বিশ্বব্যাপী নারী উদ্যোক্তাদের তালিকায় তলানিতে রয়েছে বাংলাদেশ। নারী উদ্যোক্তাদের তুলনামূলক অবস্থানে ভারত, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়ার মতো দেশ থেকেও পিছিয়ে রয়েছে বাংলাদেশ। ‘দ্য মাস্টারকার্ড ইনডেক্স অব ওমেন এন্ট্রাপ্রেনিওর্স ২০২০’ তালিকায় ৫৮টি দেশের মধ্যে বাংলাদেশ সবচেয়ে পেছনে অর্থাত্ ৫৮তম অবস্থানে রয়েছে। গত বছর এই তালিকায় ৫৭তম অবস্থানে থাকলেও এবার আরো এক ধাপ পিছিয়ে গেছে বাংলাদেশ।
গতকাল সোমবার সিঙ্গাপুর থেকে প্রকাশিত ঐ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিশ্বব্যাপী ৮৭ শতাংশ নারী উদ্যোক্তা কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পর্যটন, খুচরা ব্যবসাসংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তারা। ভার্চুয়াল জগতে ডিজিটাল জেন্ডার গ্যাপ বাড়ছে। সেই সঙ্গে শিশুদের প্রতি দায়িত্বশীলতা আগের চেয়ে অনেক বেশি নিতে হচ্ছে নারীদের। এ ধরনের সমস্যা তুলনামূলক নারীদের বেশি ক্ষতিগ্রস্ত করেছে।
টানা চতুর্থবারের মতো এমন সূচক প্রকাশ করল মাস্টারকার্ড। এবারের সূচকে বিশ্বব্যাপী নারী উদ্যোক্তাদের সামাজিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ততা, সমস্যা ও সম্ভাবনাগুলো উঠে এসেছে। এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলের ১৫টি দেশসহ ৫৮টি দেশের তথ্য নিয়ে সূচকটি তৈরি করা হয়েছে। প্রতিবেদন অনুযায়ী ইসরাইল আগের বছরের তুলনায় ৩ ধাপ এগিয়ে ১ম স্থানে উঠে এসেছে। দ্বিতীয় শীর্ষ তালিকায় রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এর পর শীর্ষ দশে রয়েছে সুইজারল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, পোল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, কানাডা, সুইডেন, অস্ট্রেলিয়া ও স্পেন।
ইসরাইল আগামী দুই বছরে নারী উদ্যোক্তা দ্বিগুণ করার পরিকল্পনা নিয়েছে। মূলত এসএমই খাতের নারী উদ্যোক্তাদের প্রাতিষ্ঠানিক সহায়তা বাড়িয়ে দেশটি এগিয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং নিউজিল্যান্ড গত বছর প্রথম ও দ্বিতীয় স্থানে থাকলেও এবার যথাক্রমে দ্বিতীয় ও চতুর্থ স্থানে নেমে গেছে।
মূলত উন্নত দেশগুলো এই তালিকায় এগিয়ে রয়েছে। দেশগুলোতে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য সহায়ক পরিবেশ তৈরি, উচ্চ পর্যায়ে নারীদের উপস্থিতি উদ্যোক্তাদের উত্সাহিত করেছে। সেই সঙ্গে নারীবান্ধব বিনিয়োগ পরিবেশ দেশগুলোকে এগিয়ে রেখেছে। ১০০ স্কোরের ভিত্তিতে তালিকা করা হয়েছে, যেখানে ৫৮ দেশের মধ্যে ৩৪টি দেশের অবস্থান ৬০ থেকে ৭০ স্কোরের মধ্যে। এই স্কোরের মধ্যে অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া, চীন, সিঙ্গাপুর, ভিয়েতনাম এবং মালয়েশিয়া রয়েছে।
সবচেয়ে কম স্কোর ৫০ থেকে ৬০-এর মধ্যে রয়েছে ১৩টি দেশ। এই তালিকায় জাপান, ভারতও রয়েছে। সবমিলিয়ে ৫৮টি দেশের মধ্যে এক বছরের ব্যবধানে উন্নতি হয়েছে ১২টি দেশের। পাঁচটি দেশের পাঁচ ধাপ বা তার বেশি অবনতি হয়েছে। এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে এক বছরের ব্যবধানে সবচেয়ে বেশি এগিয়েছে চীন, ছয় ধাপ। সবচেয়ে বেশি অবনতি হয়েছে সিঙ্গাপুরের। দেশটি এবার ১২ ধাপ পিছিয়েছে। ফিলিপাইন পিছিয়েছে ১০ ধাপ, হংকং পিছিয়েছে আট ধাপ এবং ভিয়েতনাম সাত ধাপ। সবমিলিয়ে এশিয়া প্যাসিফিক অঞ্চলে শীর্ষে রয়েছে যথাক্রমে নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, থাইল্যান্ড, তাইপে, হংকং, ফিলিপাইন, ইন্দোনেশিয়া, চীন, সিঙ্গাপুর, ভিয়েতনাম, মালয়েশিয়া, উত্তর কোরিয়া, জাপান, ভারত ও বাংলাদেশ।