তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, আগে বলা হতো ‘লেখাপড়া করে যে, গাড়ি-ঘোড়ায় চড়ে সে’। এর বদলে এখন বলতে হয়, উদ্যোক্তা হয় যে, গাড়ি-ঘোড়া বানায় সে।
বুধবার (৯ জুন) বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্র্যান্ট (বিগ) ২০২১ ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী।
তরুণ উদ্যোক্তা ও উদ্ভাবকদের ডিজিটাল বাংলাদেশের অগ্রসৈনিক হিসেবে ঘোষণা করে পলক বলেন, উদ্যোক্তারা উচ্চ শিক্ষায় না গিয়ে উচ্চমার্ধ্যমিক উত্তীর্ণ হয়েই তারা হাইটেক পার্কের মাধ্যমে উদ্ভাবনী বাংলাদেশ গড়ে তুলবে। আর বঙ্গবন্ধু ইনোভেশন গ্রান্টের মাধ্যমে দেশ এবং বিশ্বের প্রয়োজনীয় সেবা উপহার দেবে এই উদ্যোক্তারাই।
পলক আরো বলেন, আজকের কোভিড দুর্যোগে মানুষের ঘরে ঘরে সেবা পৌঁছে দিচ্ছে উদ্যোক্তারা। সাফল্যের নজির স্থাপন করেছে ই-ভ্যালির মতো স্টার্টআপগুলো। তারা এখন ৫ কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এছাড়াও ওয়ালটন দেশের সীমানা পেরিয়ে এখন সিলিকনভ্যালিতে নিবন্ধিত হচ্ছে।
বড় বড় গ্রুপগুলো এখন অ্যাঞ্জেল ইনভেস্টমেন্ট করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী বলেন, উদ্যোক্তাদের বড় করে তুলতে দেশের প্রত্যেকটি হাইটেক পার্কে ছয় মাসের জন্য ফ্রি কো-ওয়ার্কিং স্পেস দেয়া হচ্ছে। দেশজুড়ে তরুণদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে উদ্যোক্তা ক্যাম্পাস গড়ে তুলছে স্টার্টআপ বাংলাদেশ।
তিনি বলেন, আমরা করোনকালে দেখেছি নতুন নতুন উদ্ভাবনগুলো আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।
ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে স্বাগত বক্তব্য দেন আইডিয়া প্রকল্প পরিচালক আব্দুর রাকিব। এসময় সংযুক্ত ছিলেন আইসিটি বিভাগের জ্যেষ্ঠ পরিচালক এন এম জিয়াউল আলম।
বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের নির্বাহী পরিচালক পার্থ প্রতিম দেবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রতিযোগিতার বিস্তারিত তুলে ধরেন বিগ সমন্বয়ক সিদ্ধার্থ গোস্বামী।
তিনি জানান, ১২ জুন থেকে ১৬ জুন পর্যন্ত বুটক্যাম্প, ২০ জুন থেকে আজকের ঘোষিত ৬৫টি স্টার্টআপদের নিয়ে শুরু হবে রিয়েলিটি শো। আর সেপ্টেম্বরে হতে পাবে গালা ইভেন্ট।
অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য দেন ই-ভ্যালি সিইও মোহাম্মাদ রাসেল, ওয়ালটন ডিজিটেক নির্বাহী পরিচালক প্রকৌশলী লিয়াকত আলী, স্টার্টআপ বাংলাদেশের ব্যবস্থাপনা পরিচালক টিনা এফ জাবিন।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, বিগ-২০২১ প্রতিযোগিতায় বাংলাদেশসহ ১৪২টি দেশে ক্যাম্পেইন শেষে প্রাথমিক পর্যায়ে দেশ-বিদেশ থেকে ৭ হাজারেরও বেশি স্টার্টআপ আবেদন করে যেখান থেকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ৫৬টি দেশ থেকে মোট ২৫৫টি প্রকল্প প্রাথমিকভাবে বাছাই করা হয়। সেখান থেকে দুই দফায় বাছাই শেষে ইতোমধ্যে নির্বাচন করা হয়েছে সেরা ১০টি আন্তর্জাতিক পর্যায়ের স্টার্টআপ, যারা সরাসরি যাবে গ্র্যান্ড ফিনালেতে।
অপরদিকে, দেশিয় পর্যায়ে স্টার্টআপ বাছাই হয় প্রাথমিকভাবে দুই দফায়। প্রথম পর্যায়ে ২৮ জন বিচারক ৫টি স্ক্রিনিং বোর্ডের মাধ্যমে বাছাই করেন ২৮৬টি দেশীয় স্টার্ট-আপ। সরকারি-বেসরকারি ৩৫ জন অভিজ্ঞ বিচারক ৬টি প্যানেলে বিভক্ত হয়ে এই স্টার্টআপগুলো থেকে বেছে নেন সেরা ৬৫টি স্টার্টআপ। আইডিয়া প্রকল্পের আওতাভুক্ত পোর্টফলিও স্টার্ট-আপের সেরা আরও ১০টি স্টার্ট-আপ অর্থাৎ মোট ৪৬টি স্টার্ট-আপকে নিয়ে হবে ‘বিগ ২০২১ গ্র্যান্ড ফিনালে’।
সবশেষে সেরা একটি স্টার্ট-আপ পাবে বিশেষ সম্মাননা এবং এক লাখ ইউএস ডলার সমমূল্যের অর্থ পুরস্কার। একই সাথে এই রিয়েলিটি শো’র মাধ্যমে নির্বাচিত হওয়া ২৬টি র্স্টাট-আপ ও আন্তর্জাতিক পর্যায় থেকে নির্বাচিত ১০টি বিজয়ী র্স্টাট-আপ প্রত্যেকে পাবে আইডিয়া প্রকল্পের আওতায় ১০ লাখ টাকা করে অনুদান।