ইফফাত শারমিন, গাজীপুর জেলা প্রতিনিধি,টেকজুম ডটটিভি// নবম শ্রেণীর ব্যাবসায় পরিচিত এবং ব্যাবসায় উদ্যোগ বই থেকে পাওয়া “উদ্যোক্তা” এবং “আত্মকর্মসংস্থান” এই শব্দ দুটোর প্রতি সেই কিশোরী বয়স থেকে ভালবাসা জন্মে উদ্যোক্তা মৌরী মনিকা কস্তার।
জন্ম তার গাজীপুর জেলার কালীগঞ্জ থানার অধীন তুমিলিয়া গ্রামে। পাচঁ বছর বয়সে বাবার সরকারী স্কুলের শিক্ষকতার সুবাদে বদলি হয়ে স্বপরিবারে চলে যান ঢাকার মিরপুরে। ঢাকার হলিক্রস স্কুল ও কলেজ থেকে ব্যবসায় শিক্ষা বিভাগে এস.এস.সি এবং এইচ.এস.সি পাশ করেন। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজীতে অর্নাস করা অবস্থায় প্রথম বর্ষেই একটি খণ্ডকালীন চাকুরীতে যোগ দেন। যদিও পরবর্তীতে সেখানে স্থায়ীভাবে নিয়োগ পেয়েছিলেন তবে অন্যের অধীনে কাজ করে তিনি আনন্দ পাচ্ছিলেন না। আবার, “উদ্যোক্তা” এবং “আত্মকর্মসংস্থান” শব্দের হাতছানি সবসময় থাকলেও কি নিয়ে এবং কিভাবে এর যাত্রা শুরু করবেন ঠিক বুঝে উঠতে পারছিলেন না মৌরী। এরই মাঝে কোভিড-১৯ প্যান্ডামিক পরিস্থিতি শুরু হয়ে যায়। স্বাভাবিকভাবেই চাকুরীতে নানান প্রতিবন্ধকতা শুরু হয়। সবকিছু ছেড়েছুড়ে দিয়ে নিজের গ্রামের বাড়ি গাজীপুরে ফিরে আসেন মৌরী মনিকা কস্তা এবং তার স্বামী। শুরু হয় তাদের নতুন পথচলা।
আকাঁআকিঁর প্রতি দূর্বলতা মৌরীর ছোটবেলা থেকেই, সেইসাথে অনলাইনে হ্যান্ডপেইন্ট এর ব্যাপক চাহিদা তাকে তার উদ্যোক্তা জীবন শুরুর সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করেছে। হ্যান্ডপেইন্টেড পোশাক, গয়না ও ঘর সাজানোর পণ্য নিয়ে তিনি “পুতুলা” নামক অনলাইন পেজ এর যাত্রা শুরু করেন।
রাজধানী ঢাকা থেকে ৩৪ কিলোমিটার এর দূরত্বে থেকে নিজের উদ্যোগ পরিচালনা করতে গিয়ে মৌরীকে সবথেকে বেশী সমস্যার মুখোমুখি হতে হয় ডেলিভারি সার্ভিস নিয়ে। তার ওপর পণ্য সোর্সিং এবং আনুষাঙ্গিক সকল কিছুর জন্য তাকে নির্ভর করতে হয় শহরের উপর, যা সময় এবং খরচ সাপেক্ষ। এছাড়াও ঘন ঘন লোডশেডিং ও ইন্টারনেটের নিরবিচ্ছিন্ন সংযোগ না থাকাও তার অনলাইন ব্যবসায়ের জন্য একটি বড় সমস্যা।
এ সকল সমস্যা এবং সম্ভাবনাকে সমন্বয় করেই মৌরী মনিকা কস্তা তার উদ্যোগ “পুতুলা”কে নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছেন। নিজের উদ্যোগ সম্পর্কে মৌরী মনিকা কস্তা বলেন, “পুতুলা আমার স্বপ্নের ও ভালোলাগার জায়গা। আমার নামের সাথে আমার উদ্যোগের নামটি একই সমান্তরালে উচ্চারিত হবে এটা আমার স্বপ্ন। অনলাইন এর পাশাপাশি নিজের একটি অফলাইন শপ করার ইচ্ছে যেখানে সবাই পুতুলার নিজস্ব পণ্যগুলো আপন করে নিতে পারবে হাতে স্পর্শ করে।”
যদিও শুরুতে মৌরীর উদ্দেশ্য ছিলো আত্মকর্মসংস্থান তৈরি তবে বর্তমানে নিজের কর্মসংস্থান এর পাশাপাশি আরও একজন কর্মীর কর্মসংস্থান তিনি নিশ্চিত করতে পেরেছেন, যে নিয়মিতভাবে তার আকাঁ পোশাকগুলোর টেইলর হিসেবে কাজ করেন।