মেক্সিকোর কংগ্রেসে প্রদর্শন করা আলোড়ন সৃষ্টিকারী ‘এলিয়েনের দুটো মমি’ ঘিরে নতুন করে আবারও রহস্য দেখা দিয়েছে। এবার রহস্য শুরু হয়েছে এর ডিএনএ নিয়ে। ল্যাবে গবেষণার পর বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব কঙ্কালের ৩০ শতাংশ ডিএনও কোনো প্রাণীর সঙ্গে মিলছে না। এগুলো একদম স্বতন্ত্র।
ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম ইনডিপেনডেন্ট বলছে, সম্প্রতি ওই কঙ্কালের ডিএনএ বিশ্লেষণ করে দেখা হয়েছে। তাতে পাওয়া গিয়েছে ৩০ শতাংশ অজানা জিনের হদিস। এই অজানা অংশটির সঙ্গে আদতে কোনো জীবেরই মিল নেই বলে জানান গবেষকেরা।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম হিন্দুস্তান টাইমস বলছে, পৃথিবীতে যত রকমের প্রজাতি রয়েছে, তাদের সকলের জিনের একটি ডেটাবেস রয়েছে বিজ্ঞানীদের কাছে। কিন্তু কারোর ডিএনএর সঙ্গে মিল পাওয়া যায়নি এই অংশটুকুর। এবার তাই নতুন করে আলোচনার কেন্দ্রে উঠে এসেছে এই কঙ্কাল।
আবার প্রশ্ন এসেছে, এসব কঙ্কাল কি পৃথিবীর বাইরের কোনো প্রাণীর? এখানে আরেকটি মজার বিষয় রয়েছে, বাকি ৭০ শতাংশ ডিএনএর সঙ্গে যেসব প্রজাতির মিল রয়েছে, তা এখনো জানাননি বিজ্ঞানীরা। কোনো এক বিশেষ কারণে এই তথ্য গোপন রেখেছেন।
এ ব্যাপারে এবার সাংবাদিক জেমি মসান বলেন, ‘ভিনগ্রহের প্রাণী নিয়ে এর আগে এত স্পষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। ডিএনএ টেস্টও কিন্তু সে কথাই বলছে। এই সত্যটা আমাদের মেনে নিতেই হবে।’
পেরু থেকে পাওয়া এই মমি নিয়ে শুনানি করতে কয়েকদিন আগেই আবারও গবেষকেরা হাজির হন মেক্সিকো কংগ্রেসে। গবেষকেরা জানান, তিন আঙুলের মমি দুটোতে কোনো ‘ভেজাল’ নেই, এগুলো ‘প্রমাণিত’। তবে এরা এলিয়েন কি না—তা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।
এর আগে গত সেপ্টেম্বরে অদ্ভুত দুটো মমি পাওয়ার দাবি করা হয় মেক্সিকোর কংগ্রেসে। তাতে বলা হয়, মমি দুটো এক হাজার বছর আগেকার। এগুলো মানুষের নয় বলে দাবি করেন গবেষকেরা। এলিয়েন নিয়ে গবেষণা চালানো মেক্সিকোর প্রখ্যাত সাংবাদিক জেমি মসান ওই অদ্ভূতাকার দুটো মমি সকলের সামনে এনেছেন।
সাংবাদিক জেমি মসান জানান, এগুলো এক সময় জীবিত ছিল। কেউ এদের বানিয়ে যায়নি। মমি করা হয়েছিল। বেশ কয়েকটি এক্স–রে প্রতিবেদন দেখান তিনি। এরা মানুষ ছিল না বলেও দাবি করেন। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিল একটি মেডিকেল টিম।
এলিয়েন নিয়ে জল্পনা-কল্পনার শেষ নেই। তাদের অস্তিত্ব থাকা না থাকার পক্ষে-বিপক্ষে মতামত বেশ জোরালো। এর মধ্যে এলিয়েনের মমি প্রদর্শন করে মেক্সিকো। যারা বিশ্বাস করেন, পৃথিবীতে এলিয়েনরা এসেছিল, তাদের জন্য বিষয়টি বেশ মজার ও স্বস্তির। মানুষের মতো কিন্তু ভিন্ন অবয়বের দুইটি মমি সবার সামনে উন্মোচন করেছে মেক্সিকো।
মেক্সিকো কংগ্রেসের একটি পাবলিক শুনানির সময় ওই মমি দুইটিকে সবার সামনে উন্মোচন করা হয়। ওই দৃশ্যটি অনলাইনে সরাসরি দেখানোও হয়। ‘ইউএফও (আনআইডেন্টিফাইড ফ্লাইং অবজেক্টস) ও অজানা অস্বাভাবিক ঘটনা’ দেখানোর পর দুটি ‘এলিয়েনের মমি’ উন্মোচন করা হয়। দুইটি বক্সের মধ্যে রেখে সবার জন্য উন্মোচন করা হয়।
সেখানে সবার সামনে যে দুটো মমি তুলে ধরা হয়েছিল, তা অনেকটা আমাদের মনে এলিয়েনের যে কাল্পনিক চেহারার রয়েছে তার সঙ্গে মিলে যাচ্ছে হুবহু। তবে আকারে মাত্র কয়েক সেন্টিমিটার। বিষয়টি সামনে আসতেই নেট দুনিয়ায় ছড়িয়ে পড়ে।
পেরু থেকে উদ্ধার করে আনা হয় মমি দুটি। ওই প্রদর্শনীর সময় উপস্থিত ছিলেন দেশটির বিজ্ঞানী, আমেরিকান্স ফর সেফ এয়ারস্পেসের এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর রায়ান গ্রেভস, আমেরিকার নৌবাহিনীর প্রাক্তন এক পাইলটও।
বক্স খোলার সময় উপস্থিত ও মেক্সিকানরা হতবাক হয়ে তাকিয়েছিল। উপস্থিত বিশেষজ্ঞরা একমত যে মমি দুইটি আমাদের বিবর্তনের অংশ নয়। এগুলো এমন প্রাণী নয় যেগুলি ইউএফও ধ্বংসাবশেষের পরে পাওয়া গিয়েছিল। এগুলো একটি খনিতে পাওয়া গিয়েছিল এবং পরে জীবাশ্মে পরিণত হয়।
ওই এলিয়েন দুইটির দেহে তিনটি করে আঙ্গুল এবং হাত ও পা রয়েছে বলে জানায় ইউএফও বিশেষজ্ঞরা।