চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে উদীয়মান বাজারগুলোতে ফাইভজি স্মার্টফোন বিক্রি প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় বেড়েছে ৬ দশমিক ৫ শতাংশ। কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের সর্বশেষ প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে ফাইভজি স্মার্টফোন বিক্রি বৃদ্ধিতে ভূমিকা রেখেছে অ্যাপলের প্রথম ফাইভজি ফোন আইফোন ১২। এছাড়া অপো, ভিভো, শাওমি ও রিয়েলমির মতো কোম্পানির ফাইভজি ডিভাইস উন্মোচন ভূমিকা রেখেছে। উদীয়মান অর্থনীতি বিশেষত দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যে ফাইভজি অবকাঠামো শক্তিশালী হওয়ায় সাশ্রয়ী ফাইভজি ফোনের চাহিদা বেড়েছে।
উদীয়মান বাজারে স্মার্টফোন নির্মাতা কোম্পানিগুলো তাদের পোর্টফোলিওতে ফাইভজি পণ্যের ওপর জোর দিচ্ছে। উদাহরণস্বরূপ প্রথম প্রান্তিকে উদীয়মান বাজারগুলোতে রিয়েলমির বাজার শেয়ার ছিল ৮ দশমিক ৮ শতাংশ। কিন্তু দ্বিতীয় প্রান্তিকে তা দাঁড়িয়েছে ১৫ দশমিক ৯ শতাংশে। বছরওয়ারি ১৩৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধির মাধ্যমে দ্বিতীয় প্রান্তিকে রিয়েলমির স্মার্টফোন বিক্রি হয়েছে দেড় কোটি ইউনিট। প্রথমবারের মতো চীনা এ কোম্পানিটি ষষ্ঠ স্থানে উঠে এসেছে।
যুক্তরাষ্ট্রের মতো উন্নত বিশ্বে ফাইভজি যেখানে গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হিসেবে দাঁড়িয়েছে, উদীয়মান অর্থনীতিগুলোর জন্য তা পুরোপুরি সত্য নয়। কারণ বেশির ভাগ দেশেই এখনো ফোরজি রয়েছে। তবে এ কারণেই আবার এ বাজারগুলোতে প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা বেশি। সেজন্য উদীয়মান অর্থনীতিগুলোকে কেন্দ্র করে স্মার্টফোন নির্মাতা কোম্পানিগুলোর মধ্যে ফাইভজি নিয়ে প্রতিযোগিতা জোরদার হয়েছে। এক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য উদাহরণ ভারত, যেখানে দ্বিতীয় প্রান্তিকে ফাইভজি স্মার্টফোন বিক্রি প্রথম প্রান্তিকের চেয়ে বেড়েছে ৭৫ দশমিক ৫ শতাংশ। চলতি বছরের বাকি প্রান্তিকগুলোতেও এ ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে বলে মনে করছে কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চ। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্য দেশগুলোতেও ফাইভজি সম্প্রসারণ বহাল থাকবে। বাণিজ্যিকভাবে ফাইভজি চালু হওয়ার কারণে ২০২২ সালে ফাইভজির জন্য গুরুত্বপূর্ণ বছর হিসেবে দেখা দেবে বলে আশা করছেন বিশ্লেষকরা। সাশ্রয়ী ফাইভজি স্মার্টফোন আনার মাধ্যমে বাজার শেয়ার বাড়ানোর চেষ্টা চালাচ্ছে স্মার্টফোন নির্মাতা কোম্পানিগুলো। কোনো কোম্পানিই এ দৌড়ে পিছিয়ে থাকতে আগ্রহী হবে না। শুধু ফোরজি ফোনের বাজারই ধীরে ধীরে সংকুচিত হবে।
কাউন্টারপয়েন্ট রিসার্চের অপর এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দ্বিতীয় প্রান্তিকে বৈশ্বিক স্মার্টফোন বিক্রিতে মাঝারি দামের ফাইভজি ফোনের বাজার শেয়ার ছিল ৩৭ শতাংশ। আগের বছরের তুলনায় এ সেগমেন্টের প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৯৩ শতাংশ। ২০০ থেকে ৩৯৯ ডলার মূল্যের স্মার্টফোনগুলো মাঝারি দামের স্মার্টফোনের ক্যাটাগরিতে নিয়ে আসা হয়েছে।
এপ্রিল-জুন প্রান্তিকে মাঝারি দামের ফাইভজি ফোন বিক্রিতে শীর্ষস্থান ছিল ভিভোর। চীনা এ কোম্পানিটির বাজারশেয়ার ছিল ৩০ শতাংশ। শুধু চীনেই তাদের ৯০ শতাংশ ফাইভজি স্মার্টফোন বিক্রি হয়েছে। ভিভোর মাঝারি দামের স্মার্টফোনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় মডেল ছিল এস৯ ও এক্স৬০ সিরিজ।
২৩ শতাংশ বাজারশেয়ার নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে ছিল অপো। চীনা এ কোম্পানিটির সবচেয়ে জনপ্রিয় ফোনের মধ্যে রয়েছে এ৫৫ ও এ৯৩। চীনের বাজারে হুয়াওয়ের অনুপস্থিতিতে মাঝারি দামের ফাইভজি স্মার্টফোনে শক্তিশালী অবস্থান করেছে ভিভো ও অপো।
সার্বিক স্মার্টফোন বিক্রিতে শীর্ষস্থান থাকলেও মাঝারি দামের ফাইভজি স্মার্টফোনে স্যামসাংয়ের বাজার শেয়ার মাত্র ৮ শতাংশ। গত বছর একই প্রান্তিকে অবশ্য তা ছিল ১ শতাংশ। এ৫২ ও এম৪২ মডেলের স্মার্টফোন উন্মোচনের মাধ্যমে এ সেগমেন্টটিতে তৃতীয় স্থান দক্ষিণ কোরিয়াভিত্তিক প্রযুক্তি জায়ান্টটির।