বিশ্বের বৃহত্তম মোবাইল অ্যাপ প্ল্যাটফর্ম গুগল প্লে স্টোরে অ্যাপের সংখ্যা কমেছে প্রায় ৪৭ শতাংশ। ২০২৪ সালের শুরু থেকে চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত এই পতনে প্লাটফর্মে থাকা অ্যাপের সংখ্যা ৩৪ লাখ থেকে নেমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ১৮ লাখে। অ্যাপ বিশ্লেষণ প্রতিষ্ঠান অ্যাপফিগারস-এর তথ্য উদ্ধৃত করে এ খবর জানিয়েছে টেকক্রাঞ্চ।
অ্যাপফিগারসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একই সময়ে প্রতিদ্বন্দ্বী অ্যাপল অ্যাপ স্টোরে অ্যাপের সংখ্যা ১৬ লাখ থেকে বেড়ে হয়েছে ১৬ লাখ ৪০ হাজার। এতে দেখা যাচ্ছে, অ্যাপ স্টোরে যখন ধীরে ধীরে অ্যাপ বাড়ছে, সেখানে গুগল প্লে স্টোরে ঘটছে বিপরীত ঘটনা।
কী কারণে এমন হ্রাস?
বিশ্লেষকদের মতে, গুগলের নতুন ও কঠোর নীতিমালাই এ অবস্থার মূল কারণ। আগে যেখানে প্লে স্টোরে অ্যাপ যাচাই মূলত স্বয়ংক্রিয় স্ক্যানিং ও ম্যালওয়্যার পরীক্ষার মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল, সেখানে এখন মানহীন, অপ্রয়োজনীয় ও পরিত্যক্ত অ্যাপ গুলোও সরিয়ে ফেলা হচ্ছে।
২০২৪ সালের জুলাই থেকে গুগল যেসব নীতিগত পরিবর্তন আনে, তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল:
-
কার্যকারিতা নেই এমন অ্যাপ বাতিল
-
কোনো কনটেন্ট না থাকা অ্যাপ বাদ
-
ফিচারবিহীন বা পরিত্যক্ত অ্যাপ সরানো
-
গোপনীয়তা লঙ্ঘনকারী অ্যাপ ব্লক
-
AI ব্যবহার করে হুমকি শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া আরও শক্তিশালী করা
ইউরোপীয় আইনেও প্রভাব
অ্যাপ কমে যাওয়ার পেছনে আরেকটি কারণ বলা হচ্ছে ইইউ’র নতুন ট্রেডার স্ট্যাটাস আইন। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে কার্যকর হওয়া এ নিয়ম অনুযায়ী, ইউরোপে অ্যাপ প্রকাশ করতে হলে ডেভেলপারের নাম ও ঠিকানা প্রকাশ বাধ্যতামূলক। অনেকেই তা না মানায় তাদের অ্যাপ সরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তবে আশ্চর্যের বিষয়—অ্যাপলও একই নিয়ম অনুসরণ করছে, কিন্তু তাদের প্ল্যাটফর্মে অ্যাপের সংখ্যা কমেনি।
নতুন অ্যাপ এখনো আসছে
এদিকে অ্যাপফিগারস জানায়, অ্যাপ সরালেও নতুন অ্যাপ আসা থেমে নেই। চলতি বছরের এপ্রিল পর্যন্ত প্লে স্টোরে নতুন করে প্রকাশিত হয়েছে ১০,৪০০টি অ্যাপ, যা আগের বছরের তুলনায় ৭.১ শতাংশ বেশি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, গুগলের এমন পদক্ষেপ মানসম্পন্ন ডেভেলপার ও ব্যবহারকারীদের জন্য ইতিবাচক পরিবর্তন বয়ে আনবে।