বাংলাদেশভিত্তিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ‘শপআপ’ শুরুতেই সংগ্রহ করেছে ৭ কোটি ৪৪ লাখ ডলার। যুক্তরাষ্ট্রের ভ্যালেরি ভেঞ্চুরার নেতৃত্বে প্রথম রাউন্ডেই তারা এই অর্থ সংগ্রহ করেছে। প্রতিষ্ঠানটি দেশে ডিজিটালাইজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান চালু করতে যাচ্ছে। একাউন্টিং অ্যান্ড করপোরেট রেগুলেটরি অথরিটির (এসিআরএ বা আক্রা) দাখিল করা তথ্যে এ কথা বলা হয়েছে। ডিল স্ট্রিট এশিয়া এ তথ্য দেখতে পেয়েছে বলে খবর দিয়েছে অনলাইন নিক্কি এশিয়া। আক্রার জমা দেয়া ডকুমেন্টে এখন পর্যন্ত শুধু একটি রাউন্ডে যে পরিমাণ অর্থ সংগ্রহ হয়েছে তার তারল্য প্রতিফলিত হয়েছে। সার্বিক রাউন্ডের অর্থায়ন আরো অনেক ব্যাপক হতে পারে। এর মধ্যে অন্যান্য উপাদানও থাকতে পারে, যেমন ঋণ।
যুক্তরাষ্ট্র ভিত্তিক পুঁজি যোগানদাতা ভ্যালেরি ভেঞ্চুরাস এই শপআপে নতুন বিনিয়োগকারী। তারা এতে ৪ কোটি ৫০ লাখ ডলার বিনিয়োগ করতে প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। ডিল স্ট্রিট এশিয়ার হিসাব অনুসারে শপআপে এখন পর্যন্ত তারাই সবচেয়ে বড় বিনিয়োগকারী। তাদের শেয়ারের পরিমাণ শতকরা ১৯.১ ভাগ। আরেকটি বিনিয়োগকারী হলো নাসপারস ভেঞ্চুরাস। এটি হলো দক্ষিণ আফ্রিকার ইন্টারনেট ও মিডিয়া জায়ান্ট নাসপারসের পুঁজি বিষয়ক শাখা। এখন পর্যন্ত এতে বিনিয়োগকারীর মধ্যে রয়েছে সিকুইয়া ক্যাপিটাল ইন্ডিয়া, ফ্লারিশ ভেঞ্চুরা, কেডিভি ক্যাপিট্যাল, লন্সডেল ক্যাপিটাল (সিঙ্গাপুর) এবং ভিওন ভেঞ্চুরা। এর মধ্যে ভিওন হলো দ্বিতীয় বৃহৎ বিনিয়োগকারী। তাদের রয়েছে শতকরা ১২.৩ ভাগ শেয়ার। সর্বশেষ অর্থায়নের পর শপআপের মোট অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৩ কোটি ৬০ লাখ ডলার। ২০১৬ সলে শপআপ প্রতিষ্ঠা করেন আফিফ জুবায়ের জামান, সিফাত সারোয়ার ও আতাউর রহিম চৌধুরী। এর আগে সিরিজ এ-এর মাধ্যমে শপআপ সংগ্রহ করেছে ২ কোটি ২৫ লাখ ডলার। এতে নেতৃত্ব দিয়েছে সিকুইয়া ক্যাপিটাল ইন্ডিয়া এবং ফ্লারিশ ভেঞ্চুরা।
২০১৮ সালের নভেম্বরে বিনিয়োগ বিষয়ক কোম্পানি ওমিদ্যার নেটওয়ার্ক নেতৃত্ব দেয় প্রতিষ্ঠানটি শুরু করার জন্য ১৬ লাখ ২০ হাজার ডলার বিনিয়োগের মাধ্যমে। শপআপ ব্যবসা-টু-ব্যবসা সোর্সিং, ক্ষুদ্র পর্যায়ে লজিস্টিকস এবং আর্থিক সেবা, ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোক্তাদের তাদের মোটাইল-ফাস্ট ডিজিটাল প্লাটফরমের মাধ্যমে এবং লাস্ট-মাইল লজিস্টিক সার্ভিস রেডএক্স সেবা দিয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশে প্রায় ৪৫ লাখ পারিবারিক বা ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দোকান আছে। স্থানীয়ভাবে এগুলো মুদি দোকান হিসেবে পরিচিত। এসব দোকান হলো দেশের শতকরা ৯৮ ভাগ খুচরা বিক্রেতা। এর মধ্য দিয়ে এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ হলো খুচরা বিক্রেতাদের সবচেয়ে বড় এক নেটওয়ার্কের অন্যতম। শুরুতেই ভারতে একটি অফিস খোলা হয়েছে। ২০২০ সালের ফেব্রুয়ারিতে ব্যাঙ্গালোর ভিত্তিক ই-কমার্স প্লাটফরম ‘বণিক’ চালু হওয়ার পর এ ঘটনা ঘটে। গত মাসে ভারতের বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড পত্রিকার এক নিবন্ধে বলা হয়েছে, শপআপের ব্রান্ডস অ্যান্ড কমিউনিকেশন বিষয়ক পরিচালক রাকিব চৌধুরী বলেছেন, তাদের কোম্পানিতে আছেন ৫ লাখ বিক্রেতা এবং ২০০ বিতরণকারী কেন্দ্র। এশিয়ার উদীয়মান অর্থনীতিতে মুদি দোকানগুলোকে ডিজিটালাইজ করার এক প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে গেছে।