আন্তর্জাতিক পর্যায়ে গেমিং এখন আয়ের অন্যতম খাত। যেকোনো দেশের অর্থনীতিতে গেমিং বড় অবদান রাখছে। সে হিসেবে চলতি বছর মোবাইল গেমিং সবচেয়ে লাভজনক অবস্থায় থাকবে। সম্প্রতি এক গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে।
২০২৩ সালে মোবাইল গেমিং খাতে ব্যয় ১০ হাজার ৮০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে। মার্কেট ইন্টেলিজেন্স প্লাটফর্ম ডাটা ডট এআই (সাবেক অ্যাপ অ্যানি) ও ইন্টারন্যাশনাল ডাটা করপোরেশন (আইডিসি) প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। তথ্যানুযায়ী, ২০২২ সালে এ খাতে যে ব্যয় হয়েছিল তার তুলনায় চলতি বছরের পূর্বাভাস ২ শতাংশ কম। তবে এ খাতের একটি বড় অংশ এখনো মোবাইলের নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে এবং গেমার ও ডেভেলপারদের জন্য সবচেয়ে বেশি সুবিধা দিচ্ছে।
গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, মাইক্রোসফটের এক্সবক্স সিরিজ এক্স/এস ও সনির প্লেস্টেশন ৫-এর জনপ্রিয়তা বাড়ায় হোম কনসোলের জন্য গ্রাহক ব্যয় বাড়বে। চলতি বছর ব্যয়ের হার ৩ শতাংশ বেড়ে ৪ হাজার ৩০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে। অন্যদিকে উইন্ডোজ কম্পিউটার ও অ্যাপলের ম্যাকবুকে ভোক্তা ব্যয় ৪ শতাংশ বেড়ে ৪ হাজার কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে। প্রতিবেদন সূত্রে, হ্যান্ডহেল্ড ডিভাইসে ব্যয় নতুন মোড় নিতে পারে। আগের বছরের তুলনায় যা ২০ শতাংশ বা ৩০০ কোটি ডলার কমতে পারে। মূলত নিনতেনদো সুইচ লাইঠ ক্রয়ে ব্যবহারকারীদের আগ্রহ কমে যাওয়া মূল কারণ।
গবেষণায় বলা হয়, গেমিংয়ে ভোক্তাদের সরাসরি ব্যয় কমলেও এ খাতে মোবাইল এখন পর্যন্ত ভালো অবস্থানে রয়েছে। দ্রুত পরিবর্তনশীল বাজারে চাহিদার সঙ্গে টিকে থাকাই বড় চ্যালেঞ্জ। ২০২০ সালের কভিড-১৯ মহামারী সময়ের পর থেকে বৈশ্বিকভাবে গেমিংকে বড় ব্যবসা হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। নতুন প্রযুক্তির কারণে একই সঙ্গে বড় পরিসরে দর্শকের কাছে পৌঁছানো যাচ্ছে এবং গ্রাহকের হিদাও পূরণ করা যাচ্ছে।
২০২৬ সাল নাগাদ বৈশ্বিক গেমিং বাজারের মুনাফা ২১ হাজার ২৪০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছেন বিশ্লেষকরা, যা ২০২৩ সালের তুলনায় ১৩ শতাংশ বেশি। আর এ খাতের নেতৃত্ব দেবে মোবাইল প্লাটফর্ম। আগস্টে বাজার আপডেট প্রতিবেদন প্রকাশের সময় নিউজু এ কথা জানিয়েছে।
সাম্প্রতিক এক গবেষণায় বোস্টন কনসাল্টিং গ্রুপ জানায়, গেমিং খাতের নেতৃত্ব দেবে মোবাইল প্লাটফর্ম। বিশেষ করে স্মার্টফোন ব্যবহার বৃদ্ধি ও মোবাইল কম্পিউটিংয়ের সক্ষমতা বাড়ায় বাজারে এ পরিবর্তন দেখা যাবে। অন্যদিকে গেমিং খাতের আয় গেমারদের সংখ্যার মাধ্যমেও প্রভাবিত হবে। বছরওয়ারি হিসেবে ২০২৩ সালে গেমারদের সংখ্যা ৬ দশমিক ৩ শতাংশ বেড়ে ৩৩৮ কোটি ছাড়িয়ে যাবে বলে জানিয়েছে নিউজু।
ডাটা ডট এআই ও আইডিসির প্রতিবেদনে বলা হয়, মোবাইল গেমাররা বৈচিত্র্যময় ও চাহিদাপূর্ণ। নতুন ফিচার ও মুনাফা অর্জনের পদ্ধতি সক্রিয় ব্যবহারকারী বা গেমারদের ধরে রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ। বর্তমানে ক্লাউড গেমিংও জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। চলতি বছর স্মার্টফোন ও ট্যাবলেটে ক্লাউড গেমিংয়ে ব্যয় করা সময়ের পরিমাণ ২৬ শতাংশ বাড়ার পূর্বাভাসও দেয়া হয়েছে।
গবেষণার তথ্যানুযায়ী, মোবাইল গেমিং খাতে চলতি বছর এশিয়া-প্যাসিফিক অঞ্চল ভালো প্রবৃদ্ধিতে রয়েছে। আর এ খাতে বিশ্বজুড়ে নেতৃত্ব দিচ্ছে ব্রাজিল, তুরস্ক ও মেক্সিকো। প্রবৃদ্ধিতে থাকলেও মোবাইল গেমিং খাতে বিভিন্ন সমস্যাও রয়েছে, যা ভবিষ্যতে আয়ে প্রভাব বিস্তার করবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।