স্মার্টফোন বাজারে একের পর এক চমক দিচ্ছে দেশীয় প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন। সাশ্রয়ী মূল্যে সর্বাধুনিক ফিচারে সমৃদ্ধ হ্যান্ডসেট উৎপাদন ও বাজারজাত করে ওয়ালটন অর্জন করেছে প্রযুক্তিপ্রেমীদের আস্থা। এরই ধারাবাহিকতায় নতুন মডেলের আরেকটি মিড রেঞ্জের ফোন বাজারে ছাড়ার ঘোষণা দিলো ওয়ালটন। যাতে ব্যবহৃত হয়েছে বড় পর্দা, বিশাল ব্যাটারি, ট্রিপল ব্যাক ক্যামেরা, শক্তিশালী র্যাম-রমসহ নজরকাড়া সব ফিচার। ফোনটির প্রি-বুকে থাকছে আকর্ষণীয় মূল্যছাড়।
ওয়ালটন সেল্যুলার ফোন বিক্রয় বিভাগের প্রধান আসিফুর রহমান খান জানান, ‘প্রিমো আরএমফোর’ মডেলের ওই ফোনটির দাম ধরা হয়েছে ১০,৫৯৯ টাকা। এখন নেয়া হচ্ছে প্রি-বুক। প্রি-বুক দেয়া ক্রেতাদের জন্য থাকছে ১০০০ টাকা মূল্যছাড়। ফলে এর দাম পড়বে মাত্র ৯,৫৯৯ টাকা।
তিনি জানান, অনলাইনের মাধ্যমে ঘরে বসেই ওয়ালটন ই-প্লাজা (eplaza.waltonbd.com) থেকে বিনামূল্যে ফোনটির প্রি-বুক দেয়া যাচ্ছে। পাশাপাশি দেশের যে-কোনো ওয়ালটন প্লাজা, মোবাইলের ব্র্যান্ড ও রিটেইল আউটলেটে ১ হাজার টাকা জমা দিয়ে ফোনটির আগাম ফরমায়েশ দেয়ার সুযোগ রয়েছে।
ওয়ালটন সূত্রে জানা গেছে, দুর্দান্ত পাওয়ার ব্যাকআপের জন্য ‘প্রিমো আরএমফোর’ মডেলের ওই ফোনে ব্যবহৃত হয়েছে ৫৯৫০ মিলিঅ্যাম্পিয়ারের লিথিয়াম পলিমার ব্যাটারি। যাতে রয়েছে রিভার্স চার্জিং সুবিধা। ফলে এটির মাধ্যমে পাওয়ার ব্যাংক হিসেবে অন্য ডিভাইসে চার্জ দেয়া যাবে।
স্মার্টফোনটিতে ব্যবহৃত হয়েছে ৬.৫ ইঞ্চির ১৯.৫:৯ রেশিওর ভি-নচ ডিসপ্লে। এইচডি প্লাস পর্দার রেজ্যুলেশন ১৬০০ বাই ৭২০ পিক্সেল। আইপিএস প্রযুক্তির স্মার্টফোনটিতে রয়েছে ধূলা ও আঁচররোধী ২.৫ডি কার্ভড গ্লাসও। ফলে বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার এবং ভিডিও দেখা, গেম খেলা, বই পড়া বা ইন্টারনেট ব্রাউজিংয়ে অনন্য অভিজ্ঞতা পাবেন গ্রাহক।
ফোনটি অ্যান্ড্রয়েড ১০ অপারেটিং সিস্টেমে পরিচালিত। ফলে এই ফোনের কার্যক্ষমতা ও গতি হবে অনেক বেশি। এতে ব্যবহৃত হয়েছে অত্যন্ত স্লিম (১২ ন্যানোমিটার) ৬৪ বিটের ১.৮ গিগাহার্টজ গতির এআরএম কোর্টেক্স-এ৫৩ অক্টাকোর প্রসেসর। সঙ্গে রয়েছে ৪ জিবি র্যাম এবং আইএমজি পাওয়ার ভিআর জিই৮৩২০ গ্রাফিক্স। ফলে বিভিন্ন অ্যাপস ব্যবহার, ইন্টারনেট ব্রাউজিং, থ্রিডি গেমিং এবং দ্রুত ভিডিও লোড ও ল্যাগ-ফ্রি ভিডিও স্ট্রিমিং সুবিধা পাওয়া যাবে। ফোনটির অভ্যন্তরীণ মেমোরি ৬৪ গিগাবাইটের। যা মাইক্রো এসডি কার্ডের মাধ্যমে ২৫৬ গিগাবাইট পর্যন্ত বাড়ানো যাবে।
ফোনটির পেছনে রয়েছে এলইডি ফ্ল্যাশযুক্ত এফ ২.০ অ্যাপারচার সমৃদ্ধ পিডিএএফ প্রযুক্তির ৫পি লেন্সযুক্ত অটোফোকাস ট্রিপল ক্যামেরা। এর ১৩ মেগাপিক্সেলের প্রধান ক্যামেরায় রয়েছে সনি ১/৩.০৬ ইঞ্চির সেন্সর। যা দেবে উজ্জ্বল, ঝকঝকে রঙিন ছবি। ৫ মেগাপিক্সেলের দ্বিতীয় ক্যামেরায় ওয়াইড-অ্যাঙ্গেলে ছবি তোলা যাবে। আর ০.৩ মেগাপিক্সেলের তৃতীয় ক্যামেরায় আছে ডেপথ সেন্সর। আকর্ষণীয় সেলফির জন্য সামনে রয়েছে এফ ২.২ অ্যাপারচার সমৃদ্ধ পিডিএএফ প্রযুক্তির ৪পি লেন্সযুক্ত ৮ মেগাপিক্সেলের সনি ক্যামেরা। যা অল্প আলোতেও দেবে নিখুঁত সেলফি। উভয় ক্যামেরায় ফুল এইচডি ভিডিও ধারণ করা যাবে। রয়েছে বিএসআই সেন্সর, বোকেহ, বিউটি, কিউট, টাচ ফোকাস, টাচ ক্যাপচার, ভলিউউম ক্যাপচার, ফিঙ্গারপ্রিন্ট ক্যাপচার, সেলফ টাইমার, গ্রিড লাইন, হোয়াইট ব্যালান্স,ফেস ডিটেকশন, ডিজিটাল জুমসহ অসংখ্য আকর্ষণীয় ফিচার।
কানেক্টিভিটি হিসেবে আছে ওয়াই-ফাই ৮০২.১১, ব্লুটুথ ভার্সন ৪, ওয়ারলেস ডিসপ্লে, ল্যান হটস্পট, ওটিএ এবং ওটিজি। সেন্সর হিসেবে রয়েছে প্রোক্সিমিটি, ওরিয়েন্টেশন, লাইট (ব্রাইটনেস), এক্সিলারোমিটার (থ্রিডি), ফিঙ্গারপ্রিন্ট স্ক্যানার, জিপিএস, এ-জিপিএস নেভিগেশন ইত্যাদি।
হ্যান্ডসেটটি ডার্ক গ্রিন, নাইট ব্লু এবং ব্ল্যাক এই তিনটি আকর্ষণীয় রঙে বাজারে আসছে। এর অন্যান্য ফিচারের মধ্যে রয়েছে ভিওএলটিই বা ভোল্টি সাপোর্টসহ ডুয়াল ফোরজি সিম, মেমোরি কার্ডের জন্য আলাদা স্লট, রেকর্ডিং সুবিধাসহ এফএম রেডিও, ফুল এইচডি ভিডিও প্লে-ব্যাক, স্মার্ট ওয়েক আপ, মোশন জেসচার, ডার্ক মোড, ফোকাস মোড, ফুল স্ক্রিন জেসচার নেভিগেশন ইত্যাদি।
দেশে তৈরি এই স্মার্টফোনে রয়েছে বিশেষ রিপ্লেসমেন্ট সুবিধা। স্মার্টফোন কেনার ৩০ দিনের মধ্যে ত্রুটি ধরা পড়লে ফোনটি পাল্টে ক্রেতাকে নতুন আরেকটি ফোন দেয়া হবে। এছাড়াও, ১০১ দিনের মধ্যে প্রায়োরিটি বেসিসে ৪৮ ঘন্টার মধ্যে ক্রেতা বিক্রয়োত্তর সেবা পাবেন। তাছাড়া, স্মার্টফোনে এক বছরের এবং ব্যাটারি ও চার্জারে ছয় মাসের বিক্রয়োত্তর সেবা তো থাকছেই।