আগামী তিন মাসের মধ্যে দেশের বিশৃঙ্খল ই-কমার্স খাতকে নিয়মের মধ্যে আনা হবে। এ সময়ের মধ্যে ই-কমার্স খাতে সংশ্লিষ্ট সব প্রতিষ্ঠানকে ইউনিক বিজনেস আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (ইউবিআইএন) নিতে হবে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ এ সংক্রান্ত সফটওয়্যার ডেভেলপ করবে।
এ ছাড়া চলতি বছরের জুলাই থেকে এখন পর্যন্ত ‘এসক্রও’ সার্ভিস সিস্টেমে আটকে থাকা ২১৪ কোটি টাকা গ্রাহককে ফিরিয়ে দেয়া হবে।
সোমবার ডিজিটাল কমার্স ই-কমার্স ব্যবসার সাম্প্রতিক সমস্যা নিয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় আয়োজিত তিন মন্ত্রী ও এক উপদেষ্টার জরুরি সভা শেষে সাংবাদিকদের এসব তথ্য দেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
এর আগে বিকেলে দীর্ঘ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
সভায় ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, বাণিজ্যসচিব তপন কান্তি ঘোষ ও ডিজিটাল ই-কমার্স সংক্রান্ত কমিটির প্রধান এ এইচ এম সফিকুজ্জামান।
এ ছাড়া সভায় মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগ, অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক, এনবিআর, ই-ক্যাব, বেসিস, এফবিসিসিআই, প্রতিযোগিতা কমিশন, জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
সভা শেষে ব্রিফিংয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি বলেন, ‘আজকের বৈঠকের আলোচনা খুবই ফলপ্রসূ হয়েছে। বৈঠকের উদ্দেশ্য ছিল দেশে ই-কমার্স খাত সংশ্লিষ্ট সব ব্যবসাকে একটি নিয়মের মধ্যে আনতে করণীয় নির্ধারণ। আজকের আলোচনায় সে বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হয়েছে।’
টিপু মুনশি জানান, ই-কমার্স খাতে ব্যবসা করতে হলে সব ব্যবসায়ীকে ইউনিক বিজনেস আইডেন্টিফিকেশন নম্বর (ইউবিআইএন) নিতে হবে। এর উদ্দেশ্য হলো ই-কমার্স সংশ্লিষ্ট সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানকে শনাক্ত করা। ইউবিআইএন ছাড়া দেশে কেউ ই-কমার্স ব্যবসা পরিচালনা করতে পারবে না। এ বিষয়ে কারিগরি সহায়তা দেবে আইসিটি ডিভিশন।
এ ছাড়া সেন্ট্রাল লজিস্টিক চেক ইন দ্য প্ল্যাটফর্ম (সিএলটিপি) থাকবে। এটি একটি আইনগত কৌশল। যারা ই-কমার্স খাতে ব্যবসা করছে, তাদের ইউপিআই নম্বরসহ বিজনেস রিলেটেড সবকিছু ঠিক আছে কি না তা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হবে।
ই-কমার্স লেনদেনে গ্রাহক ও ভোক্তার অভিযোগ লিপিবদ্ধ করা বা গ্রহণের জন্য একটি সেন্ট্রাল কমপ্লেইন ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম দাঁড় করানো হবে। সংক্ষুব্ধ বা ক্ষতিগ্রস্ত যে কেউ এখানে অভিযোগ দাখিল করতে পারবে, যা কর্তৃপক্ষ আমলে নিয়ে সমাধানের চেষ্টা করবে। এসব বিষয়েও প্রযুক্তিগত সাপোর্ট দেবে আইসিটি ডিভিশন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আশা করছি আগামী দুই থেকে তিন সপ্তাহের মধ্যে তারা এ বিষয়ে একটি পদক্ষেপ জানাতে পারবে।’
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘এসব পদক্ষেপ ই-কমার্স খাতকে একটি নিয়মতান্ত্রিক ধারায় পরিচালিত করতে সহায়তা করবে। তবে এখন বড় আলোচনার বিষয় গ্রাহকের টাকা ফেরত দেয়া। এ বিষয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। বাংলাদেশ ব্যাংকসহ আরও যারা আছে, তারা একটি মতামত দিয়েছে।
‘সিদ্ধান্ত হয়েছে, চলতি বছরের জুলাই থেকে যাদের টাকা আটকে আছে, তাদের টাকা তাদের কাছে ফেরত যাবে। এ ক্ষেত্রে যেসব জটিলতা রয়েছে, সেগুলোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে। টাকা ফেরত যেতে সময় লাগবে। এ ক্ষেত্র তিন মাসের মতো সময় লাগতে পারে।’