দেশের বাজারে কেটিএম ব্র্যান্ডের বাইক বিক্রি করবে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি রানার অটোমোবাইলস লিমিটেড। এজন্য কোম্পানিটির পর্ষদ ভারতের বাজাজ অটো লিমিটেডের সঙ্গে চুক্তি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
গতকাল স্টক এক্সচেঞ্জের মাধ্যমে কোম্পানিটি জানিয়েছে, দেশের বাজারে কেটিএম ব্র্যান্ডের বাইক বাজারজাতের জন্য তারা বাজাজ অটোর সঙ্গে অনুমোদিত সরবরাহকারী হিসেবে চুক্তি করবে। কেটিএম ব্র্যান্ডের বাইক দেশে কমপ্লিটলি বিল্ডআপ (সিবিইউ), সেমি নকড ডাউন (এসকেডি) কিংবা কমপ্লিটলি নকড ডাউন (সিকেডি) হিসেবে বাজারজাত করা হবে। এর মাধ্যমে দেশের হাই অ্যান্ড সেগমেন্টের বাইকের বাজারে রানারের অবস্থান আরো সংহত হবে।
জানতে চাইলে রানার অটোমোবাইলসের প্রধান অর্থ কর্মকর্তা (সিএফও) মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, দেশের বাইকের বাজারের ২০ শতাংশ হচ্ছে হাই অ্যান্ড সেগমেন্টের দখলে। এ ধরনের বাইকে মুনাফা মার্জিন বেশি থাকে। আমাদের নিজস্ব জরিপ অনুসারে, দেশে কেটিএম ব্র্যান্ডের বাইক ভালো সাড়া ফেলবে বলে মনে করছি। পর্ষদের অনুমোদন পাওয়ার কারণে এখন দ্রুতই বাজাজের সঙ্গে এ-সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষর করা হবে। সিবিইউ, এসকেডি কিংবা সিকেডি যেটি আমাদের জন্য ব্যবসায়িকভাবে সুবিধাজনক হবে, আমরা সেটি করব। রানারের বিদ্যমান কারখানাতেই কেটিএম বাইক সংযোজন করা সম্ভব, এজন্য আলাদা কোনো প্লান্টের প্রয়োজন নেই বলে জানান তিনি।
গেল বছর পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হওয়া রানার অটোমোবাইলস প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) মাধ্যমে উত্তোলিত ১০০ কোটি টাকার মধ্যে অব্যবহূত ৬৩ কোটি টাকা ব্যবহারের সংশোধিত প্রস্তাবে এ বছরের ফেব্রুয়ারিতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) অনুমোদন পেয়েছে। সংশোধিত পরিকল্পনা অনুসারে, রানার অটোমোবাইলস চেসিস ওয়েল্ডিং লাইন স্থাপনে ১২ কোটি ১৮ লাখ, বডি ওয়েল্ডিং লাইন স্থাপনে ৭ কোটি ১০ লাখ, পেইন্ট বুথ স্থাপনে ২৭ কোটি ৭২ লাখ ও ভেহিকল অ্যাসেম্বল অ্যান্ড টেস্টিং লাইন স্থাপনে ১৬ কোটি টাকা ব্যয় করবে।
৩০ জুন সমাপ্ত ২০১৯ হিসাব বছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ও ৫ শতাংশ স্টক লভ্যাংশ দিয়েছে রানার অটোমোবাইলস। আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির সম্মিলিত শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৫ টাকা ৭ পয়সা, যা আগের হিসাব বছরে ছিল ৪ টাকা ৯০ পয়সা। ৩০ জুন সম্মিলিত শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়ায় ৬৫ টাকা ৪৯ পয়সা, যা আগের হিসাব বছর শেষে ছিল ৫৯ টাকা ৫৩ পয়সা।
এদিকে অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে, সর্বশেষ সমাপ্ত ২০১৯-২০ হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জুলাই-মার্চ) কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ২ টাকা ৭৪ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৩ টাকা ৫৮ পয়সা। তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ) ইপিএস হয়েছে ৫৫ পয়সা, আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৭৭ পয়সা। ৩১ মার্চ কোম্পানিটি এনএভিপিএস দাঁড়িয়েছে ৬৪ টাকা ১৫ পয়সা।
বর্তমানে কোম্পানিটির অনুমোদিত মূলধন ২০০ কোটি টাকা। পরিশোধিত মূলধন ১১৩ কোটি ৫৪ লাখ টাকা। কোম্পানির মোট শেয়ার সংখ্যা ১১ কোটি ৩৫ লাখ ৩৯ হাজার ৯৩২। এর ৫০ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ উদ্যোক্তা-পরিচালক, ২৬ দশমিক ১৮ শতাংশ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী ও বাকি ২৩ দশমিক ৭৮ শতাংশ শেয়ার সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে রয়েছে।
ডিএসইতে গতকাল রানার অটোমোবাইলস শেয়ারের সর্বশেষ দর ছিল ৪৯ টাকা ৮০ পয়সা। এক বছরে শেয়ারটির দর ৩৯ টাকা থেকে ৯৯ টাকা ৯০ পয়সার মধ্যে ওঠানামা করেছে।