বাংলাদেশে প্রতিদিন কোটি কোটি আন্তর্জাতিক ওটিপি (ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড) এসএমএস আসছে বিভিন্ন অ্যাপ ও ওয়েবসাইট থেকে। অথচ এ খাত থেকে সরকার এখনো পর্যন্ত রাজস্ব আদায়ের জন্য কার্যকর কোনো নীতিমালা প্রণয়ন করতে পারেনি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এসএমএসগুলোর বড় অংশই আসছে গ্রে রুটে, যা সরাসরি অর্থ পাচার ও অবৈধ লেনদেনের ঝুঁকি তৈরি করছে। তথ্যপ্রযুক্তি ও টেলিযোগাযোগ সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, প্রতিদিন গড়ে ২৫ কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হচ্ছে এ খাতে, যার বার্ষিক পরিমাণ প্রায় ৯ হাজার ১১২ কোটি টাকা।
২০২২ সালে বিটিআরসি একটি ‘ইন্টারন্যাশনাল এটুপি এসএমএস রেগুলেটরি ফ্রেমওয়ার্ক’ খসড়া করে। সেখানে প্রতিটি এসএমএস থেকে ৪-৫ টাকা রাজস্ব আদায়ের প্রস্তাব ছিল। কিন্তু সেই নীতিমালা এখনও গেজেট হয়নি। অভিযোগ রয়েছে, একাধিক রাজনৈতিকভাবে প্রভাবশালী এসএমএস রাউটিং ব্যবসায়ী এবং মোবাইল অপারেটরদের চাপে এটি আটকে আছে।
বেসরকারি গবেষণা সংস্থা ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) এক প্রতিবেদনে জানায়, এই খাতে নীতিহীনতা সরাসরি অর্থ পাচারের সুযোগ তৈরি করছে।
বিটিআরসি সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে কিছু লিগ্যাল এসএমএস গেটওয়ে থাকলেও, বেশিরভাগ ওটিপি আসছে VPN ও অবৈধ প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে, যার ফলে অপারেটররা এসএমএস প্রতি ০.৫০-১ টাকা পাচ্ছে, অথচ রাজস্ব আদায় শূন্য।
বেসিস পরিচালক মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, “একটি আন্তর্জাতিক অ্যাপ বা ব্যাঙ্কিং প্ল্যাটফর্ম থেকে পাঠানো ওটিপি যদি বৈধভাবে আসে, তাহলে তা থেকে রাজস্ব পাওয়া যায়। কিন্তু এখন ৮০ শতাংশ এসএমএসই আসে গ্রে রুটে।”
অন্যদিকে, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) বলছে, তাদের পক্ষে এককভাবে এই খাত তদারকি করা সম্ভব নয়। এ বিষয়ে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও আইন প্রণয়নকারীদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখনই নীতিমালা জারি না করা হলে এ খাতে সাদা অর্থ পাচারের বড় রুটে পরিণত হতে পারে বাংলাদেশ।