বাইসাইকেলের টায়ারে পরিবর্তন আনতে চায় যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার এক প্রতিষ্ঠান। মার্কিন মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার উদ্ভাবিত প্রযুক্তির ওপর নির্ভর করে নতুন প্রযুক্তির টায়ার বানাচ্ছে স্মার্ট টায়ার কোম্পানি নামে মার্কিন প্রতিষ্ঠানটি। প্রযুক্তিটির নাম তারা বলছে ‘এমইটিএল’।
চাঁদ বা মঙ্গলের মতো ভিন্ন কোনো গ্রহে পাঠানো রোভারের চাকায় বর্তমান প্রযুক্তির টায়ার খুব একটা কার্যকর নয়। অনেক কারণের একটি হলো, কোনোভাবে যদি টায়ার বা টিউব ফুটো হয়ে বাতাস বেরিয়ে যায়, তাহলে পুরো অভিযানই ভেস্তে যাবে। বসে যাওয়া চাকা নিয়ে বালুময় পথে চলবে না রোভার। আর সে কারণেই বাতাসহীন প্রযুক্তির টায়ার উদ্ভাবন করে নাসা।
গত বছর প্রতিষ্ঠা করা হয় স্মার্ট টায়ার কোম্পানি। উদ্দেশ্য হলো মহাকাশ অভিযানের জন্য তৈরি বাতাসহীন প্রযুক্তির টায়ারগুলো বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে বাজারজাত করা।
টায়ারগুলো নিকেল-টাইটানিয়াম অ্যালয় থেকে তৈরি। স্মার্ট টায়ার কোম্পানির ভাষায়, হালকা, নমনীয়, মহাকাশযুগের উপযুক্ত ধাতব, যা কখনো বসে যাবে না, আবার দিব্যি নিখুঁতভাবে চলবে। ভবিষ্যতে এমন উপাদানেই বাইসাইকেলের টায়ার তৈরি হবে বলে মনে করে প্রতিষ্ঠানটি। আর নকশাটি এমন যে অন্যান্য বাহনের জন্যও উপযুক্ত।
উপাদান শেপ-মেমোরি ধাঁচের হওয়ায় সংকুচিত, প্রসারিত কিংবা দুমড়ানো অবস্থা থেকে দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যেতে পারে। ফুটো হওয়ার যেমন ভয় নেই, তেমনই বাতাস দিয়ে ফোলানোরও প্রয়োজন হবে না।
ডিজিটাল ট্রেন্ডসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সোনালি, রুপালি ও ধাতব নীল রঙে টায়ারগুলো পাওয়া যাবে। ২০২২ সালের শুরুর দিকে বাইসাইকেলের জন্য এমইটিএল টায়ারগুলো বাজারে পাওয়া যেতে পারে।
নাসার প্রকৌশলী সানতো পাদুলা বলেছেন, ভূপৃষ্ঠে চলে এমন যেকোনো বাহনের টায়ার শিল্পে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনার জন্য শেপ মেমোরি অ্যালয় যথেষ্ট সম্ভাবনাময়। আর সেটা কেবল হিমশৈলের চূড়া মাত্র।
স্মার্ট টায়ার কোম্পানির লক্ষ্য ২৫ হাজার কোটি ডলারের বৈশ্বিক টায়ারের বাজারে শক্তপোক্ত অবস্থান তৈরি করা। নাসার গ্লেন রিসার্চ সেন্টারের সঙ্গে যৌথভাবে এমইটিএল টায়ারগুলো তৈরি করছে তারা। নাসার কিছু কিছু উদ্ভাবন এভাবে বাণিজ্যিকীকরণের পরিকল্পনা আছে তাদের।