ঢাকার বাইরের কোনো জেলায় নিবন্ধিত মোটরসাইকেল রাজধানীতে উবার-পাঠাওসহ অন্যান্য রাইড শেয়ারিং অ্যাপে চলতে পারবে না। রাইড শেয়ারিং সেবা দিতে চাইলে কেবল ‘ঢাকা মেট্রো’ হিসেবে নিবন্ধিত মোটরসাইকেলই ব্যবহার করতে হবে।
সম্প্রতিক সময়ে রাজধানীতে মোটরসাইকেলের সংখ্যা লাগামহীনভাবে বেড়ে গেছে। এর পেছনে গ্রাম থেকে আসা মোটরসাইকেলকেই দায়ী মনে করছে পুলিশ। তারা বলছে, উবার-পাঠাওয়ের মতো রাইড শেয়ারিং অ্যাপের মাধ্যমে আয়ের আশায় বিভিন্ন জেলা থেকেই বিপুল পরিমাণ মোটরসাইকেল ঢুকছে ঢাকায়। ঢাকায় রাইড শেয়ারিং সেবায় কেবল ঢাকা মেট্রো হিসেবে নিবন্ধিত মোটরসাইকেলগুলোকে অনুমোদন দিলে এক ধাক্কাতেই মোটরসাইকেলের সংখ্যা কমে যাবে বলে আশা করছে পুলিশ।
পুলিশ বলছে, উবার-পাঠাওসহ রাইড শেয়ারিং অ্যাপের কারণে এমনিতেই মোটরসাইকেল চলাচল বেড়ে গেছে। এসব মোটরসাইকেলের একটি স্বাভাবিক প্রবণতা ফুটপাত দিয়ে চলাচল। তাছাড়া যেখানে সেখানে দাঁড়িয়ে যাত্রী ওঠানামা করানোর অভিযোগও রয়েছে তাদের বিরুদ্ধে। আইন না মানার ক্ষেত্রেও মোটরসাইকেল এগিয়ে।
মোটরসাইকেল বাজারজাতকারী একটি প্রতিষ্ঠানের তথ্যে দেখা গেছে, ২০১৮ সালে দেশে সাড়ে ৪ লাখ মোটরসাইকেল বিক্রি হয়েছে। ২০১৭ সালে বিক্রি হয়েছিল ৩ লাখ ৭০ হাজার। প্রতিবছর মোটরসাইকেল বিক্রি বাড়ছে। আর
বিআরটিএ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ পর্যন্ত ঢাকায় মোটরসাইকেলের সংখ্যা ছিল ৫ লাখ ৮৫ হাজার ৪৯০টি। এখন ঢাকায় প্রতিদিন গড়ে ৪৭টি করে নতুন মোটরসাইকেল নামছে।
বুয়েটের দুর্ঘটনা গবেষণা ইনস্টিটিউট এআরআইয়ের হিসাবে, ২০১৭ সালে রাজধানীতে ৪৮টি মোটরসাইকেল দুর্ঘটনায় ৫৩ জন নিহত ও ১৯ জন আহত হন। ২০১৮ সালে এ সংখ্যা ছিল আগের বছরের চেয়ে ৩০ শতাংশ বেশি। এসব দুর্ঘটনায় আহতদের মধ্যে অনেককেই স্থায়ী পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয়েছে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের নগর পরিকল্পনা বিভাগের (বুয়েট) নগর ও অঞ্চল পরিকল্পনা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মোসলেহ উদ্দিন বলেন, ২০১৭ সালে রিভাইস স্ট্র্যাটেজিক ট্রান্সপোর্ট প্ল্যান (আরএসটিপি) অনুযায়ী, মোটরসাইকেল ঢাকার জন্য সমাধান নয়, এটা সমস্যার কারণ হয়ে দাঁড়াবে বলা হয়েছে। এমনকি মোটরসাইকেল কারখানা গড়ে তুলে একে শিল্প হিসেবে বাড়তি সুবিধা দেওয়াও ভলো দিক নয়।’
গণপরিবহন বিশেষজ্ঞ বুয়েটের অধ্যাপক ড. শামসুল ইসলাম বলেন, ‘সরকারের গণপরিবহনের ভালো বিকল্প তৈরি করতে পারেনি বলে মোটরসাইকেল বেড়ে যাচ্ছে। তবে মোটরসাইকেল অবশ্যই ঝুঁকিপূর্ণ একটি বাহন। এর দুর্ঘটনায় ৩০ শতাংশ বেশি শরীরের ক্ষয়ক্ষতি হয়।’