ই-কমার্স সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো এখন থেকে বছরে সর্বোচ্চ ১০ হাজার ডলার বৈদেশিক ব্যয় করতে পারবে। নতুন এই সুযোগ পাবে কেবল ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ই-ক্যাব) সদস্যরা। এজন্য ই-ক্যাবের সুপারিশের প্রয়োজন হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মূদ্রানীতি বিভাগ ২ এপ্রিল রবিবার এক প্রজ্ঞাপন জারি করে ব্যাংকগুলোকে এই নির্দেশনা দেয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ২ এপ্রিলের এফই-১৭ নং প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, এখন থেকে বাৎসরিক এই কোটার মধ্যে থেকে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের মনোনীত কর্মকর্তার নামে অনধিক দুই হাজার মার্কিন ডলারের আন্তর্জাতিক ক্রেডিট ও প্রিপেইড কার্ড ইস্যু করা যাবে। কার্ডের বৈদেশিক মুদ্রার ব্যয়সীমা হবে ১০ হাজার মার্কিন ডলার। অনুমোদিত ডিলার ব্যাংকগুলো বৈদেশিক মুদ্রা লেনদেন বিধিবিধান, কর কর্তন, জমা ও ই-ক্যাবের সুপারিশসহ বিষয়গুলো বিবেচনা করে উক্ত সুবিধা প্রদান করতে পারবে।
ই-ক্যাবের সভাপতি শমী কায়সার বলেন, ই-ক্যাব সদস্যদের অনেক দিনের দাবি ছিল এটা। একজন ই-কমার্স উদ্যোক্তার ডিজিটাল মার্কেটিংসহ নানা কাজে বৈদেশিক ব্যয়ের প্রয়োজন হয়। মার্কেটপ্লেস ও ডিজিটাল মার্কেটিং সেবায় নিয়োজিত প্রতিষ্ঠানের জন্য এই সীমা যথেষ্ঠ নয়। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের এই সিদ্ধান্তকে আমরা স্বাগত জানাই।
ই-ক্যাবের সহ-সভাপতি সাহাব উদ্দীন শিপন বলেন, এ ব্যাপারে বেশ কয়েকদফা আলোচনার পর অবশেষে বাংলাদেশ ব্যাংক সার্কুলার দিয়েছে। ই-ক্যাব থেকে আমরা ৮ টি পয়েন্ট ৬ পৃষ্ঠায় যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছিলাম। আমরা সর্বনিন্ম ১০ হাজার ডলার থেকে ৫০ হাজার ডলার পর্যন্ত এই সীমার ব্যাপারে আমাদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেছি। তবুও প্রাথমিক ভাবে এই সিদ্ধান্ত আমরা ইতিবাচকভাবে দেখছি।
ই-ক্যাবের অর্থ সম্পাদক মোহাম্মদ আব্দুল হক অনু বলেন, এই প্রজ্ঞাপনের কারণে এখন থেকে ই-ক্যাব সদস্যরা প্রতি বছর ১০ হাজার ডলার বৈদেশিক ব্যয় করতে পারবে। তারা বৈদেশিক অনলাইন মার্কেট প্লেস থেকে কেনাকাটা ও যেকোন ব্যয়ের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকার অনুমোদিত ব্যবসায়িক প্লাটফর্মে বিজ্ঞাপন বাবদ এই ১০হাজার ডলার খরচ করতে পারবে। এটা ই-কমার্স উদ্যোক্তাদের জন্য সহায়ক হবে।
ই-ক্যাবের ডিরেক্টর আশীষ চক্রবর্তী বলেন, আসলে একজন ই-কমার্স উদ্যোক্তার জন্য ডিজিটাল মার্কেটিং থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের ই-কমার্স থিম, টেম্পলেটসহ সফ্ট ও হার্ড পন্য আন্তর্জাতিক মার্কেটপ্লেস থেকে কিনতে হয়। সেজন্য এই সুবিধাটা অনেক জরুরি প্রয়োজন ছিল। এতে বাংলাদেশের ই-কমার্স সেক্টরে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।
গত বছর ফ্রেব্রুয়ারি থেকে এই বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করেছে ই-ক্যাব। এরমধ্যে ব্যাংকের বৈদেশিক মূদ্রা নীতি বিভাগের সাথে দুই দফা অনলাইন সভাও করে ই-ক্যাব। ই-ক্যাব থেকে ৫০ হাজার ডলার ব্যয়সীমার আবেদন করা হলে বাংলাদেশ ব্যাংক এই বিষয়ে যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করতে বলে। বিগত ১৮ সেপ্টেম্বর এই বিষয়ে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকে প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়। সর্বশেষ গত ১২ এপ্রিল ই-ক্যাবের রুরাল টু গ্লোবাল পলিসি কনফারেন্সে বিষয়টি বাংলাদেশ ব্যাংকের ডেপুটি গর্ভনরের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন ই-ক্যাব সভাপতি শমী কায়সার।