এতদিন ফসিল ফুয়েল অর্থাৎ পেট্রোল-ডিজেলের মাধ্যমে যানবাহন চলার কথা আমরা শুনে এসেছি। পরিবেশ দূষণ কমানোর উদ্দেশ্যে এখন বৈদ্যুতিক গাড়িও কম-বেশি রাস্তায় দেখা যায়। কিন্তু এবার যদি আপনাদের বলা হয়, ভবিষ্যতের গাড়িতে ফুয়েল হিসাবে শক্তি জোগাবে পানি। তাহলে নিশ্চই অবাক হবেন! কিন্তু সম্প্রতি ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডিজাইনার ম্যাক্সিম লিফভেরি পানি দিয়ে চালিত একটি টু-হুইলারের কনসেপ্ট ছবি প্রকাশ করেছেন।
২০১৬ সালে ম্যাক্সিম লিফেরি মোটরবাইক নির্মাতা ইয়ামার সাথে বাইকটির স্কেচ প্রথম শেয়ার করেন। এরপর ইয়ামাহার উদ্যোগে বাইকটির ইঞ্জিন ফ্রেম ডেভলপমেন্ট থেকে শুরু করে ফেয়ারিং ডিজাইন, এছাড়া অন্যান্য আনুষাঙ্গিক কাজকর্ম শুরু হয়। বর্তমানে সেটারই ফাইনাল কনসেপ্টের ছবি ম্যাক্সিম লিফেরি প্রকাশ্যে এনেছে।
এই কনসেপ্ট বাইকটির নাম দেওয়া হয়েছে ইয়ামাহা এক্সটি ৫০০ এইচ টু ও এডিশন। অনেকে আবার বাইকটিকে ৭০ এর দশকের ইয়ামাহার এনডিউরো-আডভেঞ্চার বাইক এক্সটি ৫০০-এর পুর্নজন্ম হিসাবে মনে করছেন। ১৯৭৫-১৯৮১ এর মধ্যে বিক্রিত ইয়ামাহা এক্সটি ৫০০ বাইকটিতে ছিল পেট্রোল চালিত ৪৯৯ সিসির ফোর স্ট্রোক সিঙ্গল সিলিন্ডার ইঞ্জিন। এটি তখন সর্বোচ্চ ৩২ এইচপি এবং ৩৯ এনএম টর্ক জেনারেট করতে সক্ষম ছিল। বাইকটির সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ১৬০ কিমি /ঘন্টা ৷
আপকামিং ইয়ামাহা এক্সটি ৫০০ এইচ টু ও এডিশানের বাইকটিতে থাকতে পারে ক্লোজড লুপ এইচ টু ও মোটর। জানা গেছে এই বাইকটিতে থাকা একটি ওয়াটার পাম্প পানিকে চক্রাকারে ঘোরাবে এবং ইঞ্জিনকে প্রোপালশান দেবে।
কনসেপ্ট ছবিতে বাইকটিকে যে হোয়াইট শেডেড টায়ারে দেখা গেছে তা বাইকটির স্ট্যাইলের সাথে পুরোপুরি মানানসই। এই ওয়াটার-পাওয়ারড মোটরবাইকের মাধ্যমে পরিবেশ দূষণের সম্ভাবনা যেমন থাকবে না, তেমনি পানির অফুরন্তু জোগান থাকার জন্য ফুয়েলের খরচ নিয়েও চিন্তা করতে হবে না। এছাড়া বাইকটির রক্ষনাবেক্ষণের খরচও ইলেকট্রিক চালিত বাইকের তুলনায় খুব কমই হবে ৷
বলা বাহুল্য, ইয়ামাহা যদি এই এইচ টু ও এডিশনের বাইকটিকে বাজারে আনতে সক্ষম হয়, তাহলে এটি বাজারে শোরগোল ফেলার পাশাপাশি প্রযুক্তির দিক থেকে এক নতুন দিগন্তের উন্মোচন ঘটাবে। তবে এই মুহুর্তে, ইয়ামাহা বাইকটির প্রোডাকশন আরম্ভ করার ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করছে কিনা, সে ব্যাপারে তথ্য অমিল। আর যদি প্রোডাকশান শুরুও হয় তাহলেও ২০২৫ এর আগে বাইকটির বাজারে আসার সম্ভাবনা কম।