নানা ফিচারের নিত্যনতুন স্মার্টফোন সাশ্রয়ী দামে গ্রাহকদের হাতে তুলে দিতে বাজারে বরাবরই এগিয়ে দেশীয় প্রতিষ্ঠান ওয়ালটন। দেশেই নিজস্ব কারখানায় স্মার্টফোন তৈরি করছে ওয়ালটন।
বিগত বছরগুলোর ন্যয় এ বছরও স্মার্টফোনপ্রেমীদের জন্য ওয়ালটন বাজারে নিয়ে এসেছে নানা মডেলের ও নানা ফিচারের ভরপুর সব নতুন স্মার্টফোন।
এ বছরে ওয়ালটনের প্রথম স্মার্টফোন ‘প্রিমো আরএক্সফাইভ’, এরপর গ্রাহকদের চাহিদার প্রেক্ষিতে বছরজুড়ে স্মার্টফোনে এনে গ্রাহকদের প্রত্যাশা পূরণ করে প্রযুক্তিপণ্যের বাংলাদেশি মাল্টিন্যাশনাল এই প্রতিষ্ঠানটি। এর মধ্যে থেকে সেরা স্মার্টফোন নিয়ে এ প্রতিবেদন।
প্রিমো এনএফফোর টার্বো: মাত্র ৬,৬৯৯ টাকায় বড় ডিসপ্লের ৪জি ফোন হিসেবে আগস্টে ওয়ালটন বাজারে নিয়ে আসে ‘প্রিমো এনএফফোর টার্বো’। আকর্ষণীয় ডিজাইনের ৮.৩ মিমি স্লিম এই ফোনে রয়েছে ৫.৯৯ ইঞ্চি স্ক্রিনের ফুল-ভিউ আইপিএস ডিসপ্লে, যাতে রয়েছে ধূলা ও আঁচররোধী ২.৫ডি কার্ভড গ্লাস। এপ্রিলে বাজারে আসা ‘প্রিমো এনএফফোর’ ফোনের উন্নত সংস্করণ হিসেবে টার্বো এডিশনের এই ফোনের র্যাম, ইন্টারনাল স্টোরেজ এবং প্রসেসরের কার্যক্ষমতা বাড়ানো হয়। উন্নত পারফরম্যান্স নিশ্চিতে ফোনটিতে যুক্ত করা হয় অ্যান্ড্রয়েড ৯ পাই অপারেটিং সিস্টেম, ১.৫ গিগাহার্জের কোয়াডকোর প্রসেসর, ২ জিবি ডিডিআর৩ র্যাম এবং ১৬ জিবি ইন্টারনাল স্টোরেজ, যা মাইক্রো এসডি কার্ডের মাধ্যমে ৬৪ জিবি পর্যন্ত বাড়ানো যায়। গ্রাফিক্সের ক্ষেত্রে রয়েছে পাওয়ার ভিআর জিই৮১০০। এই ফোনের উভয় পাশে ব্যবহার করা হয়েছে এলইডি ফ্ল্যাশযুক্ত বিএসআই ৮ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা। প্রয়োজনীয় পাওয়ার ব্যাকআপের জন্য রয়েছে ৩২০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ার লি-পলিমার ব্যাটারি। ফোনের সুরক্ষায় রয়েছে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর।
প্রিমো এইচএইট টার্বো: চলতি বছরের শুরুর দিকে ওয়ালটন বাজারে নিয়ে আসে ‘প্রিমো এইচএইট’ মডেলের ফোন, যা ব্যাপক সাড়া ফেলে। ক্রেতাচাহিদার প্রেক্ষিতে জুলাই মাসে টার্বো এডিশনে প্রিমো এইচএইট নিয়ে আসে ওয়ালটন। টার্বো এডিশনে ফোনটির ২ জিবি এবং ৩ জিবি র্যামের উভয় সংস্করণেই ব্যবহার করা হয়েছে ১.৫ গিগাহার্জ গতির কোয়াড কোর প্রসেসর। এতে ফোনটির কার্যক্ষমতা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে। তবে প্রসেসরের ক্ষমতা বাড়ানো হলেও ফোনটির দাম বাড়ানো হয়নি। বরং ২ জিবি র্যাম সংস্করণটি আগের চেয়ে আরো কম মূল্যে কিনতে পেরেছেন ক্রেতারা। টার্বো এডিশনে প্রিমো এইচএইটের ৩ জিবি র্যামের ফোনটি বাজারে পাওয়া গেছে ৭,৯৯৯ টাকায়। আর ২ জিবি র্যামে এটি মিলেছে মাত্র ৬,৮৯৯ টাকায়। ৪জি প্রযুক্তির এই ফোনে ব্যবহৃত হয়েছে আইপিএস প্রযুক্তির ১৮:৯ রেশিওর ফুল-ভিউ ডিসপ্লে। ৫.৪৫ ইঞ্চির এইচডি প্লাস পর্দার রেজ্যুলেশন ১৪৪০ বাই ৭২০ পিক্সেল। ক্যাপাসিটিভ টাচ স্ক্রিন সুবিধাযুক্ত স্মার্টফোনটিতে রয়েছে ধূলা ও আঁচররোধী ২.৫ডি কার্ভড গ্লাসও। অ্যান্ড্রয়েড ৮.১ ওরিও অপারেটিং সিস্টেম চালিত এই ফোনের উভয় ভার্সনে রয়েছে পাওয়ার ভিআর জিই৮১০০ গ্রাফিক্স। ইন্টারনাল মেমোরি ১৬ জিবি, যা মাইক্রো এসডি কার্ডের মাধ্যমে ৬৪ জিবি পর্যন্ত বাড়ানো যায়। ফোনটির পেছনে রয়েছে এলইডি ফ্ল্যাশযুক্ত ৮ মেগাপিক্সেল সনি ক্যামেরা, সেলফির জন্য সামনে রয়েছে ৮ মেগাপিক্সেল ওমনিভিশন ক্যামেরা। আর পর্যাপ্ত পাওয়ার ব্যাকআপের জন্য স্মার্টফোনটিতে ব্যবহৃত হয়েছে ৩২০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ারের লিথিয়াম পলিমার ব্যাটারি। ফোনের সুরক্ষায় রয়েছে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর।
প্রিমো এইচএইট প্রো : সেপ্টেম্বরে উন্মোচন হওয়া এই ফোনটি প্রি-অর্ডারেই ব্যাপক সাড়া ফেলে। সাশ্রয়ী দামে সবার হাতে নচ ডিসপ্লের স্মার্টফোন তুলে মাত্র ৮,৪৯৯ টাকায় প্রিমো এইচএইট প্রো নিয়ে আসে ওয়ালটন। এই ফোনে ওয়ালটন দিয়েছে বড় পর্দার নচ ডিসপ্লে, ৩ জিবি র্যাম, ৩২ জিবি রম, অক্টাকোর প্রসেসর, শক্তিশালী ব্যাটারি, দুর্দান্ত ক্যামেরাসহ আকর্ষণীয় সব ফিচার। দেশের সেরা বাজেট ফোনের পরিচিতি পায় প্রিমো এইচএইট প্রো। এই ফোনে ব্যবহৃত হয়েছে ৫.৭১ ইঞ্চির ১৯:৯ রেশিওর ইউ-নচ ডিসপ্লে, যাতে রয়েছে ধূলা ও আঁচররোধী ২.৫ডি কার্ভড গ্লাস। অন্যান্য আকর্ষণীয় ফিচারের মধ্যে রয়েছে অ্যান্ড্রয়েড ৯.০ পাই অপারেটিং সিস্টেম, ৩৫২০ মিলিঅ্যাম্পিয়ারের লিথিয়াম পলিমার ব্যাটারি, ১.৬ গিগাহার্জ গতির এআরএম কর্টেক্স-এ৫৫ অক্টাকোর প্রসেসর, ৩ জিবি ডিডিআর৪ র্যাম, পাওয়ার ভিআর জিই৮৩২২ গ্রাফিক্স, ৩২ জিবি ইন্টারনাল স্টোরেজ। আর ক্যামেরার ক্ষেত্রে ফোনটির পেছনে ব্যবহৃত হয়েছে এলইডি ফ্ল্যাশযুক্ত পিডিএএফ প্রযুক্তির এফ২.০ অ্যাপারচার সমৃদ্ধ বিএসআই ১৩ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা। যাতে রয়েছে ৫পি লেন্স। সেলফির জন্য সামনে পিডিএএফ প্রযুক্তির বিএসআই ৮ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা। হ্যান্ডসেটটির অন্যান্য ফিচারের মধ্যে রয়েছে ৪জি নেটওয়ার্ক সাপোর্ট, ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর ইত্যাদি।
প্রিমো আরএক্সসেভেন মিনি: মাঝারি দামে ডিসেম্বরে বাজারে আসা নচ ডিসপ্লে সুবিধার আরেকটি সেরা ফোন হলো ‘প্রিমো আরএক্সসেভেন মিনি’। উভয় পাশে গ্লাস প্যানেলের ফোনটির আনটুটু বেঞ্চমার্ক স্কোর ১৪৫কে প্লাস। এ ফোনটিকেও দেশের সেরা ‘বাজেট স্মার্টফোন’ হিসেবে অভিহিত করেন সংশ্লিষ্টরা। মাত্র ৮,৭৯৯ টাকা দামের এই ফোনে আকর্ষণীয় ফিচার হিসেবে রয়েছে ৫.৯ ইঞ্চির ১৯:৯ রেশিওর নচ ডিসপ্লে। এইচডি প্লাস পর্দার রেজ্যুলেশন ১৫২০ বাই ৭২০ পিক্সেল। আইপিএস ইনসেল প্রযুক্তির স্মার্টফোনটিতে রয়েছে ধূলা ও আঁচররোধী ২.৫ডি কার্ভড গরিলা গ্লাস। ক্যাপাসিটিভ টাচ স্ক্রিনের ফোনটিতে ১০ ফিঙ্গার মাল্টি টাচ সাপোর্ট করে। ফোনটি অ্যান্ড্রয়েড ৯.০ পাই অপারেটিং সিস্টেমে পরিচালিত। দুর্দান্ত অন্যান্য ফিচারের মধ্যে রয়েছে- ১.৮ গিগাহার্জ গতির কর্টেক্স-এ৭৩ এবং এ-৫৩ অক্টাকোর প্রসেসর, ৩ জিবি এলপিডিডিআর৪এক্স র্যাম, মালি-জি৭২ এমপি৩ গ্রাফিক্স, ৪জি নেটওয়ার্ক সাপোর্ট, ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর, ৩২ জিবি ইন্টারনাল মেমোরি যা ১২৮ জিবি পর্যন্ত মাইক্রো এসডি কার্ড সাপোর্ট করে। ক্যামেরার ক্ষেত্রে রয়েছে এলইডি ফ্ল্যাশযুক্ত পিডিএফ প্রযুক্তির অটোফোকাস এফ ২.০ অ্যাপারচার সমৃদ্ধ ডুয়াল রিয়ার ক্যামেরা। এর ৫পি লেন্স সমৃদ্ধ ১৩ মেগাপিক্সেলের প্রধান ক্যামেরা দেয় উজ্জ্বল ছবি। আর ৫ মেগাপিক্সেলের সেকেন্ডারি ক্যামেরা নিশ্চিত করে ডেফথ-অব-ফিল্ড ইফেক্ট। আর সেলফির জন্য সামনে রয়েছে পিডিএফ প্রযুক্তির এফ ২.২ অ্যাপারচার সমৃদ্ধ ৮ মেগাপিক্সেল ক্যামেরা। ৮.১ মিমি স্লিম হ্যান্ডসেটটির পর্যাপ্ত পাওয়ার ব্যাকআপের জন্য ব্যবহৃত হয়েছে ৩০০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ারের লি-পলিমার ব্যাটারি।
প্রিমো আরসিক্স : ডুয়াল ক্যামেরার শক্তিশালী ব্যাটারি সমৃদ্ধ নচ ডিসপ্লের স্মার্টফোনটি এটি। ফোনটি বাজারে আসে অক্টোবরে। তবে সেপ্টেম্বরে প্রি-অর্ডারেই সাড়া ফেলতে সক্ষম হয়। মাত্র ৯,৫৯৯ টাকা মূল্যের এই ফোনে রয়েছে ৬.১ ইঞ্চির ১৯:৯ রেশিওর ইউ-নচ ডিসপ্লে, যাতে ব্যবহৃত হয়েছে ধূলা ও আঁচররোধী ২.৫ডি কার্ভড গ্লাস। আর দুর্দান্ত পাওয়ার ব্যাকআপের জন্য রয়েছে ৪০০০ মিলিঅ্যাম্পিয়ারের লিথিয়াম পলিমার ব্যাটারি। ক্যামেরার ক্ষেত্রে এলইডি ফ্ল্যাশযুক্ত পিডিএএফ প্রযুক্তির এফ ২.০ অ্যাপারচারের বিএসআই ১৩ এবং ২ মেগাপিক্সেলের ডুয়াল রিয়ার ক্যামেরা। যার ৫পি লেন্স সমৃদ্ধ ১৩ মেগাপিক্সেলের প্রধান ক্যামেরা দেয় উজ্জ্বল ছবি, আর ২ মেগাপিক্সেলের সেকেন্ডারি ক্যামেরা নিশ্চিত করে ডেপথ-অব-ফিল্ড ইফেক্ট। সেলফির জন্য রয়েছে পিডিএএফ প্রযুক্তির ৪পি লেন্স সমৃদ্ধ ৮ মেগাপিক্সেল ফ্রন্ট ক্যামেরা। অ্যান্ড্রয়েড ৯.০ পাই অপারেটিং সিস্টেম চালিত প্রিমো আরসিক্স ফোনের পারফরম্যান্স নিশ্চিতে ব্যবহৃত হয়েছে ১.৬ গিগাহার্জ গতির এআরএম কর্টেক্স-এ৫৫ অক্টাকোর প্রসেসর, ৩ জিবি ডিডিআর৪ র্যাম, পাওয়ার ভিআর জিই৮৩২২ গ্রাফিক্স, ৪জি নেটওয়ার্ক সাপোর্ট, ৩২ জিবি ইন্টারনাল স্টোরেজ এবং ১২৮ জিবি পর্যন্ত মেমোরি কার্ড সাপোর্ট। নিরাপত্তায় রয়েছে ফিঙ্গারপ্রিন্ট সেন্সর।