‘ই-কমার্সের নৈরাজ্যের দায় ই-ক্যাব নেতাদেরও’ শিরোনামে গত ২৬ আগস্ট টেকজুমে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত সংবাদ প্রসঙ্গে প্রতিবাদ পাঠিয়েছে ই -কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব)। ই-ক্যাব-এর জেনারেল ম্যানেজার জাহাঙ্গীর আলম শোভন স্বাক্ষরিত প্রতিবাদটি হুবহু তুলে ধরা হল-
ই-ক্যাবকে জড়িয়ে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য সম্বলিত প্রেস রিলিজ এর প্রতিবাদ।
বাংলাদেশের ই-কমার্সের উন্নয়নে সংবাদ মাধ্যমের ভূমিকা অনস্বীকার্য। এজন্য ই-ক্যাবের পক্ষ থেকে সংবাদ কর্মীদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। বিগত ২৪ আগষ্ট বিভিন্ন অনলাইন সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশিত একটি সংবাদ ই-ক্যাবের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকায় সংবাদটি প্রেস রিলিজের বরাত দিয়ে ছাপা হলেও ‘‘প্রেস রিলিজ’’ আকারে না ছেপে ‘‘নিজস্ব প্রতিবেদক’’ ও ‘‘জৈষ্ঠ প্রতিবেদক’’ পর্যায়ে প্রতিবেদন বা সংবাদ আকারে ছাপা হয়েছে এবং ই-ক্যাবের কোনো বক্তব্য তুলে ধরা হয়নি।
বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন এর প্রেস রিলিজ এর বরাতে ‘ই-কমার্সের নৈরাজ্যের দায় ই-ক্যাব নেতাদেরও’ এধরনের কিছু শিরোনামে প্রেস রিলিজ এর বিষয়ে ই-ক্যাব নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছে।
প্রথমত: এতে বলা হয়েছে ‘আমরা বিভিন্ন মাধ্যমে জানতে পেরেছি ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো ইতোমধ্যে সরকারের কাছ থেকে প্রায় ৯০০ কোটি টাকা সহায়তা নিয়েছে।’ ‘‘বিভিন্ন মাধ্যম’’ কোনো নির্ভরযোগ্য সূত্র হতে পারেনা। তাছাড়া সরকার কেন বা কোন নিয়মে কোনো প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানকে ৯০০ কোটি টাকা দিবে? সরকার কোনো খাতের ব্যবসায়ীদের এতটাকা দিলে সেটা নিশ্চই গোপন থাকতনা।
যদি যাচাই বাছাই ব্যতিরেকে এ ধরনের তথ্য সংবাদ মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। তাহলে স্বার্থান্বেষী মহল গণমাধ্যমকে স্বীয় উদ্দেশ্য হাসিলের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে পারে। এ ব্যাপারে ই-ক্যাব সংবাদ মাধ্যমের কাছে দায়িত্বশীল আচরণ আশা করে।
দ্বিতীয়ত: ‘‘সংগঠনের সদস্যদের বিপুল পরিমাণ চাঁদা দিতে হয়’’। ‘‘বিপুল পরিমাণ’’ শব্দটা কোনো তথ্য্ হতে পারে না। ই-ক্যাবের ওয়েবসাইটে এর মেম্বারশিপ ফি উল্লেখ করা আছে। যে কেউ দেখে নিতে পারে। বর্তমানে ই-ক্যাবের সদস্য ফি কোনো আইটি এসোসিয়েশন এর চেয়ে অনেক কম। মানে যে তথ্য প্রেস রিলিজে লিখা হচ্ছে তা জানার কোনো প্রয়োজন সে ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান মনে করেনি।
২০১৮ সালে ডিজিটাল কমার্স পলিসিতে কারিগরি কমিটি গঠন, নির্দেশিকা তৈরী ও এসক্রো ব্যবস্থাসহ বিভিন্ন বিষয় প্রস্তাবনার মাধ্যমে ই-ক্যাবই যুক্ত করেছিল। গত বছর ই-ক্যাব একটি প্রতিষ্ঠান বিষয়ে তদন্ত সে প্রতিবেদন সরকারের বিভিন্ন দপ্তরকে প্রদান করেছে।
‘‘ডিজিটাল কমার্স পরিচালনা নির্দেশিকা-২০২১’’ চূড়ান্তকরণ ও বাস্তবায়নে সরকারকে সহযোগিতা করছে। এসক্রো সেবার দাবীও ই-ক্যাব উত্থাপন করেছে। ই-ক্যাব স্বপ্রনোদিত হয়ে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর থেকে তথ্য নিয়ে সেগুলো সমাধানের জন্য সদস্যদের ক্রমাগত নির্দেশনা দিয়ে থাকে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, প্রতিযোগিতা কমিশন, বাংলাদেশ ব্যাংকসহ সরকারী বিভিন্ন দপ্তরের সাথে সহযোগিতার ভিত্তিতে কাজ করছে ই-ক্যাব এবং সংশ্লিষ্ঠ এজেন্সিকে প্রয়োজনীয় তথ্য দিয়ে সহযোগিতা করছে। এ যাবত ১৬ টি প্রতিষ্ঠানের নামে অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত করে ৪টি প্রতিষ্ঠানের সদস্যপদ বাতিল করেছে এবং আরো ৯টি প্রতিষ্ঠান নিয়ে অধিকতর তদন্ত অব্যাহত রেখেছে।
একটি এসোসিয়েশন সাধারণত অন্যকোনো এসোসিয়েশন এর নামে অভিযোগ থাকলে সেটা চিঠি দেয় বা আলোচনায় বসে। ই-ক্যাবের দরজা সবার জন্য খোলা রয়েছে। তা না করে কেউ উদেশ্য প্রনোদিতভাবে ভূয়া তথ্য দিয়ে প্রেস রিলিজ পাঠানো কোনো পেশাদার এসোসিয়েশন এর কাজ হতে পারেনা। এ ধরনের তথ্যের কারণে কোনো অস্থিরতা দেখা দিলে তার দায় কে নিবে?
বিভ্রান্তিমূলক তথ্য থেকে কেবল নতুন সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে, সমাধান নয়। সমস্যা সমাধানে সম্মিলিত প্রচেষ্টা আমাদের পথ দেখাতে পারে। সংবাদ মাধ্যমের কাছে ই-ক্যাব এধরনের অনির্ভরযোগ্য ও ভুল তথ্য সংক্রান্ত প্রেস রিলিজ প্রকাশে সতর্কতা আশা করে। বর্তমান পরিস্থিতিতে সকলকে ক্রেতা, প্রকৃত ই-কমার্স উদ্যোক্তা ও ইন্ডাস্ট্রির পাশে থাকার আহবান জানাই।
টেকজুমের বক্তব্য:
‘ই-কমার্সের নৈরাজ্যের দায় ই-ক্যাব নেতাদেরও’ শিরোনামে প্রকাশিত টেকজুমে সংবাদটি ‘বাংলাদেশ মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন’ নামক একটি পরিচিত সংগঠনের পক্ষ থেকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তির বরাদ দিয়ে প্রতিবেদক সংবাদটি পরিবেশ করায় তা ”নিজস্ব প্রতিবেদক” এর নামে প্রকাশিত হয়েছে। অবশ্য এটি ডেস্ক রিপোর্ট বা টেকজুম ডেস্ক নামেও প্রকাশ করা যেত। এছাড়াও তথ্যগত বিষয়গুলো মুঠোফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের। ভবিষ্যতে এমন স্পর্শকাতর বিষয়ে তথ্য প্রদানে টেকজুম আরও সতর্ক থাকবে।