জাপানের ইয়োকোহামায় নতুন চিপ উন্নয়ন কেন্দ্রে ২২ কোটি ২০ লাখ ডলার ব্যয় করবে স্যামসাং ইলেকট্রনিকস। এ পদক্ষেপের মাধ্যমে বিশ্বের অন্যতম উন্নত দুটি চিপ উৎপাদনকারী দেশ জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যকার সহযোগিতাকে ত্বরান্বিত করবে।
বিনিয়োগের বিষয়ে প্রথম প্রতিবেদন প্রকাশ করে নিকেই এশিয়া। বিনিয়োগের মাধ্যমে দুটি দেশের দক্ষতা কাজে লাগানো হবে। এর মধ্যে স্যামসাং বিশ্বের সবচেয়ে বড় মেমোরি চিপ উৎপাদনকারী এবং জাপান চিপ তৈরিতে ব্যবহৃত যন্ত্রাংশ তৈরি করে থাকে। যার মধ্যে ওয়াফার ও চিপ তৈরিতে ব্যবহৃত অন্যান্য উপকরণ রয়েছে।
শহরটিতে আলাদাভাবে নতুন এ চিপ উন্নয়ন কেন্দ্র স্থাপন করা হবে। তবে এটি নিয়ে এখনো ধোঁয়াশা রয়েছে। কেননা আনুষ্ঠানিকভাবে এখনো বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি। নিকেইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, দক্ষিণ কোরিয়ার প্রযুক্তি জায়ান্টটি প্রটোটাইপ চিপ ডিভাইসের জন্য উৎপাদন ক্ষেত্র তৈরি করতে চায়।
নতুন কারখানায় কয়েকশ মানুষের প্রত্যক্ষ কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে এবং ২০২৫ সাল নাগাদ এর কার্যক্রম শুরু হবে। মজার বিষয় হলো, স্যামসাং সেমিকন্ডাক্টরে বিনিয়োগের জন্য জাপান সরকারের দেয়া ভর্তুকি ব্যবহার করতে চাইছে। প্রযুক্তিবিদ ও বিশ্লেষকদের অভিমত, কৌশলী এ পদক্ষেপের মাধ্যমে স্যামসাং ইলেকট্রনিকস দুটি দেশের মধ্যে বিদ্যমান শক্তিশালী সম্পর্ককে আরো জোরদার করবে। বিনিয়োগের মাধ্যমে স্যামসাং যে শুধু এ অঞ্চলে এর পরিধি বাড়াবে তা নয়, পাশাপাশি বৈশ্বিক সেমিকন্ডাক্টর উৎপাদন খাতের উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের বিষয়টিকেও নিশ্চিত করে।
অন্যান্য পুনরুদ্ধারের প্রচেষ্টার মধ্যে, ঐতিহাসিক ইস্যুতে কূটনৈতিক দ্বন্দ্বের কারণে তিন বছরের বাণিজ্য বিরোধ তৈরি হয়েছিল। সেটি শেষে দক্ষিণ কোরিয়া আনুষ্ঠানিকভাবে জাপানকে তার পছন্দের বাণিজ্য অংশীদারদের তালিকায় যুক্ত করেছে।
আলজাজিরা প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপানি কারখানায় কাজ করতে বাধ্য করা দক্ষিণ কোরিয়ানদের ক্ষতিপূরণসংক্রান্ত বিরোধ সমাধানে গত বছর একটি চুক্তি হয়েছে। এর পরই নতুন এ পদক্ষেপ নেয়া হলো। এ সিদ্ধান্তের অর্থ হলো এখন থেকে দক্ষিণ কোরিয়ায় রফতানির ক্ষেত্রে জাপান কম শুল্ক উপভোগ করবে। তবে সিউল স্পষ্ট করে জানিয়েছে, এটি জাপানের বাণিজ্য অনুশীলনগুলো নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ এবং প্রয়োজনে আরো পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।
দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট ইউন সুক ইওল এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদার অধীনে একটি নতুন সমঝোতার পর বিনিয়োগটি একটি প্রতীকী পদক্ষেপ হবে বলে আশা করছে সংশ্লিষ্টরা। আগামী সপ্তাহে হিরোশিমায় গ্রুপ অব সেভেনের সম্মেলনের মাঝে দুই নেতার সাক্ষাতের কথা রয়েছে।