মাস পেরিয়ে গেলেও ফোন আর এল না। আসবে কী করে? অর্ডার, পেমেন্ট সবই তো ভুয়ো সাইট থেকে করেছেন! ধরুন কোনও লিঙ্ক থেকে ই-কমার্স সাইটে ঢুকলেন। দেখলেন দামে অভাবনীয় ছাড় চলছে। সেলের সুযোগ নিতে সঙ্গে সঙ্গে পছন্দের ফোনটা কিনে নিলেন। অনলাইনে পেমেন্টও করে দিলেন। কিন্তু তারপরেই ভুল ভাঙল। মাস পেরিয়ে গেলেও ফোন আর এল না। আসবে কী করে? অর্ডার, পেমেন্ট সবই তো ভুয়ো সাইট থেকে করেছেন!
আজ্ঞে হ্যাঁ। নকল ই-কমার্স সাইটের মাধ্যমে এমনটাই করত এক প্রতারণা চক্র। ওয়েব ডিজাইনে পারদর্শী এই চক্র এমন নকল সাইটের মাধ্যমেই পাতত প্রতারণার ফাঁদ। আর এই করেই কোটি কোটি টাকার ‘ব্যবসা’ ফেঁদেছিল তারা। মঙ্গলবার মায়াপুরী ও নিলোথি থেকে প্রতারণা চক্রের মাথা পাঁচ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের বিরুদ্ধে ১০ হাজারেরও বেশি ব্যক্তিকে প্রতারিত করার অভিযোগ রয়েছে। গত তিন বছরে এভাবেই প্রায় ২৫ কোটি টাকা হাতিয়েছে তারা।
ই-কমার্স প্রতারণা চক্রের মাস্টারমাইন্ড বিজয় অরোরা (৩৭) এবং তার সহযোগী মনমিত সিং (২৯), অবতার সিং (৩২), রাজ কুমার (৩০) এবং প্রদীপ কুমার (৩২)। এরাই ৬০টিরও বেশি ভুয়ো ই-কমার্স সাইট তৈরি করে। এই ওয়েবসাইটগুলি মারফত গত তিন বছরে প্রায় ২৫ কোটি টাকার প্রতারণার অভিযোগ রয়েছে।
এর মধ্যে প্রদীপ কুমার কর্ণাটকের ইঞ্জিনিয়ারিং গ্র্যাজুয়েট। তার মাধ্যমেই এসইও অপটিমাইজেশন করা হত। ফলে আরও বেশি ট্রাফিক বাড়ত সাইটগুলিতে।
জেরায় ধৃতরা জানিয়েছে, সাইটগুলিতে বাজার দরের থেকে ৬০% পর্যন্ত ছাড় দেওয়া থাকত। তা দেখে অনেকেই সস্তায় পাচ্ছেন ভেবে কিনতেন। ক্যাশ অন ডেলিভারি না থাকায় অনলাইন পেমেন্ট করতেন। ৯০% ক্ষেত্রেই জিনিস আর বাড়িতে আসত না। এলেও যে জিনিস কেনা হত, তার বদলে সস্তার নকল জিনিস পাঠানো হত।
বেশিরভাগ ক্রেতাই ঝামেলার ভয়ে কোথাও অভিযোগ করতেন না। এছাড়া করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউনের অজুহাতে বহু ক্রেতারই অর্ডার আর পাঠানোই হয়নি। এভাবেই কোটি কোটি টাকা হাতাতো এই পাঁচ জন।