কিছুদিন আগে বিশ্বের সবচেয়ে জনপ্রিয় সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকের ৫৩৫ মিলিয়ন ব্যবহারকারীর ব্যক্তিগত তথ্য ফাঁস হয়েছে। ফেসবুক কর্তৃপক্ষ দাবি, করছে যে এই তথ্যগুলো ২০১৯ সালের। কিন্তু পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছে যে ফাঁস হওয়া ফোন নম্বর, ই-মেইলের অধিকাংশ এখনও সক্রিয় রয়েছে।
এমন সূত্র ধরে এবার ইউনিভার্সিটি অফ কেন্টের সাইবার সিকিউরিটি বিভাগের অধ্যাপক জেসন নার্স সোফোজ নেকেড নামের এক সিকিউরিটি ব্লগে অ্যাকাউন্ট হ্যাক হওয়া সংক্রান্ত আরও একটি আতঙ্কজনক তথ্য প্রকাশ্যে এনেছেন।
তিনি জানিয়েছেন যে সেলফি, বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেয়া বা ঘুরতে যাওয়ার ছবি, পার্টি করার ছবি, পোষ্যের ছবি, পোষ্যের ভিডিও এই সব সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করা নিয়েও সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত। কেননা, এগুলো থেকেও হ্যাকাররা সংশ্লিষ্ট ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে তাকে বিপদে ফেলতে পারে।
নার্স জানিয়েছেন যে সাধারণত আমরা যেসব ছবি বা ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করে থাকি আর তা যদি ব্যক্তিগত হয়, তবে এগুলো থেকে আমাদের গতিবিধি, ফ্রেন্ড সার্কেল সম্পর্কে অবহিত হতে পারে হ্যাকাররা। এক্ষেত্রে একটার পর একটা পোস্টজুড়ে একটা সামগ্রিক তথ্য হাতে পায় হ্যাকাররা। এই কাজে তাদের প্রধান সহায়ক হয় পোস্টের সঙ্গে থাকা হ্যাশট্যাগ।
নার্সের দাবি এই হ্যাশট্যাগের সূত্র ধরেই প্রথমে আমাদের সোশ্যাল মিডিয়ার বৃত্তটি ছকে নেয় হ্যাকাররা। তারপর পরীক্ষা করে দেখে যে পরিচিত কারা সক্রিয় আছে এবং কারা সক্রিয় নেই আমাদের কনট্যাক্টে। এরপরের ধাপে শুরু হয় সরাসরি প্রতারণার জাল ফেলা।
নার্স বলছেন যে এই সব ক্ষেত্রে একেবারে সরাসরি অ্যাকাউন্ট যার নামে রয়েছে, সেই নাম ব্যবহার করে মেইল পাঠানো হয়। তাতে ব্যবহারকারীর মনে ওই মেইলের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে একটা জায়গা তৈরি হয়।
অনেক সময়ে সেসব মেইল ক্লিক করা মাত্রই অ্যাকাউন্ট হ্যাক হতে শুরু করে। তবে বেশিরভাগ সময়েই এই সব মেইলে অ্যাকাউন্ট আপডেট রাখা, স্টোরেজ ক্লিয়ার করা, ভাইরাস ঠেকানোর মতো নানা সেবা প্রদানের টোপ ফেলা হয় কিছু লিংক পাঠিয়ে।
সেসব লিংকে ক্লিক করলে তারপর অ্যাকাউন্ট হ্যাক হতে বেশি সময় লাগে না। অনেক সময়ে আবার অনেক দিন ধরে যোগাযোগে না থাকা পরিচিত কারও প্রোফাইলের মাধ্যমেও এমন লিংক পাঠিয়ে থাকে হ্যাকাররা। এক্ষেত্রে সতর্ক থাকার উপায় একটাই- এই সব মেইলে থাকা লিংক ক্লিক না করা।