২০২৫ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চ—এই তিন মাসে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার স্মার্টফোন বাজারে সরবরাহ কমেছে ৩ শতাংশ। বাজার গবেষণা প্রতিষ্ঠান ক্যানালিসের সর্বশেষ প্রতিবেদন অনুযায়ী, এই সময়ে বাজারে মোট সরবরাহ হয়েছে ২ কোটি ২৮ লাখ ইউনিট স্মার্টফোন।
ক্যানালিস বলছে, আগের পাঁচ প্রান্তিকে এই অঞ্চলের বাজারে স্মার্টফোন সরবরাহ ছিল ঊর্ধ্বমুখী। তবে এবার তা কমেছে। বাজার বিশ্লেষকেরা মনে করছেন, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা ও মূল্যস্ফীতির চাপেই এই মন্দা।
প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই বাজারে আবারও শীর্ষে উঠেছে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রযুক্তিপণ্য নির্মাতা স্যামসাং। প্রতিষ্ঠানটি এই প্রান্তিকে ৪৩ লাখ ইউনিট স্মার্টফোন সরবরাহ করেছে। তাদের বাজার হিস্যা ১৯ শতাংশ।
এরপরেই আছে চীনা প্রতিষ্ঠান শাওমি। ৪০ লাখ ইউনিট সরবরাহ করে তাদের বাজার হিস্যা ১৭ শতাংশ। ক্যানালিস জানিয়েছে, শাওমিই একমাত্র প্রতিষ্ঠান, যারা এ সময় ৪ শতাংশ বার্ষিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে পেরেছে।
তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে ট্রান্সশান। তাদের বাজার হিস্যা ১৫ শতাংশ। তবে এ সময় প্রতিষ্ঠানটির সরবরাহ ২০ শতাংশ কমেছে। এই প্রতিষ্ঠানের অধীনেই রয়েছে টেকনো, ইনফিনিক্স ও আইটেল ব্র্যান্ড।
অপো রয়েছে চতুর্থ স্থানে। তাদের সরবরাহ কমেছে ১৬ শতাংশ, বাজার হিস্যা ১৪ শতাংশ। পঞ্চম স্থানে থাকা ভিভো ১২ শতাংশ বাজার ধরে রেখেছে। প্রতিষ্ঠানটির ভি সিরিজে ৩৪ শতাংশ বার্ষিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে।
ক্যানালিসের গবেষণা ব্যবস্থাপক লে জুয়ান চিউ বলেন, ‘২০২৪ সালের শেষের দিকে ছুটির মৌসুমকে ঘিরে প্রচুর পণ্য বাজারে পাঠানো হয়েছিল। তবে মূল্যস্ফীতির কারণে তুলনামূলক কম ও মধ্যম মূল্যের ডিভাইসের চাহিদা হঠাৎ কমে যায়। এতে গড় বিক্রয়মূল্য ৫ শতাংশ বেড়ে যায়, যা ২০২৩ সালের পর সর্বোচ্চ।’
📊 শীর্ষ পাঁচ ব্র্যান্ডের অবস্থান
ব্র্যান্ড | সরবরাহ (লক্ষ ইউনিট) | বাজার হিস্যা (%) | বার্ষিক পরিবর্তন |
---|---|---|---|
স্যামসাং | ৪৩ | ১৯% | –২% |
শাওমি | ৪০ | ১৭% | +৪% |
ট্রান্সশান | – | ১৫% | –২০% |
অপো | – | ১৪% | –১৬% |
ভিভো | – | ১২% | +৩৪% (V সিরিজে) |
বিশ্লেষকেরা বলছেন, বাজারের অনিশ্চয়তায় বিক্রয় চ্যানেলে বৈচিত্র্য আনাটাও জরুরি হয়ে পড়েছে। শাওমি এ সময় তাদের নোট সিরিজের মডেলগুলো বাজারে আনে। মোবাইল অপারেটর ও অনলাইন চ্যানেলের মাধ্যমে বিক্রি বাড়ায় প্রতিষ্ঠানটি। মালয়েশিয়ায় তাদের ৫জি ফোনের বিক্রি এতটাই বেড়েছে যে, স্থানীয় বাজারে ৫জি ডিভাইসের মধ্যে শাওমির অবদান ৩৯ শতাংশ।
চীনের আরেক প্রতিষ্ঠান অনর এই সময় ৮ লাখ ৯৩ হাজার ইউনিট স্মার্টফোন সরবরাহ করেছে। বার্ষিক হিসাবে তাদের প্রবৃদ্ধি ৮৮ শতাংশ। ক্যানালিস বলছে, পণ্যের বৈচিত্র্য ও বিক্রয় চ্যানেলের প্রসারের কারণে প্রতিষ্ঠানটি এই প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ভিয়েতনাম বর্তমানে স্মার্টফোন উৎপাদনের গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হয়ে উঠছে। দেশটির অবকাঠামো উন্নয়ন ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা এটিকে দীর্ঘমেয়াদি বিনিয়োগের জন্য আকর্ষণীয় করে তুলেছে। একই সঙ্গে মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও থাইল্যান্ডেও প্রযুক্তি খাতে বিনিয়োগ বাড়ছে।