসনা হাবীব ভাবনা, টেকসই ফ্যাশন কর্মী ও শিল্পী ফাইজা আহমেদ এবং মাইক্রো মার্চেন্ট – বাজার বন্ধু এর প্রোজেক্ট লিড সারাহ জিতা। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালন করেন ক্রিমিনোলজি গবেষক সুমাইয়া ইকবাল। আগামী ২৮ মার্চ আরো একটি ওয়েবিনার ও মহান স্বাধীনতার মাসের শেষ দিন অর্থাৎ ৩১ মার্চ সমাপনী অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ক্যাম্পেইন্টি সমাপ্ত করবেন আয়োজকরা।
বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে এখনো রয়ে গেছে অসংখ্য গোষ্ঠী যাদের কেউ বাস করেন দুর্গম এলাকায়, কেউ বসবাস করেন উপকূলে, কেউ নিম্ন আয়ের, কোন কোন গোষ্ঠী রয়েছে ভাসমান, কেউবা যৌন কর্মী, কেউ বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষ এবং কেউ ক্ষুদ্র জাতিসত্তার, যাদের অনেকেই স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস, মুক্তিযুদ্ধের প্রক্ষাপট এবং মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে খুবই কম ধারনা রাখেন বা বাংলাদেশ বিনির্মাণের গল্প তাদের কাছে অস্পষ্ট। এরকম ৫০টি জনগোষ্ঠীর কাছে মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাসের গল্প সরাসরি বলবে ভলান্টিয়ার্স অপুরচুনিটির স্বেচ্ছাসেবকবৃন্দ সহ তাদের কমিউনিটি এঙ্গেজমেন্ট পার্টনার সবুজ খাম, রোটারেক্ট ক্লাব অব চিটাগং ওয়েলফেয়ার এবং সিআরডিডি।
“৫০ এর চোখে স্বাধীনতা” ক্যাম্পেইন্টির উদ্বোধনী ওয়েবিনারে ক্রেয়নম্যাগ এর প্রধান গল্প উপস্থাপক তানজিরাল দিলশাদ দিতান বলেন, “নানা ধরণের সামাজিক বৈষম্যের কারণে আমাদের পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠী আমাদের দেশ, ইতিহাস, ঐতিহ্য, গৌরবগাঁথা সম্পর্কে জানার সুযোগ পায়না। তাদের মাঝে আমাদের দেশের সঠিক ইতিহাস পৌঁছে দেয়া আমাদের সবার জন্যই একটি বড় দায়িত্ব এবং ক্রেয়নম্যাগ সবসময় তাদের সাথে থেকে তাদেরকে সমাজের মুল ধারায় নিয়ে আসার জন্য কাজ করেন যাবে।
৫০ এর চোখে স্বাধীনতা ক্যাম্পেইন্টির উদ্বোধনী ওয়েবিনারে ভলান্টিয়ার্স অপুরচুনিটির প্রতিষ্ঠাতা ও সিইও মিথুন দাস কাব্য বলেন, “বাংলাদেশের প্রান্তিক ও নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে স্বাধীনতার ৫০ বছরে এসে ৫০ টি কমিউনিউটিতে সবার সহযোগিতায় স্বাধীনতার গল্প বলার উদ্যোগ নিতে পেরে আমরা খুবই আনন্দিত। আমরা আশা করছি, গল্প বলার মাধ্যমে সমাজের কিছু মানুষের মাঝে হলেও দেশপ্রেম জাগ্রত করতে পারবো এবং তারাও একটা সময় সুন্দর বাংলাদেশ গড়তে অনেক অবদান রাখবে। আমরা চাই আমাদের এই গল্প একটা সময় পৃথিবীময় ছড়িয়ে যাক।’
বরিশাল, গাজীপুর এবং রংপুরের ভাসমান বেদের ৫ টি কমিউনিটি; ঢাকা, ময়মনসিংহ এলাকার নিম্ন শ্রেণীর মানুষের ১০ টি কমিউনিটি; বরিশালের উপকূলীয় এলাকার ক্ষতিগ্ৰস্থ মানুষের ৩ টি কমিউনিটি; রংপুর, দিনাজপুর, পঞ্চগড় এলাকার ৩ টি সাঁওতাল পল্লী; চট্টগ্রামের জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষজনের ৪ টি কমিউনিটি; বগুড়া, ঢাকা, শেরপুর, দিনাজপুরের ৫ টি প্রান্তিক জনগোষ্ঠী, ৪ টি অনাথ এবং ৫ টি হিন্দু কমিউনিটি; রংপুর এবং দিনাজপুরের ৩টি হরিজন কমিউনিটির বিভিন্ন মানুষের কাছে ভলান্টিয়াররা সরাসরি স্বাধীনতার গল্প বলেছেন এবং তাদের গল্প শুনেছেন। এছাড়াও ঢাকায় একটি ভাসমান সেক্স ওয়ারকার কমিউনিটি, একটি ট্রান্সজেন্ডার কমিউনিটি এবং দুইটি ভিন্নভাবে দক্ষ মানুষের মাঝে স্বাধীনতার গল্প বলা হবে ।
“৫০ এর চোখে স্বাধীনতা” ক্যাম্পেইনটির সাথে টাইটেল স্পন্সর হিসেবে রয়েছে এক শপ, পিআর পার্টনার হিসেবে রয়েছে ব্যাক পেইজ পিআর। এছাড়াও ডিজিটাল পার্টনার হিসেবেঃ ট্র্যাস বক্স ডিজিটাল, নলেজ পার্টনারঃ স্বয়ং এবং সবাক, প্রমোশন এবং আউটরিচ পার্টনারঃ বিইউপি ডেভেলপমেন্ট লিডারস ক্লাব, কান্ডারী এবং আরাধ্য ফাউন্ডেশন এবং ইউথ এঙ্গেজমেন্ট পার্টনার হিসেবে রয়েছে একটিভ বাংলাদেশ, ইয়ুথ মুভমেন্ট, উইথ সি, উইমেন ভিউ, অদম্য ১৯, এরাইস হেল্প ফর চাইল্ড, স্বাধীন বাংলা ফাউন্ডেশন এবং লাল সবুজ সোসাইটি।