স্মার্ট হোম ডিভাইসের বাজার দ্রুত সম্প্রসারণা হওয়ায় সাম্প্রতিক বছরগুলোতে বিশ্বব্যাপী স্মার্ট স্পিকারের চাহিদা বেড়েছে। আগামী দিনগুলোতেও এ ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকবে তা সহজেই অনুমেয়। সম্প্রতি প্রকাশিত কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২০-২০২৫ সালের মধ্যে স্মার্ট স্পিকার বাজার প্রতি বছর গড়ে ২১ শতাংশ সম্প্রসারিত হবে।
ওয়াইফাই কানেকশন সক্ষমতা, ভয়েস কমান্ডের মাধ্যমে ঘরে অন্যান্য স্মার্ট ডিভাইস নিয়ন্ত্রণ সক্ষমতার স্পিকারকে স্মার্ট স্পিকার বলা যায়। সালের নভেম্বরে ইকো নামে প্রথম স্মার্ট স্পিকার নিয়ে এসেছিল মার্কিন প্রযুক্তি জায়ান্ট অ্যামাজন। যুক্তরাষ্ট্রে জনপ্রিয়তা পাওয়ার পর ২০১৮ সালের পর থেকে চীনের বাজারে বেশ জনপ্রিয় হয়ে দাঁড়িয়েছে স্মার্ট স্পিকার।
কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের প্রাক্কলন, ২০২০-২০২৫ সালের মধ্যে স্মার্ট স্পিকার বিক্রিতে সম্মিলিত বার্ষিক প্রবৃদ্ধি হার (সিএজিআর) হবে ২১ শতাংশ। ভোক্তা সচেতনতা বৃদ্ধি, প্রতিযোগিতামূলক অফার এবং প্রযুক্তিগত উন্নয়নের কারণে খাতটি বেশ সম্প্রসারিত হবে।
সহজ ব্যবহার এবং সচেতনতা বৃদ্ধিতে ভোক্তারা স্মার্ট টিভি, থার্মোস্ট্যাটস, স্মার্ট লাইট, স্মার্ট লক, সিকিউরিটি ক্যামেরা ও স্মার্ট কিচেন অ্যাপ্লায়েন্সের মতো বিভিন্ন স্মার্ট ডিভাইস ব্যবহার করছে। স্মার্ট স্পিকারের মাধ্যমে সব ডিভাইসকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। যেমন শাওমি একটি এআইওটি ইকোসিস্টেম তৈরি করতে যাচ্ছে। স্মার্ট স্পিকার ব্যবহার করে পুরো একটি প্রযুক্তি হাবকে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। ওই এআইওটি প্লাটফর্মে ৩২ কোটি ৪০ লাখেরও বেশি ডিভাইস সংযুক্ত।
স্মার্ট স্পিকারে অত্যাধুনিক প্রযুক্তি যোগ করার ক্ষেত্রে প্রযুক্তি জায়ান্টদের মধ্যে প্রতিযোগিতা লক্ষণীয়। অ্যামাজন, শাওমির পাশাপাশি চীনা প্রযুক্তি জায়ান্ট বাইডুও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংবলিত স্মার্ট স্পিকার নিয়ে আসছে। সম্প্রতি সার্চ ইঞ্জিন জায়ান্ট গুগল এক ঘোষণায় জানায়, তারা শিগগিরই বাজারে পরবর্তী প্রজন্মের চ্যাটবট ল্যামডা নিয়ে আসছে। মেশিন লার্নিং মডেল নির্মিত চ্যাটবটটি স্বাভাবিক পরিস্থিতিতে মানুষের সংলাপ অনুধাবন করে কাজ চালাতে পারবে বলে জানায় গুগল।
সাম্প্রতিক দিনগুলোতে ডিসপ্লে সংবলিত স্পিকারের চাহিদা বেড়েছে। করোনা মহামারীতে ঘরে অবস্থানের ফলে ভিডিও কল, অনলাইনে কন্টেন্ট দেখা ও সোস্যাল নেটওয়ার্কিংয়ের কারণে এতে প্রভাব পড়েছে।
সব প্রযুক্তি জায়ান্টই সাশ্রয়ী কিন্তু ভালো সাউন্ডের স্পিকার দেয়ার চেষ্টা করছে। যেমন গত নভেম্বরে অ্যাপল তাদের হোমপড নিয়ে আসে, যার মূল্য রাখা হয় মাত্র ৯৯ ডলার। কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের গবেষকরা বলছেন, বিভিন্ন দেশ ও অঞ্চলের স্থানীয় ভাষা ব্যবহার করা হলে স্মার্ট স্পিকারের সম্ভাবনা অনেক। আগামী দিনগুলোতে চীনের চেয়েও বেশ দ্রুত সম্প্রসারিত হতে পারে এশিয়া ও লাতিন আমেরিকার স্মার্ট স্পিকারের বাজার।