প্রযুক্তি খাতে চীনের আধিপত্য রোধে দীর্ঘদিন থেকেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র। এর অংশ হিসেবে দেশটিতে চিপ তৈরির সরঞ্জাম রফতানিতে আরো বিধিনিষেধ আরোপ করতে যাচ্ছে ওয়াশিংটন। এ নিয়ে আলোচনা বর্তমানে চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। এমনটি জানিয়েছেন প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা।
বিশ্বজুড়ে চিপ তৈরির উপকরণের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে যুক্তরাষ্ট্র, নেদারল্যান্ডস ও জাপান। চলতি বছরের শুরুর দিকে দেশ তিনটি চীনের কাছে এসব উপকরণ রফতানি সীমিত করতে একযোগে কাজ করার সিদ্ধান্ত নেয়। তবে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে বিদেশী প্রযুক্তিনির্ভরতা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করছে বেইজিং। দেশীয় কোম্পানিগুলোকে স্থানীয় সফটওয়্যার ব্যবহারে উৎসাহিত করা হচ্ছে। গুরুত্ব দেয়া হচ্ছে দেশেই চিপ উৎপাদনের ওপর।
রয়টার্স জানিয়েছে, মার্কিন কর্মকর্তারা চীনে সেমিকন্ডাক্টর সরঞ্জাম ও উন্নত এআই চিপের চালান সীমাবদ্ধ করার বিষয়টি চলতি মাসেই আপডেট করবে। এ নিয়ে বেইজিংকে আগেই সতর্ক করছে তারা।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে বরাতে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, নতুন আপডেটে বিধিনিষেধ যুক্ত করা হবে। একই সঙ্গে আগের বিধিনিষেধগুলোতে যেসব ফাঁকফোকর ছিল সেগুলোও বন্ধ করা হবে। যুক্তরাষ্ট্র প্রথম এ ধরনের নিষেধাজ্ঞা জারি করে ২০২২ সালের ৭ অক্টোবর। এটিকে কেন্দ্র করে ওয়াশিংটনের ওপর ক্ষুব্ধ হয় বেইজিং। এতে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আরো অবনতিশীল হয়ে পড়ে।
যুক্তরাষ্ট্রের অফিস অব ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড বাজেটের (ওএমবি) ওয়েবসাইটে গত বুধবার নতুন একটি পোস্ট করা হয়েছে। এটির শিরোনাম দেয়া হয়েছে, ‘সেমিকন্ডাক্টর ম্যানুফ্যাকচারিং সামগ্রীর রফতানি নিয়ন্ত্রণ ও সত্তা তালিকা পরিবর্তন’। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত একজন জানিয়েছেন, ওই পোস্টটি চীনে চিপ তৈরির সরঞ্জাম পাঠানোর ওপর প্রত্যাশিত বিধিনিষেধের সঙ্গে সম্পর্কিত।
সাবেক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রফতানি নিয়ন্ত্রণসংক্রান্ত নিয়মগুলো সাধারণত ওএমবি পোস্ট করে। এর আগে বিষয়বস্তু নিয়ে স্টেট, প্রতিরক্ষা, বাণিজ্য ও জ্বালানি বিভাগের মধ্যে চুক্তি সম্পন্ন করতে হয়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার জন্য ব্যবহৃত হাইএন্ড চিপ রফতানির ওপর বিধিনিষেধ আপডেট করার শঙ্কা আগে থেকেই ছিল। যদিও বাইডেন প্রশাসনের তরফে এখনো আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি।
এর আগে ফেন্টানাইল উৎপাদনে রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহারের অভিযোগে চীনের ২৫ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ওপর বিধিনিষেধ আরোপের ঘোষণা দেয় যুক্তরাষ্ট্র। এর মধ্যে ১২টি কোম্পানি এবং ১৩ জন ব্যক্তি রয়েছেন। বিধিনিষেধ দেয়ার ক্ষেত্রে চীনও পিছিয়ে নেই। সম্প্রতি দেশটি সরকারের বিভিন্ন সংস্থার কর্মকর্তাদের মার্কিন কোম্পানি অ্যাপলের আইফোন ও অন্যান্য বিদেশী ব্র্যান্ডের মোবাইল ফোন সেট ব্যবহার না করার নির্দেশ দিয়েছে।