ক্যামেরা আবির্ভাবের পর থেকে আজ অবধি আলোকচিত্রীদের জন্য সবচেয়ে অস্বস্তিকর বিষয় হচ্ছে স্বল্প আলোয় ছবি তোলা। ‘এক্সটারনাল লাইট’ কিংবা ক্যামেরার নিজস্ব ফ্ল্যাশ ব্যবহার করে স্বল্প আলোয় ছবি তোলার দুর্বলতার দিকটি কমিয়ে আনবার চেষ্টা করে থাকেন আলোকচিত্রীরা। অবশ্য ফ্ল্যাশ ব্যবহারে ধারণ করা ছবিতে কৃত্রিম ভাব ফুটে উঠায় এই ছবিগুলো সাধারণ সৌন্দর্য হারায় আর ‘এক্সট্রা লাইট’ ব্যয়বহুল হওয়ায় তা থেকে যায় শখের আলোকচিত্রীদের নাগালের বাইরে।
পেশাদার আলোকচিত্রীরা সাধারণত ব্যয়বহুল এসএলআর ক্যামেরায় কম শাটার স্পিড, লো অ্যাপারচার লেন্স ও আইএসও লেভেল বাড়িয়ে দিয়ে লো লাইট ফটোগ্রাফি করে থাকেন যার কোনটিই শখের আলোকচিত্রীদের জন্য সহজবোধ্য নয়। শৌখিন আলোকচিত্রীদের জন্য মোবাইল ফটোগ্রাফিতে এই সঙ্কট আরো প্রকট হয়ে দেখা দেয়। ফ্ল্যাশ ব্যবহার করে ছবি তোলার সময় যদি এক্সপোজারের সঠিক সমন্বয় করা না যায় তবে ছবিগুলোতে হয় অতিরিক্ত এক্সপোজার হবে নয়তো এক্সপোজারের ভারসাম্যহীন অবস্থা তৈরি হয়ে মনমতো ছবি তোলা সম্ভব হবে না।
প্রযুক্তির অগ্রগতির সাথে সাথে এ সমস্যার সমাধানে মোবাইলফোন নির্মাতারা নিরলস চেষ্টা করে যাচ্ছেন। তবুও, এই সঙ্কট পুরোপুরি নিরসন করা সম্ভব হয় নি। কোনো না কোনো সমস্যা থেকেই যাচ্ছে লো লাইট মোবাইল ফটোগ্রাফি প্রযুক্তিতে। রঙ ঠিকমতো ফুটে উঠে না কিংবা ছবিতে ডিটেইলের ঘাটতি থেকে যাচ্ছে নয়তো জুম ইন করার সময়ে ছবির শার্পনেস ঠিক থাকছে না বা আলোর ভারসাম্যহীনতার সমস্যাটি থেকেই যাচ্ছে লো লাইট মোবাইল ফটোগ্রাফিতে।
সম্প্রতি বিশ্ববাজারে আসা নতুন একটি স্মার্টফোন এ সমস্যাগুলোর অনেকটাই নিরসন করতে সক্ষম বলে জানা গেছে। সদ্য বাজারে আসা অপো এফ১১ ও এর পৃথক একটি সংস্করণ এফ১১ প্রো এর ক্যামেরা বর্তমানে বাজারে থাকা স্মার্টফোনগুলোর মাঝে লো লাইট ফটোগ্রাফিতে চমকপ্রদ আউটপুট দিচ্ছে। এই মডেলগুলোর ক্যামেরার সবচেয়ে দারুণ দিক হচ্ছে স্বল্প আলোতেও ঝকঝকে পোর্ট্রেট ছবি তুলবার সক্ষমতা। এমনকি হিমালয় পর্বতমালায় বৈরী পরিবেশেও অপো এফ১১ প্রো এর সক্ষমতার দিকটি পরীক্ষিত।
এফ১১ ও এফ১১ প্রো দু’টি স্মার্টফোনেই রয়েছে অপো এফ সিরিজের সর্বাধুনিক শক্তিশালী ক্যামেরা সিস্টেম। এফ১১ এবং এফ১১ প্রো দু’টি ফোনেই রিয়ার ক্যামেরা দারুণভাবে আপগ্রেড করা হয়েছে। আল্ট্রা হাই স্ট্যান্ডার্ড ৪৮ মেগাপিক্সেল ও ৫ মেগাপিক্সেল ডুয়াল ক্যামেরা সিস্টেম, এফ১.৭৯ অ্যাপারচার, বল-বিয়ারিং ক্লোজড-লুপ ভিসিএম, ৬পি লেন্স ও ১/২.৩ ইঞ্চি ইমেজ সেন্সরের সমন্বয়ে এই ক্যামেরা অধিক আলো ধারণ করতে সক্ষম। ডে-লাইট থাকা অবস্থায় এই স্মার্টফোন দু’টি ৪৮ মেগাপিক্সেল আল্ট্রা এইচডি ছবি আউটপুট দিতে সক্ষম। স্বল্প আলোতে এফ১১- এর ‘টেট্রাসেল টেকনোলজি’ পাশাপাশি ফোনে থাকা প্রতি ৪টি পিক্সেলকে ১টি ১.৬ মাইক্রোমিটার পিক্সেলে পরিণত করে এর থেকে পাওয়া ডাটা বিশ্লেষণ করে ও সমন্বয় করে ফটোসেন্সিটিভ পিক্সেলের আকার দ্বিগুণ করে ফেলার মাধ্যমে উজ্জ্বল ও ‘লো-নয়েজ’ নাইট পোর্ট্রেট তুলতে সক্ষম।
এছাড়াও, এফ১১ ও এফ১১ প্রো- তে যুক্ত করা হয়েছে স্মার্টফোন ফটোগ্রাফির জন্যে স্মার্টফোন নির্মাতা অপো’র সিস্টেম লেভেল অপটিমাইজেশন সলুশ্যন ‘আল্ট্রা-ক্লিয়ার নাইট মোড’ ও ‘কালার ম্যাপিং’ প্রযুক্তি। এ সলুশ্যন স্বয়ংক্রিয়ভাবেই ক্যামেরায় ধরা পরা দৃশ্য বিশ্লেষণ করে সে অনুযায়ী ‘অপটিমাইজড সল্যুশন’ দিতে সক্ষম। এতে থাকা ‘আল্ট্রা-নাইট মোড’ পোর্ট্রেট ও পেছনে থাকা ব্যাকগ্রাউন্ড শনাক্ত করে কেবল মুখের উপর ফোকাস করে ‘স্কিন কালার’ সমন্বয় করে ছবিগুলোকে আরো প্রাণবন্ত করে তোলে। এছাড়াও, এই সিস্টেমে থাকা ‘আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স’ ছবিতে থাকা নয়েজ ও অতিরিক্ত আলো কমিয়ে দেয়, ডাইনামিক রেঞ্জ বাড়িয়ে তোলে ও লো লাইট এরিয়াগুলোতে উজ্জ্বলতা বাড়িয়ে ছবিকে করে পরিস্কার ও ঝকঝকে।
এই ক্যামেরার সক্ষমতা সম্পর্কে অপো বাংলাদেশর ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডামোন ইয়াং বলেন, ‘অপো’র উদ্ভাবনী সক্ষমতায় আমরা গর্বিত। আমরা ক্রমাগত আমাদের প্রযুক্তিগুলোকে উন্নতর করতে কাজ করে যাচ্ছি। যুগান্তকারী ক্যামেরা ফিচার উদ্ভাবনের বিষয়টি সবসময়ই আমরা অগ্রাধিকার দিয়ে থাকি এবং আমরা আশাবাদী যে, আমাদের এই প্রচেষ্টাগুলো ব্যবহারকারীদের সন্তুষ্টির থেকেও বেশি কিছু দিতে সক্ষম হবে।’