কী অবস্থা সবার? আশা করি সবাই বেশ ভালই আছেন। টেকজুম বরাবরের মতই আপনাদের বেশ ভাল ভাল প্রতিবেদন দিয়ে যাচ্ছে এবং দিয়ে যাবে। তবে আর কথা না বাড়াই, আজকের লেখার মূল অংশে ঝাপিয়ে পরি।
সবার আগেই মাথায় রাখতে হবে যে আপনি একটি ১০ হাজার টাকার স্মার্টফোন কিনছেন। তাই কোন প্রকার হেভি গেমিং বা হেভি ফটোগ্রাফির চিন্তা থাকলে তা মাথা থেকে আগেই ঝেরে ফেলেন। তবে হেভি কাজ না করা গেলেও আপনার দৈনিক ব্যবহারের জন্য এই ফোনগুলো যথেষ্ট হবে। আশা করছি আমাদের এই সেরা ফোনের তালিকা আপনাকে হতাশ করবে না। আর আমরা শিরোনামে ১০ হাজারের কথা বললেও মূল্য হয়ত কিছু পরিমাণ এদিক-সেদিক হতে পারে। তার জন্য আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখিত।
আমরা কিছু ক্রাইটেরিয়ার মাধ্যমে বেশ কিছু ডিভাইস সিলেক্ট করে তারপরে বিভিন্ন রিভিউ আর কাস্টমার ফিডব্যাক এর মাধ্যমে সেরা ফোনের তালিকা তৈরি করি। আমাদের এইবারের তালিকার মিনিমাম ক্রাইটেরিয়াগুলি হলো, ৬ ইঞ্চি HD+ ডিস্প্লে, ২ গিগাবাইট মেমরি এবং ৩২ গিগাবাইট স্টোরেজ, অক্টাকোর প্রোসেসর এবং 4000 mAh এর ব্যাটারি। এই ক্রাইটেরিয়াগুলো নিয়ে আমরা বেশ কিছু ফোনের তালিকা করি যা বেশ বড় হয়। তবে এর পরে আমরা কাস্টমার রিভিউ আর মার্কেট সিচুয়েশন অনুযায়ী বেশ কিছু ফোনকে বাদ দিয়েছি। তবে চলুন দেখে নেই ফোনগুলো কী কী।
Realme Narzo 50i
বাজাড় মূল্য প্রায় ১১ হাজার দেখালেও এই ফোন আপনি প্রায় ৯ হাজার টাকার আশেপাশেই পেতে পারেন লোকাল মার্কেটে। আর যদি এই ফোনের স্পেসিফিকেশন এর কথা বলি, তাহলে এতে আছে ৬.৫ ইঞ্চির আইপিএস এইচডি প্লাস এলসিডি ডিস্প্লে। ইউনিসক এর প্রোসেসর এর সাথে ৪ গিগাবাইট মেমরি আর ৬৪ গিগাবাইট স্টোরেজ পাচ্ছেন। সাথে থাকছে ৮ মেগাপিক্সেলের মাইন ও ৫ মেগাপিক্সেলের সেলফি ক্যামেরা। ৫০০০ mAh এর ব্যাটারি থাকায় চার্জ বেশ ভালই থাকবে। এখন আপনার মনে বেশ বড় এক প্রশ্ন আসতে পারে যে এই ফোন আসলে কার জন্য? এই ফোন আসলে তাদের জন্য যারা বয়ষ্ক বা ডেইলি ইউজ করাতেই সিমাবদ্ধ। হেভি গেমিং বা ফটোগ্রাফি এই ফোনের সাথে যায় না। আপনার যদি অনলাইন ক্লাস বা রাফ ইউজের জন্য ফোনের দরকার হয় তাহলে আপনি আর কিছু না ভেবেই এই ফোন নিতে পারেন।
Oppo A12
প্রায় ১০ হাজার টাকার এই ফোনে আপনি ৬.২২ ইঞ্চির আইপিএস এলসিডি এইচডি প্লাস ডিস্প্লে পাবেন। প্রোসেসর হিসেবে এতে দেওয়া আছে হেলিও পি৩৫। ক্যামেরার কথা বলতে গেলে বলতে হয়, এতে আছে ১৩ মেগাপিক্সেলের ডুয়াল ক্যামেরা এবং ৫ মেগাপিক্সেলের সেলফি ক্যামেরা। ৩, ৩২ মেমরি, স্টোরেজের এই ফোনে আছে ৪২৩০ mAh এর ব্যাটারি। এই ফোন এবং আমাদের এই লিস্টে আগের ফোনটার কথা একই। এইটা হেভি গেমিং বা ফটোগ্রাফির জন্য না। আপনি যদি মুভি দেখেন বা ফোনে কথা বেশি বলেন তাহলে আপনি রিয়ালমি বা অপো এই ২ এর যেকোন ফোন নিলেই নিতে পারেন। আশা করি হতাশ হবেন না।
Realme C20 A
এতে আছে ৬.৫ ইঞ্চির আইপিএস এইচডি প্লাস এলসিডি ডিস্প্লে। হেলিও জি৩৫ সাথে ২ গিগাবাইটের মেমরি ও ৩২ গিগবাইট স্টোরেজ। এতে আরও পাবেন ৮ মেগাপিক্সেলের মেইন শুটার আর ৫ মেগাপিক্সেলের সেলফি ক্যামেরা। সাথে ৫০০০ mAh এর ব্যাটারি সহ এই ফোন বাজাড়ে পাবেন প্রায় ৯ হাজার টাকায়। এই ফোনের স্পেসিফিকেশন দেখেও আপনি হয়ত বুঝে গেছেন এই ফোন টাও শুধু রাফ ইউজ এবং মিডিয়া ইউজের জন্য। যদিও এর স্টোরেজ একটা ল্যাকিং এই ক্ষেত্রে।
Symphony Z33
বাংলাদেশি কোম্পানির এই ফোনে আছে ৬.৫২ ইঞ্চির এইচডি প্লাস ডিস্প্লে সাথে ইউনিসক এর প্রোসেসর। ১৩ মেগাপিক্সেলের ডুয়াল ক্যামেরা এবং ৮ মেগাপিক্সেলের সেলফি ক্যামেরা। ৩, ৩২ এর মেমরি, স্টোরেজ এর এই ফোনে আছে ৫০০০ mAh এর ব্যাটারি যার মূল্য ৯ হাজার টাকা থেকে একটু কম। তবে ডিসকাউন্ট এর মাধ্যমে আপনি এই ফোন সাড়ে ৮ হাজার টাকাতেও পেতে পারেন।
Symphony Z35
এই ফোন আমি ব্যাক্তিগতভাবে ব্যবহার করেছি তাই আমি বেশ গ্যারান্টির সাথেই এই ফোনকে এই তালিকায় নিচ্ছি। এতে আছে ৬.৮২ ইঞ্চির আইপিএস এলসিডি এইচডি প্লাস ডিস্প্লে। হেলিও জি৩৫ প্রোসেসরের সাথে আছে ৪ জিবি মেমরি ও ৬৪ জিবি স্টোরেজ। ১৩ মেগাপিক্সেলের ট্রিপল ক্যামেরা সহ এতে আছে ৮ মেগাপিক্সেলের সেলফি ক্যামেরা। ৬০০০ mAh এর ব্যাটারি সহ এই ফোনের মূল্য প্রায় ১১ হাজার টাকা।
এই ফোনকে তালিকার শীর্ষে রাখার সবথেকে বড় কারণ হলো এর পারফর্মেন্স। আপনি যদি বাজেটের দিক দিয়ে বেশ দুর্বল থাকেন কিন্তু এই বাজেটেও যথাসম্ভব গেমিং বা ফটোগ্রাফি করতে চান, তাহলে এই ফোনের উপরে কোন ফোন নেই। আমি ব্যাক্তিগতভাবে ব্যবহার করেছি তাই বলছি। আপনার বাজেট যদি ১০ হাজার হয়ে থাকে তাহলে কষ্ট করে আরও ১ হাজারের মত টাকা বাড়িয়ে নিয়ে এই ফোন কিনতে পারেন। আর যাই হোক, এই ফোন আপনাকে হতাশ করবে না।
লেখাটি এতদূর পড়ার জন্য ধন্যবাদ। আশা করি আপনার লেখাটি ভাল লেগেছে, যদি তাই লেগে থাকে তাহলে শেয়ার বাটনে ক্লিক করুন এবং আমাদের সাথেই থাকুন। আমরা এমন আরও অনেক লেখা প্রকাশ করে থাকি যা আপনার উপকারে আসবে।