বাজারে প্রতিদিনই আসছে নতুন নতুন স্মার্টফোন। আকর্ষণীয় ডিজাইন, ক্যামেরার মেগাপিক্সেল, বিশাল ব্যাটারি কিংবা গেমিং চিপসেট—সব মিলিয়ে বিভ্রান্ত হচ্ছেন সাধারণ ক্রেতারা। কিন্তু ফোন কেনার আগে কিছু বিষয় জানা জরুরি, নইলে ঠকতে পারেন আপনি।
বিশেষজ্ঞদের মতে, ফোন কেনার ক্ষেত্রে চোখ বন্ধ করে বিজ্ঞাপন নয়, বরং প্রয়োজনীয়তা ও পারফরম্যান্স বিবেচনায় নেওয়াই হচ্ছে বুদ্ধিমানের কাজ। দেখে নেওয়া যাক কোন বিষয়গুলো যাচাই করে কেনা উচিত আপনার পরবর্তী স্মার্টফোন—
১. ফোন কেন ব্যবহার করবেন?
সবার আগে বুঝে নিতে হবে আপনি ফোনটি কী কাজে ব্যবহার করবেন—
গেম খেলবেন? ভিডিও বানাবেন? নাকি শুধু ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপ?
যেমন, শুধু কল ও সামাজিক মাধ্যমে সময় কাটানোর জন্য হালকা কনফিগারেশনের ফোনই যথেষ্ট। কিন্তু গেমারদের জন্য দরকার শক্তিশালী প্রসেসর ও হাই রিফ্রেশ রেট ডিসপ্লে।
২. প্রসেসর ও র্যাম: ফোনের মস্তিষ্ক
Snapdragon, MediaTek কিংবা Exynos—এই চিপসেটগুলো ফোনের গতি নির্ধারণ করে।
যেমনঃ Snapdragon 7 Gen 3 বা Dimensity 8200 চিপসেট এখন মাঝারি বাজেটের সেরা চিপসেট।
র্যামের দিক থেকেও কমপক্ষে ৬ বা ৮ জিবি হওয়া উচিত।
৩. ব্যাটারি ও চার্জিং স্পিড
ফোনে ৫০০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ার ব্যাটারি থাকা এখন অনেকটাই সাধারণ।
তবে জরুরি হয়ে দাঁড়াচ্ছে ফাস্ট চার্জিং সুবিধা—কমপক্ষে ৩৩ ওয়াট থাকলে ভালো।
স্মার্টফোন ব্র্যান্ডগুলোর চার্জিং টাইম যাচাই করে নিন কেনার আগে।
৪. ক্যামেরা: শুধু মেগাপিক্সেল নয়
৬৪ বা ১০৮ মেগাপিক্সেল শুনে মোহিত হওয়ার কিছু নেই।
সেন্সরের গুণগত মান, অপটিমাইজেশন ও নাইট মোড—এসব দেখে ক্যামেরার প্রকৃত মান নির্ধারণ হয়।
ভিডিও করেন? তাহলে OIS (অপটিক্যাল ইমেজ স্ট্যাবিলাইজেশন) দরকার হবেই।
৫. ডিসপ্লে ও রিফ্রেশ রেট
এখনকার ট্রেন্ড AMOLED ডিসপ্লে ও ১২০Hz রিফ্রেশ রেট।
যাঁরা বেশি স্ক্রল করেন বা ভিডিও দেখেন, তাদের জন্য এই দুইটি বিষয় নিশ্চিত হওয়া জরুরি।
গেমারদের জন্য টাচ স্যাম্পলিং রেটও বিবেচনায় রাখুন।
৬. সফটওয়্যার ও আপডেট
অ্যান্ড্রয়েড ফোন কিনলে খেয়াল রাখবেন ফোনটি কত বছর পর্যন্ত সফটওয়্যার আপডেট দেবে।
স্টক অ্যান্ড্রয়েড, One UI বা ColorOS—যেটাই হোক, ব্যবহারে যেন জটিলতা না হয়।
নতুন ফোন হলে অন্তত ২ বছরের নিরাপত্তা আপডেট থাকা উচিত।
৭. স্টোরেজ ও এক্সপেনশন
মোবাইল গেম, ভিডিও ও অ্যাপ রাখার জন্য ১২৮ বা ২৫৬ জিবি স্টোরেজ এখন ন্যূনতম চাহিদা।
MicroSD কার্ড সাপোর্ট থাকলে ভালো, তবে অনেক ফোনেই এখন এই অপশন থাকছে না।
৮. মূল্য ও মূল্যমান
২০-৩০ হাজার টাকার মধ্যেই এখন ভালো ফোন পাওয়া যায়।
তবে কনফিগারেশন দেখে “স্পেস-টু-প্রাইস রেশিও” বোঝার চেষ্টা করুন।
একই দামে কে কী দিচ্ছে—তা যাচাই করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
৯. অতিরিক্ত ফিচার: থাকলে ভালো
-
ইন-ডিসপ্লে ফিঙ্গারপ্রিন্ট
-
স্টেরিও স্পিকার
-
5G সাপোর্ট
-
Gorilla Glass
-
NFC
এসব না থাকলেও ফোন ব্যবহার করা যায়, তবে থাকলে অভিজ্ঞতা আরও উন্নত হয়।