আবহাওয়ার জন্য বা ভ্যাপসা গরম থাকায় এসি না চালানো অবস্থায় বদ্ধ গাড়িতে থাকাটাও মুশকিল। বাইরের গরম থেকে এসেই গাড়িতে বসে সঙ্গে সঙ্গেই এসি চালু করে দেন। অনেকে গাড়ি না চালিয়ে ইঞ্জিন চালু অবস্থায় এসিতে ঘুমিয়ে পড়েন। আর তেমনটা হলে কোন কোন বিপদ হতে পারে দেখে নেওয়া যাক।
কাঁচবন্ধ গাড়ি যখন রোদে পার্ক করানো হয় তখন বাইরের তাপমাত্রা যদি ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি হয়, তাহলে ভেতরে ২ থেকে ৪ হাজার মিলিগ্রাম বেঞ্জিন জমা হয়। গাড়িতে বসার সঙ্গে সঙ্গে এসি অন করে দিলে ওই জমা বেঞ্জিনই বের হয়ে শ্বাস-প্রশ্বাসের সঙ্গে আমাদের শরীরে ঢোকে। যা আমাদের সহনক্ষমতার ৪০ গুণ বেশি। দীর্ঘদিন ধরে শরীরে বেঞ্জিন ঢোকার প্রভাব মারাত্মক ক্ষতি করে।
ফলে শারীরিক সমস্যা শুরু হয়। যেমন- অস্থিমজ্জার কর্মক্ষমতা কমে। লোহিত কণিকার উৎপাদন কম হয়। রক্তস্বল্পতা দেখা দিতে পারে। এটি অ্যান্টিবডি তৈরির ক্ষমতা কমিয়ে দেয়। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। এর ফলে ঋতুচক্র অনিয়মিত হতে পারে। লিউকোমিয়া বা রক্তের ক্যানসার হতে পারে। হঠাৎ শরীরে বেশি পরিমাণ বেঞ্জিন ঢুকে গেলে হৃদযন্ত্র কাজ বন্ধ করে দিয়ে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটাতে পারে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, বন্ধ গাড়ি খুলে ঢোকার পরেই এসি চালাবেন না। এসি চালানোর পর অন্তত ১০ মিনিট কাচ নামিয়ে রাখুন। যাতে জমে থাকা বেঞ্জিন বেরিয়ে যায়।
গাড়িতে ঘুমানোর ক্ষেত্রে কোনও অপরাধমূলক ঘটনাও ঘটে যেতে পারে। গাড়িতে ডাকাত হামলা করতে পারে। মদ্যপ লোকেরা অতিষ্ঠ করতে পারে।
অন্যদিকে ইঞ্জিন চালু রেখে এসি চালিয়ে ঘুমানোটা খুব একটা সাশ্রয়ের বুদ্ধি না বলছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ, একটি ছোট গাড়ির ১.২ লিটার ইঞ্জিন ০.৬ লিটার থেকে ০.৮ লিটার পেট্রল প্রতি ঘন্টায় খরচ করে। সেক্ষেত্রে প্রতি ঘন্টায় গাড়ি না চালিয়েও শুধু ইঞ্জিন চালু রাখলে ৬০-৮০ টাকা খরচ হবে। পাঁচ থেকে ছয় ঘন্টার মধ্যে খরচ হয়ে যাবে ৩০০ -৫০০ টাকা।
এছাড়া গাড়িতে ঘুমানো নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও ঝঁকিপূর্ণ। এসি গ্যাস লিক হতে পারে। সেক্ষেত্রে গাড়ির জানলা খুলে রাখা যেতে পারে। কিন্তু তাতে মশার পাশাপাশি অন্য পোকামাকড়ও গাড়ির ভিতর ঢুকে পড়তে পারে।
গাড়িতে অস্বস্তিকর ভাবে শুয়ে ৩০০-৫০০ টাকা খরচ না করে, সস্তা হোটেল খুঁজে বের করাই বুদ্ধিমানের কাজ বলে জানাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। এতে হয়তো কয়েক শো টাকা বেশি খরচ হবে, তবে ৭-৮ ঘন্টা ভালো ঘুম হবে। টয়লেট ব্যবহার করা যাবে, গোসলও করা যেতে পারে। যা গাড়িতে সম্ভব না।