আলোচিত ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির গত এক মাসের আয়ের টাকার লাভের অংশ থেকে ১৫০ জনের পাওনা টাকা ফেরত দেয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানটির সিইও মোহাম্মদ রাসেল।
রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অবস্থিত জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ের সম্মেলনকক্ষে আনুষ্ঠানিকভাবে এ টাকা ফেরত দেওয়া হয়।
এ সময় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ এইচ এ সফিকুজ্জামান, পরিচালক (কার্যক্রম ও গবেষণাগার) ফকির মুহাম্মদ মুনাওয়ার হোসেন, কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবির ও ইভ্যালির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) মো. রাসেল উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানে ১০ জনের হাতে তাদের পাওনা টাকা তুলে দেন ভোক্তার ডিজি। বাকি ১৪০ জনকে অনুষ্ঠান শেষে টাকা দেওয়া হয়।
অনুষ্ঠানে জানানো হয়, ইভ্যালির বিরুদ্ধে প্রায় সাত হাজার অভিযোগ জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে জমা পড়েছে। এর মধ্যে আজ প্রথম পর্যায়ে ১৫০ অভিযোগ নিষ্পত্তি করে পাওনা টাকা ফেরত দেওয়া হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে বাকিদের টাকাও ফেরত দেওয়া হবে।
এতে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (ডিজি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান বলেন, ই-কমার্সকে আমরা ঠেকিয়ে রাখতে পারবো না। ই-কমার্স এগিয়ে যাবে। প্রধানমন্ত্রীর ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে গেলে অবশ্যই ই-কমার্সের বিস্তার ঘটাতে হবে।
তিনি আরও বলেন, বর্তমানে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরে ই-কমার্স বিষয়ে প্রায় ১১ হাজার অভিযোগ রয়েছে। এর মধ্যে একটি বড় অংশ ইভ্যালির বিরুদ্ধে। ইভ্যালির রাসেল ২৭ মাস জেলে ছিলেন। তার যদি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়, তাহলে এ অভিযোগগুলো নিষ্পত্তি হবে না। যে টাকা গ্রাহকের কাছ থেকে চলে গেছে, সেগুলো তারা ফেরত পাবেন না। তাই তাদের (ইভ্যালি) ব্যবসায় ফিরে আসার সুযোগ করে দিতে হবে।
ই-কমার্স থেকে কেনাকাটায় ভোক্তার সচেতনতা প্রয়োজন উল্লেখ করে সফিকুজ্জামান বলেন, ভোক্তারা যতক্ষণ পর্যন্ত সচেতন না হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত এমন প্রতারণা চলবে। তাই ভোক্তাদের উচিত কোন সাইট প্রকৃত, কোনটা প্রকৃত নয় সেটি দেখেশুনে কেনাকাটা করা।
ইভ্যালির সিইও মো. রাসেল বলেন, গত এক মাসে ইভ্যালি ব্যবসা করে কমিশনের মাধ্যমে যে টাকা আয় করেছে, বিভিন্ন খরচ বাদ দিয়ে সেই আয়ের লাভের টাকা থেকে আজ ১৫০ জনের টাকা ফেরত দেওয়া হচ্ছে। গত এক মাসে আমরা ৬৫ হাজার অর্ডারের পণ্য ডেলিভারি করেছি।
বর্তমানে ইভ্যালির ব্যবসার প্রক্রিয়া খুবই স্বচ্ছ জানিয়ে তিনি আরও বলেন, এখানে কোনো ধরনের প্রতারণার আর সুযোগ নেই। আমাদের এখন অর্ডার প্রসেসটা হচ্ছে ক্যাশ অন ডেলিভারি। অর্থাৎ পণ্য হাতে পেয়ে আপনি টাকা দেবেন। এখানে কোনো অর্থ পণ্য পাওয়ার আগে আমাদের কাছে আসার সুযোগ নেই।
রাসেল বলেন, আমরা শুধু অভিযোগকারীদের অভিযোগ নিষ্পত্তি নয়, যারা অভিযোগ করেনি, তাদের টাকাও আমরা ফেরত দেবো। এবার এটা মার্চেন্ট হোক বা ক্রেতা। ইভ্যালি যদি ব্যবসা করতে পারে তাহলে যত দেনা আমাদের আছে, সেটা আমরা একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পরিশোধ করতে পারবো। এ মাসের তৃতীয় বা চতুর্থ সপ্তাহে আমরা আরেকটি পর্যায়ের অভিযোগ নিষ্পত্তি করে টাকা ফেরত দেবো।