ইইউইসি (ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি ই-কমার্স ক্লাব) এবং ইডিসি (ই-কমার্স ডেভেলপমেন্ট সেন্টার) যৌথভাবে আয়োজিত “GI Products In Bangladesh” শীর্ষক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে ।
বৃহস্পতিবার ( ২৩ ফেব্রুয়ারি) রাজধানীর ধানমন্ডির WVA (Women’s Voluntary Association)” তে প্রোগ্রামটি অনুষ্ঠিত হয় ।
বিশ্ববিদ্যালয়টির ব্যাবসায় বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এবং ক্লাবের কো-অরডিনেটর আবু মোঃ আব্দুল্লাহর সভাপতিত্বে ও ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি ই-কমার্স ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি মিফতাউল জান্নাতী সিনথিয়ার সঞ্চালনায় উক্ত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির সম্মানিত উপাচার্য শহিদ আখতার হোসেইন এবং বিশেষ অতিথি ছিলেন ইডিসির সভপতি কাকলী তালুকদার ।
প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ইক্যাবের (ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ) সাবেক ও প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি জনাব রাজিব আহমেদ । ক্লাবের সদস্য এবং ইডিসির সহসভাপতি ছাড়াও এতে আরও উপস্থিত ছিলেন ঢাকা ও ঢাকার বাইরের জেলা (নোয়াখালি, চট্টগ্রাম, নরসিংদী , ময়মনসিংহ ) থেকে ই-কমার্স উদ্যোক্তারা ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য শহিদ আখতার হোসেইন বলেন, “ বাংলাদেশের প্রত্যান্ত অঞ্চলের দেশীয় পণ্যকে জি আই (জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন) এর আওতায় আনতে নারী উদ্যোক্তাদের এমন উদ্যোগকে আমি সাধুবাদ জানাই। অনেকেই এধরনের কাজ করছেন মিডলম্যান হিসেবে। কিন্তু দেশকে এগিয়ে নিতে আপনারা দেশের আসল পণ্য নিয়ে কাজ করছেন একদম প্রান্তিক পর্যায় থেকে সে জন্য আমি আপনাদের ধন্যবাদ জানাই এবং জি আই পণ্য নিয়ে ব্যাক্তিগতভাবে কোনকিছু করা সম্ভব নয় এর জন্য দরকার সরকারী পৃষ্ঠপোষকতা, যেটার জন্য ইডিসি সরকারী পর্যায়ে ডকুমেন্টশনের কাজ করছে”।
তিনি আরও বলেন, “ জি আই এবং দেশীয় পণ্য নিয়ে শিক্ষার ক্ষেত্রে তরুণ প্রজন্মকে জানাতে ইডিসি চমৎকার একটি কাজ করেছেন। তারা উপলব্ধি করতে পেরেছেন দেশীয় পণ্যকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সিলেবাসে অন্তর্ভুক্ত করার। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে যদি দেশীয় পণ্য কারিকুলামে অন্তর্ভুক্ত করা যায় তাহলে শিক্ষার্থীরা এখান থেকে ট্রেনিংপ্রাপ্ত হবে । এখানে আপনারা যারা উপস্থিত আছেন তারা নিজেদের উদযোগে এসব কাজ করছেন। যেহেতু জি আই পণ্য এবং ই-কমার্স সেক্টর প্রাতিষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি পাই নি। এই সেক্টরগুলিকে প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি পেতে ইডিসি চেষ্টা করে যাচ্ছে এজন্য তারা বিভিন্ন ইউনিভার্সিটিতে ও দেশের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছে। আজ থেকে পাঁচ দশ বছর পর দেশের জি আই পণ্যে অবদানের জন্য তারা অনেক স্বরনীয় হয়ে থাকবে । আর এভাবেই কিন্তু দেশ আগায়” ।
বিশেষ অতিথি কাকলী তালুকদার বলেন, “আমাদের প্রতিটি সরকারি -বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় গুলোতে জি আই পণ্যের কাজের সাথে সম্পৃক্ততা বাড়াতে হবে।প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় একটি করে পণ্য জি আই করার উদ্যোগ নিলে অচিরেই আমাদের ২০৯ টি পণ্য জি আই পণ্য হিসেবে স্বীকৃতি পেতে পারে। আমি আশাকরি দেশীয় পণ্য বিশেষ করে যে পণ্যগুলোর ৫০ বছরের বেশি সময়ের ইতিহাস ও ঐতিহ্য রয়েছে এমন পণ্য এবং বিলুপ্ত প্রায় পণ্যগুলোর জিআই কার্যক্রমে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো আন্তরিক ভাবে এগিয়ে আসবেন। তাহলে আমরা ডলারের যে ক্রাইসিসে আছি এসব পণ্য বহির্বিশ্বের রপ্তানির মাধ্যমে তা কমিয়ে আনতে সক্ষম হব ইনশাআল্লাহ”।
অনুষ্ঠানে ই-কমার্স উদ্যোক্তা ছাড়াও বক্তব্য প্রদান করেন ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি ই-কমার্স এর সদস্য ও শিক্ষার্থীবৃন্দ। এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের সি এস ই বিভাগের তৃতীয় সেমিস্টারের ছাত্র নূর আলম ইসলাম মানিক তার বক্তব্যে তুলে ধরেন ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি ই-কমার্স ক্লাব থেকে তি কি শিখেছেন এবং ছাত্রছাত্রীদের কেন এই ক্লাবে আসা দরকার ? সেই সাথে দেশীয় এবং জি আই পণ্য সম্পর্কে জানতে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীদের অংশগ্রহন করা কেন দরকার? মানিক বলেন, “ ছাত্রছাত্রীরা সবসময় চেষ্টা করে সিলেবাসের পড়া মুখস্থ করে পাশ করার। আমিও তার ব্যাতিক্রম ছিলাম না, কিন্তু ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটি ই-কমার্স ক্লাবে যুক্ত হওয়ার পর থেকে শিখতে পারলাম কিভাবে মানুষের সামনে নিজেকে উপস্থাপন করা যায়, কিভাবে নেতৃত্ব দিতে হয় কিভাবে তথ্য সংগ্রহ করে নিজের মতো করে বলতে ও লিখতে হয় যার ফলশ্রুতিতে পিছনের চেয়ারে বসে মুখ লুকিয়ে থাকা আমি আজ মাইক্রোফোন হাতে স্টেজে বসে কথা বলতে পারছি” ।
সবশেষে ফুল দিয়ে প্রধান অতিথিকে বরণ, আগত অতিথি এবং ক্লাবের একটিভ ছাত্রছাত্রীদের মাঝে ক্রেস্ট প্রদান এবং ইভেন্টে উপস্থিত ক্লাবের সকল সদস্যদের অরুণ কান্তি পাল ও পপি পালের যৌথ উদ্যোগ “রঙিন মাটি” – এর কলমদানি উপহারের মাধ্যমে অনুষ্ঠানটি সম্পন্ন হয় ।