ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে ভারতের প্রায় ৮৫ শতাংশ শিশু কোনো না কোনোভাবে সাইবার বুলিংয়ের শিকার হয়েছে। পাশাপাশি তারা অন্যদেরও বুলি করেছে, যা আন্তর্জাতিক গড়ের চেয়ে দ্বিগুণেরও বেশি। সম্প্রতি কম্পিউটার নিরাপত্তা পরিষেবা প্রতিষ্ঠান ম্যাকাফি প্রকাশিত সাইবার বুলিং প্রতিবেদন সূত্রে এ তথ্য জানা গিয়েছে।
ম্যাকাফির বরাতে পিটিআইয়ে প্রকাশিত খবরে বলা হয়, সাইবার বুলিংয়ের মধ্যে বর্ণবাদ, ব্যঙ্গ করা, ব্যক্তিগত আক্রমণ, যৌন হয়রানিসহ অন্যান্য বিষয়ও ছিল। গত ১৫ জুন থেকে ৫ জুলাই পর্যন্ত বিশ্বের ১০টি দেশের ১১ হাজার ৬৮৭ জন অভিভাবক ও তাদের সন্তানদের ওপর জরিপটি চালায় ম্যাকাফি।
প্রতিবেদনে ম্যাকাফির প্রধান পণ্য কর্মকর্তা গগন সিং বলেন, ভারতে সাইবার বুলিংয়ের মাত্রা মারাত্মকভাবে বেড়েছে। প্রতি তিন শিশুর মধ্যে একজন ১০ বছর বয়সের আগেই বর্ণবাদ, যৌন হয়রানি, শারীরিক ক্ষতি সাধনের হুমকি পায়, যার ফলে বিশ্বে সাইবার বুলিংয়ের দিক থেকে ভারত শীর্ষে রয়েছে।
প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, ভারতের শিশুরা প্রায় প্রতিটি সামাজিক যোগাযোগ ও মেসেজিং প্লাটফর্মে সর্বোচ্চ পরিমাণ সাইবার বুলিংয়ের শিকার হয়। প্রতিবেদনে বলা হয়, ভারতের ৮৫ শতাংশ শিশু কোনো না কোনোভাবে সাইবার বুলিংয়ের শিকার হয়েছে এবং তারাও এ কাজে জড়িত ছিল। তবে বিশ্বের অন্যান্য দেশের শিশুদের পরিবর্তে ভারতে অপরিচিতদের মাধ্যমে সাইবার বুলিংয়ের শিকার হওয়ার মাত্রা বেশি, যার হার ভারতীয়দের ৭০ শতাংশ এবং পুরো বিশ্বে ৪৫ শতাংশ।
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, দেশটির প্রায় ৪৫ শতাংশ শিশু তাদের অভিভাবকদের বুলিংয়ের বিষয়ে কিছু জানায় না। মূলত কথোপকথনের ক্ষেত্রে অনুপস্থিতির কারণে এমনটি হয়। ভারতীয় অভিভাবকদের তথ্যানুযায়ী, ৪২ শতাংশ শিশুকে বর্ণবাদী বুলিংয়ের শিকার হতে হয়েছে, বিশ্বের মোট হারের তুলনায় যা ১৪ শতাংশ বেশি (২৮ শতাংশ)।
বর্ণবাদী আচরণ ছাড়া ব্যঙ্গ করার হার ৩৬ শতাংশ, ব্যক্তিগত আক্রমণ ২৯, যৌন হয়রানি ৩০, স্বশরীরে ক্ষতি করার হুমকি ২৮ এবং অন্যের ব্যক্তিগত তথ্য অসৎ উদ্দেশ্যে প্রচার করার হার ২৩ শতাংশ। এর সবই বৈশ্বিক গড়ের তুলনায় দ্বিগুণ। এগুলোর পাশাপাশি ভারতে ভুয়া গুজব ছড়ানো (৩৯ শতাংশ), কোনো গ্রুপ বা চ্যাট থেকে বের করে দেয়া (৩৫ শতাংশ) ও বিকৃত করে নাম ডাকার মতো ঘটনার প্রমাণও পেয়েছে।