ফেসবুকে ডাকা কাবাব ওয়েভে উদ্যোক্তাদের পরিচিতি, কাস্টমার, সেলস ও রিভিউ বেড়েছে। এতে যুক্ত হয়েছে অগণিত ফেসবুক ব্যবহারকারী ক্রেতা, বিক্রেতা ও শুভাকাঙ্ক্ষী। এর ফলে ওয়েভ চলাকালীন সময়ে ফেসবুকের বিভিন্ন গ্রুপে হয়েছে ব্যাপক প্রচারণা। এতে বেড়েছে উদ্যোক্তাদের আত্মবিশ্বাস।
এক দিনে ১ হাজার কাবাব বিক্রি হওয়ার ইচ্ছার কথা জানিয়ে ফেসবুক গ্রুপ টেস্টবিডিতে একটি পোস্ট (৩রা আগস্ট) দেন ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ই-ক্যাব) এর সাবেক ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি রাজিব আহমেদ। সেই পোস্ট থেকেই মূলত কাবাব ওয়েভের সূচনা। তা টেস্টবিডি থেকে ছড়িয়ে পড়ে দেশি পণ্যের গ্রুপ ও উদ্যোক্তাদের ফেসবুক প্রোফাইলে। এই ওয়েভ স্থায়ী হয় ৫ দিন। এতে বিক্রি হয় ২১ হাজারের বেশি কাবাব। ওয়েভে যুক্ত হওয়া কয়েকজন উদ্যোক্তার সাথে কথা বলছেন, টেকজুম প্রতিবেদক মো: দেলোয়ার হোসেন।
সৈয়দা ক্যামেলিয়া রহমান কাজ করেন হোম মেড খাবার নিয়ে। তার উদ্যোগের নাম সহজসাধ্য। কাবাব ওয়েভে তিনি পেয়েছে ১১২ জন কাস্টমার থেকে ১৪শ এর বেশি কাবাবের অর্ডার। সাথে পেয়েছেন অন্যান্য খাবারের অর্ডার। এই ওয়েভ ছিল ক্যামেলিয়ার উদ্যোক্তা জীবনের প্রথম অভিজ্ঞতা। তিনি বলেন, ”ফেসবুকে ক্রেতাদের আন্তরিক রিভিউ আসতে শুরু করছে। তা থেকেও আসছে নতুন অর্ডার।” ঢাকা ও ঢাকার বাহিরে ১০টি জেলা থেকে তিনি পেয়েছেন অর্ডার। সেই সাথে পেয়েছেন গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানে কাবাব পরিবেশনের জন্য নিউইয়র্ক প্রবাসী কাস্টমার।
ঝটপট খাবার-এর স্বত্বাধিকারী আইনুন নাহার চৌধুরী কাবাব ওয়েভ নিয়ে বলেন, ”এই প্রথম এমন ওয়েভে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছি। ৫ দিনে ৬০০-এর বেশি কাবাব বিক্রি করেছি এবং অন্য উদ্যোক্তাদের থেকে অর্ডারও করেছি। যা সত্যিই বিস্ময়কর এবং আনন্দের বিষয়।” তিনি আরও বলেন, “কাবাবের পাশাপাশি অন্যান্য খাবার ও আচারের অর্ডার এসেছে। ওয়েভের ৫ দিনে প্রায় ৬০ হাজার টাকা বিক্রি হয়েছে। ওয়েভ শেষ মানেই যে বিক্রি শেষ তা নয়, কাবাবের অর্ডার আসছে প্রতিদিন।”
হোম মেড উদ্যোক্তা কহিনুর তানিয়ার উদ্যোগের নাম ড্রেস এন্ড ফুড। তিনি অনলাইনে কাজ করছেন দেশি পিঠা, আচার ও ফ্রোজেন খাবার নিয়ে। কাবাব ওয়েভে তিনি ৬০ জন ক্রেতার কাছে বিক্রি করেছেন প্রায় ৮শ কাবাব। ওয়েভের অভিজ্ঞতা জানতে চাইলে তানিয়া বলেন, ”ওয়েভ থেকে আমার অভিজ্ঞতা হলো- এক হয়ে কাজ করলে সেটার সুফল সবাই ভোগ করে। এক সাথে এত কাস্টমার রেস্পন্স পাওয়ার কারণে নিজের দক্ষতা যাচাই করার সাথে অর্জন করেছি অনেক অভিজ্ঞতা “
পুরান ঢাকার উদ্যোক্তা এসএএম দিলরুবা আলম নিপা। কাজ করেন হোম মেড খাবার নিয়ে। নিপার উদ্যোগের নাম বিশুদ্ধতায় তৃপ্তি। তিনি বলেন, ”সবাই নিজ নিজ পরিচিত বা পছন্দের উদ্যোক্তার থেকে কাবাব কিনেছে। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ক্রেতারা কাবাব কিনে উপহার দিয়েছে ঢাকায় থাকা আত্মীয়দের।” তিনি আরও বলেন, ”আমি কেনাকাটা করেছি অন্য উদ্যোক্তাদের থেকেও। কারণ এটি ছিল অভিজ্ঞতা অর্জনের দারুণ সুযোগ।”
কাবাব ওয়েভকে একটি অবিস্মরণীয় ঘটনা হিসেবে দেখছেন পাম্মীর রান্নার হাতেখড়ি-এর উদ্যোক্তা শাম্মি আক্তার পাম্মি। তিনি কেবল ১৪ ঘণ্টায় পেয়েছেন ৫৬ জন কাস্টমার। এদের বেশিভাগ নতুন কাস্টমার। এতে তার বিক্রি হয়েছে ৮০০ এর বেশি কাবাব।