বাংলাদেশের পণ্য আমাদের ঐতিহ্য আমাদের গৌরব। বাংলাদেশর ৬৪ জেলায় অনেক অনেক পণ্য রয়েছে যেগুলো সম্পদ আমাদের দেশের জন্য। প্রচারের অভাবে পণ্যগুলো অনেকের কাছে অজানা এবং সঠিকভাবে প্রচারণা পাচ্ছে না। কিন্তু এখন দিন দিন দেশীয় পণ্যের চাহিদা বেড়েই চলেছে। রাফি হক দেশীয় পণ্যের শুভাকাঙ্ক্ষী ও ব্যবহারকারী। গতবছর ছিল তার জন্য দেশি পণ্যের কেনাটাকাটার বছর। তিনি দেশি পন্য নিজে ব্যবহার করার পাশাপাশি বিদেশের মাটিতে ছড়িয়ে দেবার স্বপ্ন দেখছেন তিনি ।
টেকজুমঃযদিও ব্যবহার করতে পারছেন না তারপরও প্রবাসে বসে অনলাইনে দেশি পণ্যে কেনাকাটা করছেন এর কারণ কি?
রাফি হক:নিজে পছন্দ করতে পারছি, সরাসরি বাসাতে ডেলিভারি হচ্ছে, বাইরে যেতে হচ্ছে না ,মানসম্মত পণ্য পাচ্ছি ,কারোর উপর ভরসা করতে হচ্ছে না। এছাড়া দেশ থেকে পণ্য কিনলে আমাদের কষ্টার্জিত বৈদেশিক মুদ্রা আমাদের দেশেই যাবে এবং তা আমাদের দেশের উন্নয়নে কাজে লাগবে। মূলত এইসব কারণেই এখন আমি অনলাইনে দেশি পণ্য কেনাকাটা করছি।
টেকজুমঃগত এক বছরে দেশি পণ্যের কেনাকাটার টপ লিস্টে কি কি ছিলো?
রাফি হক:বিভিন্ন উৎসব উপলক্ষে প্রিয়জনদের জন্য জামা কাপড় এবং বিভিন্ন দেশীয় খাবার। যেমন, জামদানি শাড়ি, শেরপুরের তুলসীমালা চাল, বগুড়ার দই, রাজশাহীর আম , পার্বত্য চট্টগ্রামের কাজু বাদামসহ আরো অনেক পণ্য।
টেকজুমঃ বিদেশের বড় বড় ব্র্যান্ডের পরিবর্তে দেশের ফেসবুক ভিত্তিক উদ্যোক্তাদের কেন বেচে নিচ্ছেন কেনাকাটায়?
রাফি হক:দেখুন, বড় বড় ব্র্যান্ডগুলো কিন্তু একদিনে বিখ্যাত হয়নি। তারা তাদের পণ্যগুলো মানসম্মত করে কখন ক্রেতাদের আস্থা অর্জন করতে পেরেছে, তখনি কিন্তু মানুষ তাদের নাম জেনেছে এবং ধীরে ধীরে তারা এক একটি ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। তাই, আমরা যদি আমাদের নবীন উদ্যোক্তাদের পাশে থাকি, তবে দুই থেকে তিন বছরের মধ্যে আমরা আমরা এই ফেইসবুক ভিত্তিক উদ্যোক্তাদের মধ্যে থেকেই কিছু বড় বড় ব্র্যান্ড পেয়ে যাবো একদিন।
টেকজুমঃদেশীয় পণ্যের উদ্যোক্তাদের থেকে কেনাকাটা করে অনাকাঙ্ক্ষিত কোন ঘটনা ঘটেছে?
রাফি হক: না, এখন পর্যন্ত কোনো অনাকাঙ্খিত ঘটনার সম্মুখীন হয়নি। কারণ, আমি প্রত্যকের প্রোডাক্ট রিভিউ দেখেই কিনি। আমি কোনো সময়ই অনলাইন থেকে কোনো পণ্য অর্ডার করতাম না। আমার সেই আস্থা ছিল না। কিন্তু রাজিব ভাইয়ের আমন্ত্রণে, যখন নিশা আপুর প্লাটফর্ম উই -তে যোগ হলাম, তখন থেকেই আমার অনলাইন পণ্যের প্রতি আস্থা আসে এবং আমি কেনাকাটা আরম্ভ করি। এখন প্রশ্ন করতে পারেন, অনলাইনে কেনাকাটার আগে তাহলে আমি কিভাবে কিনতাম। আমার বিভিন্ন মানুষকে রিকোয়েস্ট করে কেনাকাটা করতাম।
টেকজুমঃগত বছর আনুমানিক কয় জাতের প্রতিষ্ঠান থেকে কত প্রকার দেশি পণ্য কেনা কাটা করেছেন?
রাফি হক:বড় কঠিন প্রশ্ন। কারণ, আমার যখন যা দরকার ছিল, আমি তাই কিনেছি এবং কিনবো। আমি সুম্পূর্ণ আমাদের বাক্তিগত কাজের জন্য কিনি, কোন সময় হিসাব করিনি। তবে আনুমানিক, ৫০ থেকে ৬০ টি প্রতিষ্ঠান থেকে ৬০ থেকে ৭০ রকমের পণ্য কিনেছি।
টেকজুমঃযাদের উপহার দিয়েছেন তাদের ফিডব্যাক কি ছিল?
রাফি হক:আমার সব পণ্যই আমি উই গ্রূপের উদ্যোক্তাদের থেকেই কিনেছি। এখন পর্যন্ত কোনো পণ্য সম্পর্কে কোনো নেতিবাচক খবর পাইনি। কারণ, আমাদের দেশি পণ্য কিন্তু কোনো অংশে কম না। আমরা যদি কিছু অসাধু ব্যাবসায়িদের কথা বাদ দেই তবে আমাদের যে কোনো দেশি পণ্য বিশ্ব দরবারে প্রশংসার দাবি রাখে নিঃসন্দেহে।
টেকজুমঃদেশ থেকে কেনাকাটা করে প্রবাসে নিয়েছেন কোন পণ্য? যদি নিয়ে থাকেন ব্যবহার করার পর অনুভূতি কেমন ছিল?
রাফি হক:জি, সেটা অনেক আগে থেকেই নেই। শিমুল তুলার বালিশ , লেপ, বিছানার চাদর, নকশি কাঁথা থেকে শুরু করে, শাড়ি, পাঞ্জাবি, শার্ট, প্যান্ট এবং বিভিন্ন ধরণের মিষ্টান্ন। প্রবাসের দিনে বা রাতে যে কোনো অংশেই দেশি পণ্য আমার পরিবারের সাথে জড়িয়ে থাকে প্রতিদিন।