আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক সংসদ সদস্য এইচ বি এম ইকবাল দীর্ঘদিন প্রিমিয়ার ব্যাংকের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেছেন। তার প্রভাব কাজে লাগিয়ে সম্প্রতি তিনি নিয়ম বহির্ভূতভাবে নিজ ব্যাংক হিসাব থেকে বিপুল অঙ্কের অর্থ উত্তোলন করেন। এ ঘটনায় অর্থ উত্তোলনে অবৈধ সুবিধা প্রদান করার দায়ে বাংলাদেশ ব্যাংক প্রিমিয়ার ব্যাংককে জরিমানা করেছে।
জানা গেছে, বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) গত বছরের নভেম্বরে এইচ বি এম ইকবাল ও তার পরিবারের সদস্যদের এবং তাদের মালিকানাধীন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের লেনদেন স্থগিত করেছিল। স্থগিত ব্যাংক হিসাব থেকে কোনো ধরনের অর্থ উত্তোলন করার সুযোগ নেই। তারপরও অবৈধভাবে ওই হিসাব থেকে প্রায় এক কোটি ১১ লাখ টাকা এবং ৩০ হাজার মার্কিন ডলার উত্তোলন করেছেন তিনি।
এ ঘটনায় প্রিমিয়ার ব্যাংককে অর্থ পাচার প্রতিরোধ আইন, ২৩(৬) ধারা অনুযায়ী জরিমানা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। আইনের ওই ধারায় বলা হয়েছে, কোনো হিসাব জব্দ বা স্থগিত করার পর ব্যাংক যদি সেই নিষেধাজ্ঞা মানতে ব্যর্থ হয়, তাহলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে সমপরিমাণ জরিমানা দিতে হবে। তাই, এইচ বি এম ইকবাল যেসব অর্থ উত্তোলন করেছেন, সেই পরিমাণ অর্থ জরিমানা হিসেবে প্রিমিয়ার ব্যাংককে দিতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে বিএফআইইউ’র শীর্ষস্থানীয় এক কর্মকর্তা জানান, এ বিষয়ে আজই চিঠির মাধ্যমে প্রিমিয়ার ব্যাংককে জানানো হয়েছে। তবে প্রিমিয়ার ব্যাংকের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এইচ বি এম ইকবাল প্রিমিয়ার ব্যাংকের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান। ১৯৯৯ সাল থেকে তিনি ব্যাংকের চেয়ারম্যান পদে দায়িত্ব পালন করে আসছিলেন। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর তিনি ব্যাংকের চেয়ারম্যানের পদ ছেড়ে দেন। তবে ব্যাংকটি এখনো তার নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। ব্যাংকটির বর্তমান চেয়ারম্যান তার ছেলে ইমরান ইকবাল।
জানা যায়, গত বছরের নভেম্বরে এইচ বি এম ইকবাল, তার দুই স্ত্রী ও সন্তান এবং তাদের মালিকানাধীন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবের লেনদেন স্থগিত করে বিএফআইইউ। এরপরও এইচ বি এম ইকবাল তার নামে থাকা ব্যাংক হিসাব থেকে ১ কোটি ১১ লাখ টাকা ও ৩০ হাজার মার্কিন ডলার উত্তোলন করেন। এটি বিএফআইইউর নজরে আসার পর ব্যাংকটির কাছে এ বিষয়ে জানতে চেয়েও কোনো সদুত্তর পাওয়া যায়নি। এই কারণে অর্থ পাচার প্রতিরোধ আইনের ২৩ এর ৬ ধারা অনুযায়ী প্রিমিয়ার ব্যাংককে জরিমানা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।