মাতৃত্ব আর নির্ঘুম রাত যেকোনো নারীর জীবনে এক অনিবার্য অনুষঙ্গ! বিশেষ করে সন্তান জন্মের পর থেকে কয়েক বছর ঘুমে অতৃপ্তি নিয়েই কেটে যায়। জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জাকারবার্গের স্ত্রী প্রিসিলা চ্যানও এখন সে সময়টা পার করছেন। এ কঠিন পরিস্থিতিতে তার পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন স্বয়ং জাকারবার্গ। স্ত্রীর জন্য বিশেষ ধরনের ‘ঘুমের বাক্স’ বানিয়েছেন তিনি। শিয়রে টেবিলের ওপর রাখা এ বাক্স প্রিসিলাকে নিশ্চিন্ত ঘুমের নিশ্চয়তা দিচ্ছে বলে এক পোস্টে জানিয়েছেন ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা।
গত রোববার ইনস্টাগ্রামে নিজের অফিশিয়াল অ্যাকাউন্টে এক পোস্টে জাকারবার্গ লেখেন, মা হওয়া খুবই কঠিন বিষয়। যখন আমাদের সন্তান পৃথিবীতে এল, তখন থেকেই প্রিসিলার রাতে ঘুমানো প্রায় অসম্ভব হয়ে উঠল। রাতে সে বারবার জেগে উঠত, আর বাচ্চাদের জাগার সময় হয়েছে কিনা, বুঝতে বারবার সেলফোন চেক করত। সময়মতো ঘুম থেকে জাগতে পারবে কিনা, এ উদ্বেগ তাকে তাড়া করে বেড়াত। ফলে কোনো রাতেই ঠিকমতো ঘুমাতে পারত না।
দুই শিশুকন্যা নিয়ে স্ত্রীর এ নিদ্রা সংকট বেশ ভাবিয়ে তোলে জাকারবার্গকে। প্রিসিলা কীভাবে নিশ্চিন্তে আরেকটু বেশি সময় ঘুমাতে পারে, তা নিয়ে ভাবতে শুরু করেন। নিজের প্রকৌশল জ্ঞান থাকায় ঠিকই বের করে ফেলেন একটি সহজ সমাধান। বানিয়ে ফেলেন একটি বাক্স। এর নাম দিয়েছেন তিনি ‘স্লিপ বক্স’ বা ঘুমের বাক্স!
এ নাম শুনে মনে হতে পারে বুঝি প্রিসিলা এ বাক্সের ভেতর ঢুকে ঘুমাবেন। আসলে তা না, জাকারবার্গ এ যন্ত্রটি প্রিসিলার শিয়রে থাকা টেবিলের ওপর রাখেন। সকাল ৬টা থেকে ৭টা পর্যন্ত ডিভাইসটি থেকে খুব ক্ষীণ আলো বের হয়। এ বাক্সে সময় দেখার কোনো ব্যবস্থা নেই। ঘুম থেকে জেগে এ আলো দেখলে প্রিসিলা বুঝতে পারেন তার এখন বিছানা ছাড়ার সময় হয়ে গেছে। আর ঘুম ভেঙে যদি দেখেন আলো জ্বলছে না, তাহলে আবার নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পড়তে পারেন। ফলে এখন আর মাঝরাতে ঘুম ভেঙে গেলে সেলফোনে সময় দেখার প্রয়োজন পড়ে না।
জাকারবার্গ বলেন, একজন প্রকৌশলী হিসেবে আমার সঙ্গীকে তৃপ্তিসহকারে ঘুমানোর সুযোগ করে দেয়ার এটি সেরা সুযোগ বলে আমি মনে করি। যার মাধ্যমে আমার ভালোবাসা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে পেরেছি।
জাকারবার্গের এ উদ্ভাবনকে স্বাগত জানিয়েছেন ইউনিভার্সিটি অব মিশিগানের স্লিপ মেডিসিন প্রোগ্রামের ক্লিনিক্যাল চিকিৎসক ডা. ডিয়েরড্রে কনরয়। তিনি বলেন, যাদের ঘুমের সমস্যা রয়েছে, তারা রাতভর সেলফোন চেক করেন। ঘুম ভেঙে বারবার সেলফোনের স্ক্রিন জ্বালিয়ে সময় দেখতে হলে মানসিক চাপ সৃষ্টি হয়। এতে ঘুমের সমস্যা আরো বেড়ে যায়। এ কারণে জাকারবার্গের আইডিয়াটি চমত্কার!