আরিফা খাতুন ময়মনসিংহ প্রতিনিধি, টেকজুম ডটটিভি// বাংলাদেশের জাতীয় ফল কাঁঠাল। এটি গ্রীষ্মকালীন ফল।কথায় আছে গরমে একদম কাঁঠাল পাকার মতো পেকে যাচ্ছি। এই কথা থেকেই বোঝা যায় গরম যখন অনেক বেশী তখন কাঁঠাল পাঁকার সময়। কাঁঠালে রয়েছে ভিটামিন এ,ভিটামিন -সি থায়ামিন, রাইবোফ্লোবিন, আয়রন, ক্যালসিয়াম ও পটাসিয়াম। ঔষধি গুনাগুন সম্পন্ন এই কাঁঠাল কাঁচা ও পাকা ২ ভাবেই খাওয়া যায়।
ময়মনসিংহের ভালুকাকে কাঁঠালের রাজধানী বলা হয়।এখানকার কাঁঠাল রাজধানী ঢাকা সহ দেশের বিভিন্ন জেলায় ট্রাকে করে পৌঁছে যায়। গ্রীষ্ম কালে টানা ৪ মাস কাঁঠালের চাহিদা থাকে। কিন্তু চাহিদা অনুযায়ী সবাই হাতের নাগালে কাঁঠাল পায় না,আবার কাঁঠাল বাগানের মালিকেরাও ন্যায্য মূল্যে কাঁঠাল বিক্রি করতে পারে না।
তাই ই-কমার্সে কাঁঠালের বাজার জনপ্রিয় করে তুলতে পারলে মানুষ খুব সহজেই ভেজালহীন কাঁঠাল পেতে পারে।ফলে কাঁঠালের চাহিদাও বাড়তে পারে।
শুধু যে পাকা কাঁঠাল খাওয়া যায় তা নয় বরং কাঁচা কাঁঠালও খাওয়া যায়। কাঁচা কাঠালের তরকারি,কাঁঠালের চিপস,কাঁঠালের বিচি পর্যন্ত খাওয়া যায়। পাকা কাঁঠালের কাঁটাযুক্ত খোসা গুলো গরু ছাগলের খাবার হিসেবে দেওয়া হয়। কাঁঠাল এমন একটা ফল যার কোনো কিছুই তেমন ফেলানু যায় না।
ভালুকার ভরাডোবা,হবিরপুর,মল্লিকবাড়ি এসব ইউনিয়নে প্রতিটি গ্রামেই গ্রীষ্মকালে অনেকটা কাঁঠালের বিপ্লব ঘটে যায়।ভালুকায় প্রায় ২ হাজার ২শ একর জমিতে কাঠাল উৎপন্ন হয়। যার পরিমান প্রায় ১২ হাজার মেট্রিকটন। বিপুল সম্ভাবনাময় এই খাত ময়মনসিংহের ই-কমার্সকে সমৃদ্ধ করতে পারে। সারাদেশে এর পরিচিতি বাড়তে পারে বেশী বেশী প্রচারের মাধ্যমে।
কাঁঠাল এশিয়া মহাদেশের অনেক দেশেই একটি সুস্বাদু ফল হিসেবে পরিচিত। বাংলাদেশ, ভারত,শ্রীলঙ্কা, ইন্দোনেশিয়া, মালয়েশিয়া ও ফিলিপাইন সহ অনেক দেশেই কাঁঠালের চাহিদা রয়েছে। তবে সবাই যে পাঁকা কাঠাল খায় তা নয়। এসব দেশে কাঁঠালের তরকারি,চিপস ও আইসক্রিম জাতীয় খাবার, কাঠাঁলের রসের কেক (পিঠা),কাঁঠালের বিচির কারি, আবার কাঁচা কাঁঠালের কারি সহ বিভিন্ন ভাবে খাওয়া হয়।
কাঁচা কাঁঠালকে বা কাঁঠালের বিচিকে রেডি টু কুক হিসেবে বা কাঁঠালের তৈরি চিপস গ্রাহকের কাছে পৌছে দেওয়া সম্ভব ই-কমার্সের মাধ্যমে। কাঁঠাল যেহেতু এশিয়া মহাদেশের বিভিন্ন দেশে পরিচিত তাই কাঁঠালের বিভিন্ন আইটেম তৈরি করতে পারলে ই-কমার্সের মাধ্যমে সারাদেশে ছড়িয়ে দেওয়া সম্ভব। আবার দেশের চাহিদা পূরন করে বিদেশেও কাঁঠালের তৈরি বিভিন্ন ধরনের খাবার প্যাকেট জাত পণ্য হিসেবে রপ্তানি করা সম্ভব।
ময়মনসিংহের ভালুকায় কাঁঠালের উৎপাদন অনেক ভালো হলেও সেখানে দেখা যায় খুব অল্পদামে কাঁঠাল বিক্রি হয়, অনেক সময় অনেকে কাঁঠাল বিক্রিও করতে পারে না ন্যায্য দাম না পাওয়ায়। ফলে কাঁঠাল গাছগুলো পুরোনো হয়ে গেলেও নতুন কাঁঠাল গাছ রোপন করতেও মানুষ আগ্রহী হয় না। কিন্তু এই সেক্টরে তরুণ ই-কমার্স উদ্যোক্তারা এগিয়ে আসলে তাদের যেমন কর্মসংস্থান হবে তেমনি সেসব এলাকার কাঁঠাল বাগান মালিকরাও আর্থিকভাবে লাভবান হবে।
ই-কমার্সের কাঁঠাল নিয়ে কাজ করে এমন উদ্যোক্তা হাতে গুনেও পাওয়া যাবে কিনা সন্দেহ আছে। ময়মনসিংহের ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রিতে সম্ভাবনা এই খাতকে তুলে আনা সম্ভব। শুধু প্রয়োজন কিছু ডেডিকেটেড উদ্যোক্তা। চাপাইনবাবগঞ্জের আম যদি ই-কমার্সের মাধ্যমে সারাদেশে ছড়িয়ে পরতে পারে তাহলে ময়মনসিংহের কাঁঠাল কেনো পারবে না। কিছু ডেডিকেটেড উদ্যোক্তা ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমে ভালুকার কাঁঠালকে সারাদেশে পরিচিত করতে পারে এবং কাঁঠাল দিয়ে কি ধরনের খাবার তৈরি করা যায় সে সম্পর্কে মানুষকে জানাতে পারে ই-কমার্স এর মাধ্যমে। এতে করে কাঁঠালের চাহিদা বাড়বে, ফলে এদিকে কিছু উদ্যোক্তা কাজ করতে আগ্রহী হবে, কিছু মানুষের কর্মসংস্থান হবে এবং কাঁঠালবাগানের মালিকসহ উদ্যোক্তারা লাভবান হবে।