বিনিয়োগ না পেয়ে কিছুদিন আগে তিন শতাধিক কর্মী ছাঁটাইয়ের পর এইবার নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষায় অন্য একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে একীভূত হয়ে যাচ্ছে পাঠাও।
বিদেশী বিনিয়োগ আকর্ষণে একীভূত হচ্ছে দেশের দুই শীর্ষ তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান শিওর ক্যাশ এবং পাঠাও। কোম্পানি দুটির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, একীভূত হলেও আলাদাভাবেই ব্যবসায়িক কার্যক্রম চালাবে প্রতিষ্ঠান দুটি।
সূত্রমতে, ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে কয়েক দফা বৈঠক শেষে একীভূত হওয়ার বিষয়টি চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়েছে এসেছেন দুই প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ পর্যায়ের কর্মকর্তারা। শিগগির যৌথভাবে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়ে এ বিষয়ে বিস্তারিত গণমাধ্যমকে জানানো হবে।
এই পাঠাওয়ের শুরুটা ছিল সম্ভাবনাময়। সাড়াও পেয়েছিল বেশ। বিদেশি ও দেশি রাইড শেয়ারিং কোম্পানিগুলোর মধ্যে এগিয়েও গিয়েছিল পাঠাও। কিন্তু শেষ পর্যন্ত নানা কারণে তা আর ধরে রাখতে পারেনি তারা।
শোনা যাচ্ছিল বড় একটি বিনিয়োগকারী তাদের শেয়ার বিক্রি করে বেড়িয়ে যেতে চাইছে। কিন্তু ওভার ভ্যালুয়েশন করাসহ নিয়ম বহির্ভূত কিছু কারণে আরেকটি বড় কোম্পানি এই শেয়ার কিনে বিনিয়োগের চূড়ান্ত পর্যায় হতে পিছু হটে যায়। আর তখনই করা হয় ওই ছাঁটাই।বিনা নোটিশে এক সঙ্গে তিন শতাধিক কর্মী ছাঁটাইয়ের পর অনেকেই আবার পাঠাও ছেড়েছেন চাকরির নিরাপত্তাহীনতার কারণে। এসব খবর বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশ হয়েছে।
প্রসঙ্গত, দেশের মোবাইল ফোনে আর্থিক সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান শিওর ক্যাশ ২০১৫ সালে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করে। বর্তমানে তারা রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন রূপালী ব্যাংক, বেসরকারি খাতের ফার্স্ট সিকিউরিটি ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, ন্যাশনাল ক্রেডিট অ্যান্ড কমার্স ব্যাংক (এনসিসি), যমুনা ব্যাংকের মোবাইল ব্যাংকিং সেবা প্রদান করে থাকে।
প্রতিষ্ঠানটিতে রয়েছে দুই কোটি গ্রাহক, দুই লাখ এজেন্ট ও এক হাজার লেনদেনকারী অংশীদার বা পেমেন্ট পার্টনার। শিওর ক্যাশ ব্যবহার করে গ্রাহকেরা টাকা জমা ও উত্তোলন, বিভিন্ন ধরনের ইউটিলিটি ফি পরিশোধসহ বিভিন্ন ধরনের আর্থিক লেনদেন করতে পারেন।
এদিকে অ্যাপভিত্তিক রাইড শেয়ারিং, খাবার সরবরাহ ও ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচিত পাঠাও ২০১৫ সালে কুরিয়ার সার্ভিসের ব্যবসা দিয়ে কার্যক্রম শুরু করে। এরপর একে একে যুক্ত হয় অ্যাপভিত্তিক রাইড শেয়ারিং, খাবার সরবরাহ ও ই-কমার্স ব্যবসা। বাংলাদেশের পাশাপাশি নেপালেও বিভিন্ন ধরনের সেবা প্রদান করছে পাঠাও।
বর্তমানে পাঠাও এর ৫০ লাখ নিবন্ধিত গ্রাহক রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির রাইড শেয়ারিং সেবার জন্য নিবন্ধিত চালকের সংখ্যা ২ লাখ এবং ১০ হাজার রেস্টুরেন্টের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটি চুক্তিবদ্ধ।
পাঠাও বাইক, পাঠাও কার, পাঠাও ফুড, পাঠাও পার্সেল ও পাঠাও কুরিয়ার নামে পাঠাওয়ের পাঁচটি প্ল্যাটফর্ম রয়েছে। ২০১৭ সালে পাঠাওয়ে ২০ লাখ মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করে ইন্দোনেশিয়ার বৃহৎ রাইড শেয়ারিং প্রতিষ্ঠান গো-জ্যাক।
গোজ্যাকের বাইরে উভয় প্রতিষ্ঠানেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, হংকং ও জাপানসহ বিভিন্ন দেশের বিনিয়োগ রয়েছে।